বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী তার প্রতিদ্বন্দ্বী মনোনয়নপ্রত্যাশী আবদুল্লাহ কবির লিটনের উপর হামলায় মদদ দিয়েছেন বলে অভিযোগ এনে এক সংবাদ সম্মেলনে। সংসদ সদস্যের চাচা রশিদ আহমেদ ও পিএস তাজুল ইসলাম তাকে হত্যাচেষ্টায় নেতৃত্ব দিয়েছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন লিটন।
রোববার (১২ নভেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিটন এই অভিযোগ করে সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। ঘটনার চারদিন পর হামলায় আহতদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন লিটন।
প্রয়াত নেতা আক্তারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর স্মরণসভাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার (০৯ নভেম্বর) বিকেলে বাঁশখালী পৌর সদরের অদূরে সরল ইউনিয়নের পাইরাং এলাকায় আওয়ামী লীগের দুপক্ষে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে ২৩ জন আহত হয়। সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান এবং মনোনয়ন প্রত্যাশী আবদুল্লাহ কবির লিটনের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘাতের ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনায় লিটনের অনুসারী আনিসুল হক বাদি হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে বাঁশখালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।মামলার সংসদ সদস্যের চাচা ও ইউপি চেয়ারম্যান রশিদ আহমদ চৌধুরীকে প্রধান আসামি করা হয়। দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে সংসদ সদস্যের পিএস ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তাজুল ইসলামকে।
সংবাদ সম্মেলনে লিটন জানান, সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর বাড়ির কাছেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় তার অনুসারী নেতাকর্মীরা মানবঢাল তৈরি করে তাকে রক্ষা করেন।
হামলার পর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়ির দিকে চলে গেছেন বলে জানান লিটন।
সংবাদ সম্মেলনে মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তোলেন মনোনয়নপ্রত্যাশী লিটন।
অভিযোগের মধ্যে আছে, এমপির অবৈধ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তিনি নির্বাচন কর্মকর্তাকে মারধর, টিআর ও সরকারি প্রকল্প থেকে তিনি পিএস তাজুলের মাধ্যমে লাগামহীন অর্থলুট করছেন। ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করছেন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলের ত্যাগীদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন দেওয়া, জামায়াতের উপজেলা আমিরকে নিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জামায়াত কর্মীকে কাজী নিয়োগ এবং টাকার বিনিময়ে স্কুলের দপ্তরী নিয়োগ।
এছাড়া গত বছরের ২২ অক্টোবর দৈনিক পূর্বদেশের সাংবাদিক রাহুল দাশকে হত্যার হুমকি দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেছেন লিটন।
লিটন আরো অভিযোগ করেছেন, এমপির জামায়াত তোষণ নীতির কারণে যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়ের পর তাণ্ডবে দয়াল হরি হত্যা এবং নাশকতা মামলার আসামিদের মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে যাতে লাখ লাখ টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ আছে।
বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগকে ধ্বংসের মিশনে কমিটির সভাপতি ও সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ব্যস্ত বলেও অভিযোগ করেছেন আবদুল্লাহ কবির লিটন।
সংবাদ সম্মেলনে লিটন হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার এবং বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিও বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।