বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে ঘিরে এতো বিতর্কের কারণ কি?

Date:

Share post:

বাংাদেশে সাম্প্রতিক গুলোতে নানা সময়ে আলোচনায় উঠে এসেছেন বিচারপতি দ্দিন চৌধুরী মানিক।

১৯৭৮ সালে কাজ শুরু করে দীর্ঘ ৩৮ বছর আইন পেশায় প্রথমে আইনজীবী ও পরে বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

কিন্তু তাকে ঘিরে এতো বিতর্কের কারণ কি ?

এমন প্রশ্নের জবাবে বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেছেন দুটো মামলার রায়ের কারণে অনেকে তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন।

“বিতর্ক শুরু হয় দুটি মামলা দিয়ে। একটি হলো তাহের হত্যা মামলা। এখানে প্রমাণিত হয়েছে তাহেরের বিচার ছিলো একটি প্রতারণা। আমি বলেছিলাম এটা ছিলো ঠাণ্ডা মাথার হত্যাকাণ্ড। এটা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়লো যে আমি বলেছি জিয়া ঠাণ্ডা মাথার । এ কথা বলাতে জিয়ার সমর্থক বিএন খুব ক্ষেপে গেলো। আরেকটি মামলায় দু জনের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছিলাম। তাতে তারা আরও ক্ষিপ্ত হলো ও সেদিন বিএনপির সমর্থক আইনজীবীরা আদালত আক্রমণ করেছিলো”।

বিচারক থাকাকালে সংসদ ও স্পিকারকে কটাক্ষ করার বিষয়ে তিনি , “আমি এমন কথা বলিনি। এটা মিস রিপোর্টিং হয়েছিলো। ওভাবে বলিনি। আমি এটা ব্যাখ্যা করেছি মহামান্য পতির কাছে”।

সংসদেই অনেক সিনিয়র পার্লামেন্টারিয়ান আপনার সমালোচনা করেছেন এবং একজন আপনাকে স্যাডিস্টও বলেছেন, অর্থাৎ অন্যকে হেয় করে আপনি মজা পান, আসলেই কি তাই ?—এমন প্রশ্নের জবাবে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন , “আমার সাথে যাদের পরিচয় আছে তারা এটা মানবেননা। এটা ছিলো একটি মিস কমিউনিকেশনের রেজাল্ট”।

শেষ দিকে প্রধান বিচারপতির সাথেও আপনার বিরোধ ছিলো প্রকাশ্য, তার অভিশংসন চেয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়েছিলেন আপনি…পাশাপাশি অবের পর রায় লেখা নিয়ে আবার অবসরের পর সুপ্ কোর্ট চত্বরে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন- এ বিষয়ে বিচারপতি চৌধুরী বলেন, “আমার সাথে প্রধান বিচারপতির সুসম্পর্কই ছিলো। কিন্তু কামারুজ্জামানের মামলায় তিনি দুবার বললেন যে তিনি শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন এবং পাকিস্তান বাহিনীকে সহায়তা করেছেন। যখনি জানলাম তিনি শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন তখন শান্তি কমিটির সদস্যের সাথে তো আমার সখ্যতা থাকতে পারেনা”।

প্রধান বিচারপতির সাথে তার কথোপকথন রেকর্ড করার জন্য অনেকে তার দিকেও ইঙ্গিত করেন- এ বিষয়ে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, “রেকর্ড আমি করিনি। কিন্তু রেকর্ড করে কেউ অন্যায় করেনি। কারণ একজন বিচারপতি আসামীর লোকের সাথে দেখা করছেন এর চেয়ে অন্যায় আর কিছু হতে পারেনা”।

তিনি বলেন, ” উনি (প্রধান বিচারপতি) আমাকে বসতে দিলেননা সাতদিন যাতে কেউ ফেয়ারওয়েল দিতে না পারে। এটা করেছেন শপথ ভঙ্গ করে। কারণ উনি বিরাগের বশবর্তী হয়ে এটা করেছেন”।

আপনি একজন নেতার আদর্শের অনুসারী, আর সেই আদর্শের প্রতিপক্ষ যারা তারা কি আদালতে আপনার কাছে ন্যায় বিচার পেয়েছেন, “অবশ্যই পেয়েছেন। আমি বঙ্গবন্ধুর নীতির অনুসারী। আমি আইন দেখে বিচার করেছি”।

বিচারপতি থাকার সময় বিমানের বিজনেস ক্লাসে সিট না পাওয়া নিয়ে প্রতিক্রিয়া, আবার চাকুরী শেষে ়ি না ছাড়া-এসব বিষয়ে তিনি বলেন, “বিমানে আমরা নিজ থেকে বসিনা। আমাকে বিমানের লোকই যথাযথভাবে বিজনেস ক্লাসে বসিয়েছিলো। পরে ম্যানেজার এসে পাইলটের ভুল স্বীকার করেছিলো। পরে মামলা হয়েছিলো কারণ অপদস্থ করেছিলো ও পত্রিকায় দিয়েছিলো। সেই পত্রিকাও পড়ে ভুল স্বীকার করেছিলো”।

আপনি বাংলাদেশের পাশাপাশি ব্রিটেনেরও নাগরিক, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের একজন বিচারপতি একই সঙ্গে আরেকটি দেশেরও নাগরিক, আইনগত দিক থেকে কোন ভুল না হলেও, নৈতিক দিক থেকে এটা কতটা যথার্থ ছিলো? – এ প্রশ্নের জবাবে বিচারপতি চৌধুরী বলেন এতে অনৈতিকতার কি আছে? সাংবিধানিক, আইনগত বা নৈতিক কোন বাধা নেই এতে”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক

ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আধা ঘণ্টার...

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কিশোরী তাসনীম ইসলাম প্রেমা (১৮) মারা গেছে

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কিশোরী তাসনীম ইসলাম প্রেমা (১৮) মারা গেছে। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম...

পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে

দেখতে দেখতে রমজান শেষ হয়ে এলো। স্বভাবতই রমজান শেষে মহিমাময় পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা এবং চাঁদ দেখে...

চট্টগ্রামের আলোচিত সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে ঢাকার বসুন্ধরা সিটি থেকে গ্রেফতার

চট্টগ্রামের আলোচিত সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে ঢাকার বসুন্ধরা সিটি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার (১৫ মার্চ)...