রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনকে কি পাশে পাবে বাংলাদেশ

Date:

Share post:

চীন ও রাশিয়ার সমর্থন না পেলে দের ফেরত পাঠানো অসম্ভব বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোনার জন্য , এবং রোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র মন্ত্রীরা আগামীকাল শনিবার বাংলাদেশ সফরে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, রোহিঙ্গা সংকটের কারণে বাংলাদেশ কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং এর সমাধান কীভাবে হতে পারে সে বিষয়টি তাদের কাছে তুলে ধরা হবে।

বিশেষ করে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ সফরকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বাংলাদেশ। চীনের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থােও রোহিঙ্গা সংকটে চীন প্রকাশ্যে আন্তর্জাতিক ফোরামে মিয়ানমারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

চীনের সর্বশেষ অবস্থান দেখেও মনে হচ্ছে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাদের মনোভাবে দৃশ্যত কোন পরিবর্তন হয়নি। রোহিঙ্গাদের উপর সহিংসতায় উদ্বেগ জানিয়ে সাধারণ পরিষদের মানবাধিকার যে প্রস্তাব পাশ করেছে সেটির পক্ষে ১৩৫ টি দেশ ভোট দিলেও চীন ও রাশিয়া তার বিরোধীতা করেছে।

বিষয়টি নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক কোন মন্তব্য করছে না। তবে কেউ-কেউ মনে করেন, এটি চীনের একটি কৌশলগত পদক্ষেপ।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে গবেষণা করে সরকার প্রতিষ্ঠিত সংস্থা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ।

সংস্থাটির চেয়ারম্যান এবং চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমদ বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকটের গভীরতা চীন যে অনুভব করছে না তা নয়। কিন্তু তাদের চিন্তাধারা হয়তো অন্যদের চেয়ে আলাদা।

মি: আহমেদ বলেন, “জাতিসংঘ নিরপত্তা পরিষদের যে দুটো বিবৃতি গৃহীত হয়েছে সেগুলো সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। সুতরাং সেখান থেকে প্রকাশ পায় যে চীনও এ বিষয়ে চিন্তিত। কীভাবে এটা বন্ধ করতে হবে সেটার ব্যাপারে হয়তো আমাদের অনেকের সাথে তাদের মতপার্থক্য আছে।”বাংলাদেশে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিক উদ্যোগে অগ্রগতি দাবি করছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

প্রকাশ্যে কোন অবস্থান না নিয়েও সংকট নিরসনের জন্য চীন যদি ভেতর থেকে চাপ প্রয়োগ করে বা প্রভাব খাটিয়ে কোন ভূমিকা রাখে তাতে বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক ফল দিতে পারে।

বাংলাদেশের সাথে দীর্ঘদিন ধরেই চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। বাংলাদেশের বহু বড় ধরনের অবকাঠামো র্নিমানের সাথে চীন জড়িত।

ালয়ের আন্তর্জতিক সম্পর্কের অধ্যাপক এম শাহিদুজ্জামান মনে করেন, চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের চেয়ে ব্যবসায়িক সম্পর্কেই বেশি প্রাধান্য দেয়।

সেক্ষেত্রে মিয়ানমারের সরাসরি প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের তুলনায় মিয়ানমারের সাথেই চীনের সম্পর্ক জোরালো। ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণ করে চীনের কাছ থেকে আশাবাদী হবার মতো আপাতত কিছু দেখছেন না অধ্যাপক শাহিদুজ্জামান।

রোহিঙ্গা সংকটে চীনের ভূমিকা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে মি: শাহিদুজ্জামান বলেন,”সম্পর্কে গভীর কোন উষ্ণতা আছে বলে আমার মনে হয় না।”

কয়েকদিন আগেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে বলেছেন, রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে নজিরবিহীন সংকটে রয়েছে বাংলাদেশ।রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিচার করুন: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বাবরবারই দাবী করছে, এ সংকট নিরসনের জন্য বিশ্বের বড় দেশগুলোকে বাংলাদেশ পাশে পেয়েছে বা পাবে। চীনের মনোভাবও ইতিবাচক বলে মনে করেন কর্মকর্তারা। তাদের কেউ-কেউ মনে করেন আন্তর্জাতিক ফোরামে মিয়ানমানমারকে প্রকাশ্যে নিন্দা করতে চায় না চীন।

পররাষ্ট্র সচিব এম শহিদুল হক বলছেন, কূটনৈতিক তৎপরতায় অগ্রগতি হচ্ছে বলেই রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে আসছেন।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, বর্তমান অবস্থায় চীন এবং রাশিয়ার জোরালো সমর্থন না থাকলে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো রীতিমতো অসম্ভব বিষয়। তাদের সমর্থন না থাকলে শুধু বিবৃতি, এাণ তৎপরতা এবং সহানুভূতির মধ্যেই বিষয়টি সীমাবদ্ধ থাকবে বলে বিশ্লেষকদের ধারনা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

ইসরায়েলকে স্বীকৃতিতে প্রস্তুত সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশ, তবে…

বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইন্দোনেশিয়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত, তবে তার শর্ত একটাই—ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে...

চাঁদ দেখা গেছে, ৭ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা

বাংলাদেশের আকাশে আজ বুধবার পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ১৪৪৬ হিজরি সনের জিলহজ মাস গণনা...

আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন : প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘দেশের জাতীয় নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের...

ঈদের তারিখ ঘোষণা করল যেসব দেশ

মুসলিম বিশ্বের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। এই উৎসবকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন বিশ্বব্যাপী...