
২০০২ সালে কোরিয়া-জাপান বিশ্বকাপে প্রথম বারের মতো এসেই তাক লাগিয়ে দিয়েছিলো পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সেনেগাল।
সেবার কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত চলে গিয়েছিলো তারা। আর সে কারণেই সেই দলটির সব খেলোয়াড়ই দেশটির মানুষের কাছে জাতীয় বীরের মতো।
এই দলটিরই অপরিহার্য একজন খেলোয়াড় এখন পুরাদস্তুর একজন কৃষক। ফুটবল মাঠ ছাড়ার পর এখন কেমন চলছে তার কৃষক জীবন?
জাতীয় দলের ডিফেন্ডার থেকে মাঠের কৃষক হওয়ার বিষয়ে বিবিসি সংবাদদাতা জানতে চেয়েছিলেন ফার্দিনান্দ কলির কাছে।
তিনি বলেন, “আমার দাদা প্রায়ই বলতেন যে তুমি মাটির কাছেই ফিরে যাবে। অবশ্যই এটি আমার কাছে সঠিক জায়গা মনে হয়। কিন্তু আমি একজন সার্বক্ষণিক কৃষক হয়ে উঠিনি।আমি এখানে সময় কাটাতে ভালোবাসি”।
সাবেক এই তারকা খেলোয়াড় আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলেছেন অনেক। দেশের হয়ে যেমন বিশ্বকাপ খেলেছেন, তেমনি ইটালিতে সিরি আ’তেও কয়েকটি ক্লাবের হয়ে দীর্ঘকাল খেলেছেন তিনি। বিভিন্ন সময়ের জার্সিগুলো বাধাই করে রেখে দিয়েছেন।
ডিফেন্ডার হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খেলা শুরু করছিলেন ১৯৯৯ সালে টপ ফরাসী ক্লাব আরসি লেন্সে খেলার মাধ্যমে।
আর ২০০২ সালে কোরিয়া জাপান বিশ্বকাপে সেনেগালের হয়ে প্রতিটি ম্যাচই খেলেছেন।
গৌরবময় সে অভিজ্ঞতার কথা এভাবেই বলছেন তিনি: “তুরস্ক আমাদের হারিয়ে দিলো। ফ্রান্সের কারও সাথে আমি আমার জার্সি বদল করিনি। সেটা ছিলো আমার জন্য ব্যতিক্রমী একটি ম্যাচ”।
সেবার প্রথম ম্যাচেই তখনকার চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে ১-০ গোলে হারিয়ে ইতিহাস তৈরি করেছিলো সেনেগাল। আবার সেটাই ছিলো সেনেগালের প্রথম বিশ্বকাপ খেলা।
“বিশ্বকাপকে ঘিরে দেশের সবাইকে এক হয়ে যাওয়া দেখাটা ছিলো দারুণ কিছু। জাতীয় পতাকাকে ঘিরে অসাধারণ এক জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়ে গিয়েছিলো। ওই সময়ে সেনেগালের মুড টাই ছিলো এককথায় অসাধারণ।”
আরো পড়তে পারেন:
সৌদি নারীদের ড্রাইভিং: দৃষ্টিভঙ্গি কতটা বদলেছে?
যে কারণে চট্টগ্রামে হেপাটাইটিস ‘ই’ প্রকোপ
বিদেশিদের জন্য ঢাকা নগরী কেন এত ব্যয়বহুল?
গাজীপুর সিটি নির্বাচন: অনিয়মের নানা অভিযোগ
সেই বিশ্বকাপের তারকা ফার্দিনান্দ কলি এখন পুরাদস্তুর কৃষক। রাজধানী ডাকার থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দুরের একটি এলাকায় তার খামার।
” এটা প্রায় আট একরের একটি জমি। যখন আমরা কাজ শুরু করলাম এটা তখন অনেক মরুভূমির মতো। তাই শুরুতেই আমরা ফল গাছ রোপণ করতে শুরু করি। কমলা, আঙ্গুর, লেবু গাছ ছিলো আমাদের। একটা আম গাছ আছে যেটা আমার কাছ খুবই স্পেশাল। খুব দ্রুত বড় হয় এটি”।
গাছে পানি দেয়া, পরিচর্যা করা এবং গাছে ফল আসলে সেটিকেও ঠিকঠাক বানরের হাত থেকে সামলে রাখার মতো কাজগুলো করে দারুণ আনন্দ পান ফার্দিনান্দ কলি। কিন্তু তারকা ফুটবলার থেকে কৃষি জমিতে ফিরে আসা। মানুষ কিভাবে দেখে।
“যারা এভাবে জমিতেই ফিরে যায় তাদের দেখে মানুষ হাসে কিন্তু আমার কাছে এটিই মৌলিক বিষয়। স্থানীয়ভাবে আমরা এখানে যা উৎপাদন করি সেগুলোই আমাদের খাওয়া উচিত। আমদানি করা উচিত না”।
আর এভাবেই কৃষিকাজে অন্যদেরও উদ্বুদ্ধ করতে চান এক সময়ের এই তারকা ফুটবলার।
Source from: http://www.bbc.com/bengali/news-44619826