ধর্ম ব্যবসায়ী মামুনুল হক তার অল্প বয়সী যৌনসঙ্গী নিয়ে শহরের বাইরে এক হোটেলে উঠেছে রাত কাটাতে, বা দিন কাটাতে। সহজে অনুমান করা যায়, উদ্দেশ্য যৌন সঙ্গম। ধরা পড়ার পর ব্যবসায়ী বলছে মেয়েটি নাকি তার দ্বিতীয় স্ত্রী। মুসলমানদের মধ্যে তো আবার যৌনসঙ্গীকে বিয়ে করার চল আছে, এই বিয়েকে বলা হয় মু’তা বিয়ে। যতক্ষণ সঙ্গম চলবে, ততক্ষণ বিয়ে টিকে থাকবে। সঙ্গম শেষ, টাকা ফেলো, তিন তালাক বলো।
এই মু’তা বিয়ে শিয়া মুসলিমদের মধ্যে বৈধ, সুন্নিদের মধ্যে নয়। মামুনুল হক সুন্নি হলেও বিপদে পড়লে শিয়া হয়ে যেতে পারে, বলা যায় না। কিন্তু বিয়ে নাকি দু’ঘণ্টা আগে নয়, করেছে দু’বছর আগে। যদি প্রমাণ না পাওয়া যায় বিয়ের, তাহলেই বা কী হবে। এদের মতো প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের কেউ কোনও অসুবিধে করতে পারবে না। দেলওয়ার হোসেন সাঈদীর কুকীর্তিও তো ফাঁস হয়েছিল। তাতে তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছিল? মোটেও না। এরা যেহেতু সুর করে কোরানের আয়াত মুখস্ত বলতে পারে, তাই এদের সাত খুন মাফ করে দেয় মূর্খ ভক্তকূল। এদের কোনও কুকীর্তি, সন্ত্রাস, তাণ্ডব, দেশদ্রোহিতা ভক্ত সংখ্যা কমায় না।
মামুনুল হক তার প্রেমিকা বা হোয়াটেভারকে নিয়ে হোটেলে সময় কাটাতে গেছে , এ তার দোষ নয়, এ কোনও ক্রাইম নয়। তার ক্রাইম তার ওয়াজ, তার ভাষণ। সে সমাজের প্রগতির বিরুদ্ধে, নারীর অধিকারের বিরুদ্ধে, মানবাধিকারের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্র এবং বাক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ভয়াবহ বিষ উগরে দিচ্ছে প্রতিদিন, সেই বিষের ক্রিয়ায় এক এক জন তরুণ ভায়োলেন্সে নামছে, খুনী হয়ে উঠছে। যুবসমাজকে সে সন্ত্রাসবাদে আর জঙ্গিবাদে দীক্ষিত করছে — এটি তার ক্রাইম। দেশের সর্বনাশ করা খুব বড় ক্রাইম। এই ক্রাইমের কারণে তার শাস্তি হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
তসলিমা নাসরিনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে
এই লেখার সমস্ত দায়ভার একমাত্র লেখকের।