রেলের মালামাল চুরি করে বাইরে বিক্রির অভিযোগে পাহাড়তলী রেলওয়ে সেল ডিপু ইনচার্জ উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইউনুসকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ইউনুসের স্থলে রাব্বানী নামে একজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার রেলের সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সেল ডিপুর ইনচার্জ মোহাম্মদ ইউনুসকে সাসপেন্ড করেন। এদিকে গতকাল রেলওয়ে পাহাড়তলী সেল ডিপু পরিদর্শন করেছেন আরএনবির চিফ কমান্ডেন্ট ও পাহাড়তলী সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক। তারা সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে সেল ডিপুর (যেখানে পূর্বাঞ্চলের সমস্ত পুরনো মালামাল জমা হয়) মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকার সমস্ত সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ দেখতে পান। এসময় তারা চারদিকে সিসিটিভি বন্ধ কেন জানতে চান। তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জুন বিকেলে রেলের পাহাড়তলী বিভাগীয় সেল ডিপু থেকে মালামাল চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় আরএনবির সদস্যরা ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল। ৪ জেন থেকে একজনকে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর এক হাবিলদারের নিজ ক্ষমতাবলে ছেড়ে দিলে ওই দিনেই হাবিলদারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ব্যাপারে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর এসিস্ট্যান্ট কমান্ডার সত্যজিৎ দাশ জানান, রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সেল ডিপুর ইনচার্জ ইউনুস নিজেই আটককৃত ব্যক্তিদের দিয়ে মালামাল বের করছিলো। খবর পেয়ে আমাদের আরএনবির সদস্যরা মালামাল বের করার সময় তাদেরকে আটক করে। তারা কোনো ধরনের কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। পুরনো কাঠের ভেতরে রেলের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে যাচ্ছিল। ডিপো থেকে মালামাল চুরি করে বিক্রির ঘটনায় উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইউনুসকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
রেলওয়ের আরএনবির এক কর্মকর্তা জানান, গত ২৭ জুন পাহাড়তলী সেল ডিপু থেকে যন্ত্রপাতি চুরির ঘটনা রেলওয়ে সম্পদ সুরক্ষা আইন তিন জনের নামে মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আরএনবির সাব-ইন্সপেক্টর হাবিব জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাহাড়তলীর সেল ডিপুর ইনচার্জ মুহাম্মদ ইউনুসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেপ্তারের অনুমতি চেয়ে পাহাড়তলী সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের কাছে চিঠি দিয়েছেন। পাহাড়তলীর সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক ওই চিঠি ধরে রেখেছেন এবং তড়িঘড়ি করে আজকে তাকে সাময়িকভাবে সাসপেন্ড করেছেন।
মূলত ইউনুসকে বাঁচানোর জন্য সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক এ কৌশল অবলম্বন করেছেন বলে রেলের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে গতকাল ইউনুসকে ফোন করা হলে তার স্ত্রী ফোন রিসিভ করে ইউনুসের প্রেসার বেড়ে গেছে বলে জানান।
তবে গত শনিবার মোহাম্মদ ইউনুস গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন-রেলের নিয়মানুযায়ী সেল ডিপুতে জ্বালানি কাঠ থাকলে তা রেল কর্মচারীদের নির্দিষ্ট ফিতে বিক্রি করা যায়। সে অনুযায়ী প্রতি শনিবারে রেল কর্মচারীরা এখান থেকে নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে জ্বালানি কাঠ নিয়ে যায়। শনিবারও (২৭ তারিখ) সেই নিয়ম অনুযায়ী ৪ জনের নামে জ্বালানি কাঠের স্লিপ ইস্যু করা হয়েছে। তারা লোক দিয়ে ভ্যানে কাঠ নিয়ে বের হবার সময় আরএনবি সদস্যরা এসে ভ্যানের তিনজনকে ধরে নিয়ে যায়। কাঠের ভেতরে কেনো যন্ত্রপাতি ছিলনা। এটা মিথ্যা কথা।
পাহাড়তলী রেলওয়ে সেল ডিপু ইনচার্জ উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইউনুসকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
Date:
Share post: