
বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিবিসিকে বলেছেন, সম্প্রতি ঢাকার দুটি সংবাদ মাধ্যমের ওয়েবসাইট ব্লক করার সরকারি নির্দেশনা কেন দেওয়া হয়েছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এই নির্দেশনা গিয়েছিল টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বিটিআরসি থেকে।
কিন্তু মি. ইনু বলেন, তার মন্ত্রণালয় থেকে এরকম কোনো পরামর্শ বা নির্দেশনা বিটিআরসিকে দেওয়া হয়নি।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ২৪ডটকম এবং ইংরেজি দৈনিক দ্যা ডেইলি স্টারের ওয়েবসাইট ব্লকের নির্দেশনা নিয়ে ঢাকার মিডিয়া জগতে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
কেন এ ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল – বিবিসি প্রবাহ টিভির পক্ষ থেকে শারমিন রমার এই প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন সেটা তিনি খুঁজে দেখছেন।
তিনি বলেন, “অনলাইনে এবং সংবাদপত্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে আমরা সম্মান করছি। আইনত এদের আমি প্রচার করার অধিকারও দিয়েছি। সেজন্যে আমার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে সকল অনলাইন পত্রিকাকে নিবন্ধন করার জন্যে আমি ইতোমধ্যে বিজ্ঞাপন দিয়েছি।”
গত ১৮ই জুন বিডিনিউজে একটি খবর প্রকাশিত হয় যে বিটিআরসি আকস্মিকভাবে তাদের লিংক বন্ধ করতে মোবাইল ফোন ও আইআইজি অপারেটরগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে। তবে এই নির্দেশ কেন দেওয়া হয়েছিল তার কোন কারণ উল্লেখ করা হয়নি।
এরপর সোশাল মিডিয়াতে অনেকেই অভিযোগ করেন যে তারা বিডিনিউজের ওয়েবসাইটে ঢুকতে পারছেন না। তবে সেদিন রাত থেকে ওয়েবসাইটে ঢুকতে আর কোন অসুবিধা হয়নি।
তথ্যমন্ত্রী জানান, প্রায় ২২০০ অনলাইন পত্রিকা ইতোমধ্যে সরকারের তালিকাভুক্ত হয়েছে। সেগুলো এখন যাচাই বাছাই করে দেখা হচ্ছে। আইনত কোন কিছুই বন্ধ করা হচ্ছে না। এবং সেরকম কিছু করাও হয়নি।
“অনেক সময় ছোট খাটো দুর্ঘটনা বা চলার পথে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেগুলো আমাদের সরকারের কোন নীতির কারণে হয়নি। এই ব্যাপারটা আমরা শুনেছি,” বলেন হাসানুল হক ইনু।
এর আগে এই নির্দেশনার ব্যাপারে বিটিআরসির সাথে যোগাযোগ করা হলে কর্মকর্তারা বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছিলেন যে সরকারেরই নির্দেশেই বিডিনিউজের ওয়েবসাইট ব্লক করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
আরো পড়তে পারেন:
বিদেশিদের জন্য ঢাকা নগরী কেন এত ব্যয়বহুল?
‘তারা পাপ করেছে, আমি তো কোন ভুল করিনি’
গাজীপুর সিটি নির্বাচন: অনিয়মের নানা অভিযোগ
তথ্যমন্ত্রণালয় থেকে এধরনের কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল কিনা এই প্রশ্নের জবাবে হাসানুল হক ইনু বলেন, তার মন্ত্রণালয় থেকে এরকম কোন নির্দেশনা যায় নি। “বিটিআরসি কেন সেটা করেছে সে ব্যাপারে আমরা তাদের কাছে কৈফিয়ত চাচ্ছি,” বলেন তিনি।
বিবিসি বাংলা: এবিষয়ে আপনার সাথে কি কোন পরামর্শ করা হয়েছিল যে এগুলো বন্ধ করার জন্যে একটা চিন্তাভাবনা হচ্ছে?
হাসানুল হক ইনু: “না, পরামর্শ করা হলে তো আমরা পরামর্শ দিতাম। কথাটা হচ্ছে যে তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এরকম কোন নির্দেশনা আজ পর্যন্ত জারি করা হয়নি। এর পরে আমার দায়িত্ব হচ্ছে এটার খোঁজ খবর নেওয়া। আমি ইতোমধ্যে খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করেছি। কেন এরকম একটা সমস্যা তৈরি হলো সেটা আমি তদন্ত করে দেখছি।”
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এরকম সমস্যা যাতে তৈরি না হয় সেজন্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পাশাপাশি সরকার একটি সম্প্রচার আইন তৈরি করতে যাচ্ছে। পাশাপাশি গঠন করা হবে সম্প্রচার কমিশনও।
“সম্প্রচার আইন এবং সম্প্রচার কমিশন এসে গেলে রেডিও, টিভি এবং অনলাইনের মতো ইলেকট্রনিক মাধ্যমের আর কোন সমস্যা হবে না। তারা সব সম্প্রচার আইন ও কমিশনের আওতায় চলে যাবে,” বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে সরকার এখন পর্যন্ত কোন গণমাধ্যম বন্ধ করেনি। “প্রত্যেককে আমি আশ্বস্ত করছি আপনারা স্বাধীনভাবে কাজ করেন। কোন অসুবিধা নাই। সরকার সংবিধানের প্রতি সম্মান রেখে আপনার স্বাধীনতাকে রক্ষা করবে,” বলেন তিনি।
আরো পড়তে পারেন:
উত্তর কোরিয়ার রহস্যময় এক হোটেলের কাহিনী
মিয়ানমারের অন্যতম শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা বরখাস্ত
সুস্বাস্থ্যের জন্য দিনে কতটা ঘুম দরকার
ভারতে সরকার কেন এসি-র তাপমাত্রাও বেঁধে দিচ্ছে
Source from: http://www.bbc.com/bengali/news-44619937