মুসলিম বিশ্বের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। এই উৎসবকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহর সদস্যরা। আরবি ক্যালেন্ডারের শেষ মাস জিলহজের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদুল আজহার তারিখ নির্ধারিত হয়। বেশকিছু দেশে মঙ্গলবার (২৭ মে) চাঁদ দেখা যাওয়ায় ঈদের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।
সবার আগে ঈদের তারিখ ঘোষণা করেছে ইন্দোনেশিয়া। মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ায় জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে আগামী ৬ জুন (জিলহজ মাসের ১০ তারিখ) ঈদুল আজহা পালনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। দেশটির জাতীয় জ্যোতির্বিদ্যা সংস্থা জানিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইন্দোনেশিয়ার আকাশে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে।
চাঁদ দেখা গেছে সৌদি আরবেও। ফলে আগামী ৬ জুন পবিত্র হজের পরদিন ঈদুল আজহা পালনের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। দেশটির সুপ্রিম কাউন্সিল জানিয়েছে, মঙ্গলবার (২৭ মে) সন্ধ্যায় সৌদি আরবের আকাশে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। এর ফলে ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ২৮ মে থেকেই জিলহজ মাস শুরু হতে যাচ্ছে।
৬ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা পালনের ঘোষণা দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত ও ওমান। এসব দেশে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে বুধবার থেকেই জিলহজ মাস শুরু হচ্ছে। ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ ও আঞ্চলিক চাঁদ দেখার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশগুলো।
ঈদের তারিখ ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়াও। দেশটিতে মঙ্গলবার পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে একই দিনে ঈদ পালিত হতে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার গ্র্যান্ড মুফতি ৬ জুন সে দেশে ঈদ উদযাপনের ঘোষণা দিয়েছেন।
৭ জুন ঈদ উদযাপন করবে যেসব দেশ :
মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ব্রুনেই, ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশকিছু দেশে মঙ্গলবার চাঁদ দেখা না যাওয়ায় ২৯ মে জিলহজ মাস শুরু হবে। ফলে এসব দেশে আগামী ৭ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা পালিত হবে।
বাংলাদেশের জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি ২৮ মে বুধবার সন্ধ্যায় চাঁদ দেখার ঘোষণা দেবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে বাংলাদেশে ঈদ হতে পারে ৭ অথবা ৮ জুন। তবে ৭ জুন তারিখই ঈদের সম্ভাব্য দিন হিসেবে ভাবা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ঈদ উপলক্ষে ৫ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ১০ দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
ঈদের তারিখে পার্থক্যের কারণ :
ইসলামিক ক্যালেন্ডার চাঁদনির্ভর হওয়ায় অঞ্চলভেদে চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ঈদের তারিখে পার্থক্য হয়ে থাকে। তবে তারিখ যাই হোক না কেন, ঈদুল আজহা বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর জন্য এক মহাসম্মেলনের দিন, যা নবী ইব্রাহিমের (আ.) ত্যাগ ও আনুগত্য স্মরণে পালিত হয়।
এই দিনে মুসলমানরা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি দিয়ে স্মরণ করে হজরত ইব্রাহিমের (আ.) মহান ত্যাগকে, যিনি আল্লাহর নির্দেশে তার পুত্র হজরত ইসমাইলকে (আ.) কোরবানি দিতে প্রস্তুত হয়েছিলেন। এই উৎসব মুসলিমদের মধ্যে আত্মত্যাগ, কৃতজ্ঞতা এবং ঐক্যের শিক্ষা ছড়িয়ে দেয়।