উবার কর্তৃপক্ষের দাবি, লন্ডনে প্রায় ত্রিশ লাখেরও বেশি মানুষ এই সার্ভিসটি গ্রহণ করে এবং চালক আছে অন্তত ৪০ হাজার।
ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডন বা টিএফএল জানিয়েছে, অ্যাপভিত্তিক ট্যক্সি সার্ভিস উবারের লাইসেন্স আর নবায়ন করা হবে না।
লন্ডন ট্রান্সপোর্টের এই সংস্থাটি আরো বলছে, ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতাসহ বিভিন্ন জায়গায় বড় ধরনের ঘাটতি রয়েছে অ্যাপভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটির। এসব ঘাটতি নাগরিকদের জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
লাইসেন্স নবায়ন না করার সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবিলম্বে আদালতে যাবার ঘোষণা দিয়েছে উবার কর্তৃপক্ষ।
উবার কর্তৃপক্ষের দাবি, লন্ডনে প্রায় ত্রিশ লাখেরও বেশি মানুষ এই সার্ভিসটি গ্রহণ করে এবং চালক আছে অন্তত ৪০ হাজার।
লন্ডনের মেয়র সাদিক খান কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, লন্ডনবাসীর জন্য ঝুঁকি তৈরি হলে উবারকে আবার লাইসেন্স দেওয়া হবে ভুল সিদ্ধান্ত।
এদিকে উবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “যারা ভোক্তাদের পছন্দ সীমিত করে ফেলতে চায় তাদের পথে চলছে ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডন ও শহরটির মেয়র। এই সিদ্ধান্তে বুঝা যায় লন্ডন উদার নয়”।
এই অ্যাপভিত্তিক সার্ভিসটির বিরোধিতা যারা করে আসছেন তাদের মতে, এটি রাস্তা শুধু যানজট তৈরি করে এবং ড্রাইভাররা যেন আইন মেনে চলে সে ধরনের কোনো নীতিও নেই এই প্রতিষ্ঠানটির।
বিবিসির যোগাযোগ বিষয়ক সংবাদদাতা টম এডওয়ার্ডস তাঁর বিশ্লেষণে বলছেন, লন্ডনে উবার সার্ভিস চালু হবার পর সেখানে ক্যাব ও ট্যাক্সি সেবার চিত্র পুরো পাল্টে যায়।
সার্ভিসটিকে “ঝামেলাপূর্ণ” প্রযুক্তির ব্যবহার হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে সেটি সস্তা ট্যক্সি সার্ভিস হবার কারণে লন্ডন শহরে জনপ্রিয়ও হয়ে উঠে। তবে এ কোম্পানিকে ঘিরে লন্ডনে সমালোচনাও কম নয়।
উবারের কাজের ধরন ও শর্ত নিয়ে বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়ন, অন্যান্য ক্যাব সার্ভিসের চালক ও আইনপ্রণেতাদেরও আপত্তি রয়েছে।
এছাড়া উবারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে, এমনকি তারা সঠিকভাবে ‘ক্রিমিনাল চেক’ও করে না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
লন্ডনে উবারের লাইসেন্সের মেয়াদ চলতি মাসেই শেষ হয়ে যাবে।
তবে উবার কর্তৃপক্ষ লন্ডন ট্রান্সপোর্ট কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে।
আপিলের জন্য ২১ দিন সময় পাবে উবার।
তবে সেখানে তাদের আবেদন না টিকলে তা হবে উবারের চালকদের জন্য একটি বড় ধাক্কা।
বিশ্বের বিভিন্ন বড় শহরে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হলেও বিভিন্ন দেশে আইনি জটিলতা ও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে উবার কর্তৃপক্ষকে।