চালের বাজারের অস্থিরতা নিয়ে সরকার কি বলছে?

Date:

Share post:

চালের দাম এতোটা উর্ধ্বমুখী এর আগে কখনো হয়নি।

অস্থির চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে মিয়ানমার থেকে এক লক্ষ টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। এনিয়ে ঢাকায় সোমবার মিয়ানমার প্রতিনিধিদলের সাথে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সরকার বলছে, মিল মালিকদের গুদামে কতটা চাল মজুত আছে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নির্ধারিত সীমার বাইরে মজুত থাকলে মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মাঠে নেমেছে।

উত্তরাঞ্চলীয় জেলা নওগাঁর একজন চালকল মালিক সারোয়ার আলম বলছেন, এ ধরনের উদ্যোগে কোন কাজ হবে কিনা সেটি নিয়ে তার সংশয় আছে।

তিনি মনে করেন, এ ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে চাল কল মালিকদের মাঝে ‘আতংক’ সৃষ্টি করতে পারে। এ ধরনের ‘আতংক’ তৈরি হলে চাল ব্যবসার উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বাজারে এখন মোটা চালের কেজি কমপক্ষে ৫০ টাকা।

বাজার পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সরকারের গুদামে যথেষ্ট চাল মজুত না থাকার কারণেই এ পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে।গুদামে কতটা চাল মজুত আছে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

একটা সময় চালকল মালিকরা সরকারের বেঁধে দেয়া দামে তাদের কাছে চাল বিক্রি করতে চাননি।

ফলে বাজার থেকে চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। গবেষক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলছেন, দীর্ঘমেয়াদী ঘাটতির আশংকা থেকেই চালের বাজার উর্ধ্বমুখী হয়েছে।

তিনি বলেন, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সরকারীভাবে দেশের ৫০ লাখ পরিবারকে প্রতিমাসে ৩০ কেজি চাল দেবার উদ্যোগ নেয়া হয়।

“সে সময় চালের একটি বড় ধরনের ঘাটতি তৈরি হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে বোরো ধানের উৎপাদনের কারণে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও, এরপর বন্যার কারণে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এখন যখন আমনের উৎপাদন চলছে তখন আশংকা রয়েছে যে বাজারে পর্যাপ্ত উৎপাদন নাও আসতে পারে,” বলছিলেন খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

কিন্তু এ পরিস্থিতিকে সংকট বলতে রাজী নয় সরকার। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলছেন, কোথায় কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে কি না সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “টাকা দিলে চাল পাওয়া যায়। তার মানে কোন ঘাটতি নাই। আমারা জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারদের বলেছি, বিভিন্ন জায়গায় চাল কল মালিকদের সাথে আলাপ করে জেনে নেয়া যে কোন মিলে কত চাল মজুত আছে।”বাজার পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সবচেয়ে জরুরী হচ্ছে সরকারী গুদামে চাল সংগ্রহ করা।

তিনি বলেন, যদি বেশি মজুত থাকে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে, আর যদি বেশি মজুত না থাকে তাহলে কোন সমস্যা নেই।

বাণিজ্যমন্ত্রী জানালেন, কোন চাল ব্যবসায়ীকে অগ্রিম গ্রেফতারের কোন নির্দেশ দেয়া হয়নি।

বাজার পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আইনগত পদক্ষেপের পাশাপাশি সবচেয়ে জরুরী হচ্ছে সরকারী গুদামে চাল সংগ্রহ করা।

যদি পরিস্থিতি এমন হয় যে সরকার গুদামে মজুদ করতে পারছে না তাহলে পরিস্থিতি আরো অস্থিতিশীল হবে।

খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম মনে করেন, সরকারী গুদামে চালের মজুত বাড়ানোর পাশাপাশি বেসরকারি খাতে চাল আমদানিতে উৎসাহ দিতে হবে।

মি: মোয়াজ্জেম বলেন, যত দ্রুত সম্ভব সরকারের অভ্যন্তরীণ মজুত বাড়ানোর পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায় থেকেও যথেষ্ট চালের আমদানি বাড়াতে হবে।

এদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানাচ্ছেন, সরকার চাল ব্যবসায়ীদের সাথে কোন জোর জবরদস্তি করতে চায় না। বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে কিভাবে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা যায়, সেটিই তাদের লক্ষ্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...