উত্তর কোরিয়ার সৈন্যের অন্ত্রে ‘বিশালাকৃতি কৃমি’

Date:

Share post:

্তর কোরিয়ার যে সৈন্যকে দক্ষিণ কোরিয়ায় পালিয়ে আসার সময় করা হয়েছিল ডাক্তাররা বলছেন তার অন্ত্রে প্রচুর পরিমাণে কৃমি বাস করছে।

দেশত্যাগী ঐ সৈনিক সেনামুক্ত এলাকা দিয়ে সীমান্ত পার হবার সময় উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত রক্ষীরা তার ওপর বেশ কয়েকবার গুলি ায়।

চিকিৎসকরা বলছেন ঐ সৈনিক গুলির আঘাত থেকে এখন আশঙ্কা মুক্ত, তবে তার শরীরে ”প্রচুর সংখ্যায়” কৃমি পাওয়া গেছে। কৃমিগুলো তার ক্ষতে সংক্রমণ তৈরি করছে এবং যার থেকে তার অবস্থা খারাপ হচ্ছে।

তার চিকিৎসক বলেছেন ”আমার বিশ বছরের ডাক্তারি জীবনে এরনের কৃমির সংক্রমণ আমি কখনও দেখিনি।”

দক্ষিণ কোরিয় চিকিৎসক লী কুক-জং বাদিকদের বলেছেন রোগীর অন্ত্র থেকে সবচেয়ে বড় যে কৃমিটি বার করা হয়েছে তার দৈর্ঘ্য ১১ ইঞ্চি বা ২৭ সেন্টিমিটার।

কৃমি জাতীয় পরজীবী মানুষের শরীরে ঢোকে কিভাবে?

মানুষের শরীরে পরজীবী ঢোকে সংক্রমিত খাবার থেকে, অথবা পোকামাকড়ের কামড়ে বা চামড়ার মধ্যে দিয়ে পরজীবী শরীরে ঢুকলে।

উত্তর কোরিয় এই সৈন্য খাবার থেকেই সংক্রমণের শিকার হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। সংক্রমিত খাবারের মাধ্যমে যেসব পরজীবী মানুষের শরীরের ঢোকে সেগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হয় কৃমি।

উত্তর কোরিয়ায় ক্ষেতে এখনও সার হিসাবে বহার করা হয় মানুষের মল। মল যদি অপরিশোধিত হয়, এবং মলের সার দিয়ে উৎপাদিত শাকসব্জি যদি না রান্না করে খাওয়া হয়, তাহলে কৃমি ওই ব্যক্তির মুখ ও অন্ত্রে ঢুকে সেখানে বাসা বাধে।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে কৃমি শরীরে থাকলেও কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। তবে কখনও কখনও এগুলো জীবনের ঝুঁকিও তৈরি করে বলে বলছেন সিঙ্গাপুরের নানিয়াং টেকোলজিকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োলজিক্যাল সায়েন্স স্কুলের অধ্যাপক পিটার প্রেজার।

”কৃমিগুলো মানুষের শরীর থেকে সবরকম টেনে নিয়ে বাঁচে,” তিনি বিবিসিকে বলেন। ”কাজেই কৃমির উপস্থিতি বুঝতে না পারলেও কৃমি মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এককথায় দেহে পরজীবী থাকা খারাপ স্বাস্থ্যের লক্ষ্মণ।”গুলিতে আহত হবার পর ওই সৈনিককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে

এটা কি উত্তর কোরিয়ার স্বাস্থ্যগত মান সম্পর্কে কোন ইঙ্গিত?

”উত্তর কোরিয়া দরিদ্র দেশ এবং যে কোন দরিদ্র দেশের মত সেখানেও স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে,” বলছেন সোওলের কুকমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আন্ড্রেই লানকফ।

২০০৬ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ার হাসপাতালে নেওয়া উত্তর কোরিয় রোগীদের ওপর চালানো গবেষণায় দেখা গেছে উত্তর কোরিয়ার মানুষের মধ্যে ক্রনিক হেপাটাইটিস বি, ক্রনিক হেপাটাইটিস সি, যক্ষ্মা এবং বিভিন্ন ধরনের কৃমির সংক্রমণ দক্ষিণ কোরিয়দের থেকে অনেক বেশি।

তিনি বলছেন দরিদ্র দেশ হলেও উত্তর কোরিয়ার মানুষ বিশ্বের অনেক দরিদ্র দেশের তুলনায় ভাল স্বাস্থ্যের অধিকারী এবং অর্থনৈতিক সঙ্কট স্বত্ত্বেও সেখানে গড় আয়ু অনেক দেশের থেকে বেশি। চিকিৎসক লী কুক জং বলেছেন জীবনে এত কৃমি কারও শরীরে তিনি দেখেন নি

”উত্তর কোরিয়ায় আধুনিক চিকিৎসা র অভাব রয়েছে,” বলছেন ডা: লানকফ। ”ডাক্তারদের প্রশিক্ষণও উঁচু মানের নয় এবং পুরনো যন্ত্রপাতি দিয়ে তাদের চিকিৎসার কাজ চালাতে হয়।”

পরজীবী থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি উত্তর কোরিয়ায় অনেক বেশি বলে ধারণা করা হয়। অধ্যাপক লানকফ বলছেন সেখানে স্বাস্থ্য ও পুষ্টির সমস্যা রয়েছে যদিও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবার আশংকায় উত্তর কোরিয়া তা স্বীকার করে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

গাজায় একদিনে ৭০ জন নিহত, সকাল থেকে ৪৭ জনকে হত্যা

গত ২৪ ঘণ্টায় উপত্যকাজুড়ে বিভিন্ন হাসপাতালে কমপক্ষে ৭০ জনের লাশ আনা হয়েছে। একই সময়ে ৩৩২ জন আহত ব্যক্তি...

পাঁচটি সামরিক স্থাপনায় ইরানের সফল হামলার বিষয়ে ইসরায়েল নীরব: টেলিগ্রাফ

মার্কিন ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকদের পরিচালিত স্যাটেলাইট তথ্য বিশ্লেষণের বরাত দিয়ে দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, একটি বৃহৎ বিমানঘাঁটিসহ...

সন্তান ইস্যুতে তিশাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন জাওয়াদ নির্ঝর

অভিনেত্রী তানজিন তিশাকে ঘিরে ফের উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিনোদনপাড়া। এবার তাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন সাংবাদিক জাওয়াদ...

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আগামী সপ্তাহে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করবে ইইউ: রিপোর্ট

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি প্রধান কাজা কালাস আগামী সপ্তাহে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে 'গাজা উপত্যকায় আগ্রাসনের সঙ্গে সম্পর্কিত' কিছু নিষেধাজ্ঞা...