ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ: লেবানন সংকট নিয়ে আলাপ
সৌদি আরব এবং লেবাননের মধ্যে সংকট ঘনীভূত হবার প্রেক্ষাপটে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ কোন আগাম ঘোষণা ছাড়াই রিয়াদ সফরে গিয়েছেন।
মিঃ ম্যাক্রোঁর সফর এসেছে রিয়াদে অবস্থানকালে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সা’দ হারিরির পদত্যাগের কয়েক দিন পরেই। পদত্যাগের কারণ হিসেবে মিঃ হারিরি বলেন যে তাঁর জীবনের ওপর হুমকি রয়েছে।
লেবাননের ইরানপন্থী গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ বলেছে, সৌদি আরবের চাপের মুখেই মিঃ হারিরি পদত্যাগ করেছেন।
লেবাননের সাথে ফ্রান্সের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত লেবানন ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল।
রিয়াদ যাবার আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন যে সকল লেবানিস নেতার স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার আছে।
”যারা কোন নেতার জীবনের প্রতি হুমকি হতে পারে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে,” তিনি বলেন।
সা’দ হারিরির কথিত ‘জীবননাশের ষড়যন্ত্র’ নিয়ে কোন বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
মিঃ হারিরির বর্তমান অবস্থা নিয়ে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। তাঁকে রিয়াদে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে বলেও গুজব রয়েছে।হারিরির পদত্যাগ: নভেম্বর মাসের ৬ তারিখে বৈরুতের পত্র-পত্রিকায় প্রধানমন্ত্রী সা’দ হারিরির পদত্যাগের খবর।
মিঃ ম্যাক্রোঁ বলেন তাঁর সাথে মিঃ হারিরির অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ হয়েছে, তবে কোন বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়নি। অন্যদিকে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, মিঃ হারিরি স্বাধীনভাবে ঘোরা-ফেরা করতে পারছেন।
এরই মধ্যে লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন সা’দ হারিরিকে দেশে ফেরত দেবার দাবী জানিয়েছেন বলে জানা গেছে। লেবাননের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে প্রেসিডেন্ট আউন লেবাননে সৌদি রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে মিঃ হারিরির পদত্যাগের প্রেক্ষাপট গ্রহণযোগ্য নয়।
শনিবার একটি ভিডিও বার্তায় মিঃ হারিরি হিজবুল্লাহ এবং ইরানকে সমালোচনা করেন।
অনেকে আশংকা করছেন, সুন্নি-প্রধান সৌদি আরব এবং শিয়া-প্রধান ইরানের মধ্যে চলমান বিবাদে লেবাননও জড়িয়ে যেতে পারে। সৌদি আরব ইতোমধ্যেই লেবানন থেকে তার সকল নাগরিককে চলে যাবার নির্দেশ দিয়েছে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, সৌদি আরবের কাছ থেকে ইরান সম্পর্কে বেশ ‘কঠোর মতামত’ তিনি শুনেছেন, যার সাথে তাঁর নিজস্ব মতামত মেলে না।
মিঃ ম্যাক্রোঁ ইরানের সাথে ২০১৫ সালে সম্পাদিত পারমাণবিক চুক্তির বড় সমর্থক, যেটা সৌদি আরব এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কঠোরভাবে সমালোচনা করেছে।
মিঃ হারিরির পদত্যাগের পর থেকে ইরান, সৌদি আরব এবং লেবাননের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত শনিবার ইয়েমেন থেকে রিয়াদের বিমান বন্দর লক্ষ্য করে দূর-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হলে সৌদি আরব ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক আগ্রাসনের অভিযোগ তোলে।
সৌদি আরব বলছে, লেবাননের হিজবুল্লাহ বাহিনী ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করে, যেটা ইরান সরবরাহ করেছিল।
ইরান সৌদিদের এই অভিযোগ ‘বানোয়াট এবং বিপজ্জনক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।