দেশ অপেরার পদক পেলেন দুজন

Date:

Share post:

‘যাত্রাশিল্প হলো লোকনাট্যের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। এই শিল্পের হারানো গৌরবকে পুনরুজ্জীবিত করতে সমসাময়িক ও আধুনিক উপস্থাপনা জরুরি। প্রত্যেক পালকারকে আধুনিক ও সময়োপযোগী পালা লেখার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।’ পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বললেন নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। এ সময় তিনি যাত্রাশিল্পের সন্ধ্যাকালীন মঞ্চায়ন ও উন্মুক্ত স্থানে নিয়মিত দুই ঘণ্টা যাত্রা পরিবেশনের আহ্বান জানান। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার হলে যাত্রাদল ‘দেশ অপেরার রজতজয়ন্তী পদক ২০১৮’ প্রদান অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান। নাট্যজন আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক বিভাগের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন কবির প্রমুখ। যাত্রাশিল্পী গাজী বেলায়েত ও বকুল রাণী সাহার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা দেন যাত্রা-গবেষক এম এ মজিদ।

‘দেশ অপেরার রজতজয়ন্তী পদক ২০১৮’ পেয়েছেন বিশিষ্ট যাত্রাব্যক্তিত্ব জ্যোৎস্না বিশ্বাস ও শারদীয় নাট্যোৎসবের প্রবক্তা লায়ন চিত্ত রঞ্জন দাশ। অনুষ্ঠানে জ্যোৎস্না বিশ্বাসের পদক গ্রহণ করেন তাঁর মেয়ে অভিনয়শিল্পী অরুণা বিশ্বাস। পদকপ্রাপ্তদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও উত্তরীয় তুলে দেন অতিথিরা।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘যাত্রা সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। তবে যাত্রাশিল্প অবক্ষয়ের পথে। স্বাধীনতার পরে এ শিল্প তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। সেই ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে হলে সন্ধ্যাকালীন মঞ্চায়ন করা জরুরি। একই সঙ্গে পেশাদার যাত্রাদলকে পরিশীলিত চর্চার লক্ষ্যে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ প্রদান ও প্রতিটি পালা প্রযোজনায় লোকজ আঙ্গিকের সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটাতে হবে।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান বলেন, ‘একটি ভালো সমাজ বা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য যে উপকরণগুলো প্রয়োজন, তার মধ্যে যাত্রাশিল্প অন্যতম। এই অনুষঙ্গের মাধ্যমে সমাজের পরিবর্তন সম্ভব। এ জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের পাঠ্যসূচিতে প্রথম বর্ষ থেকেই যাত্রাশিল্প রাখা হয়েছে। গত দুই বছরে দুটি যাত্রা প্রযোজনা মঞ্চস্থ হয়েছে। এমনকি এ শিল্পের চর্চায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেরানীগঞ্জের নতুন আঙিনায় উন্মুক্ত মঞ্চ তৈরি করা হবে। যে মঞ্চে সন্ধ্যায় যাত্রা প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত যাত্রাশিল্পের ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাত্রাশিল্পের চর্চা বাড়িয়ে মুক্ত মঞ্চে নিয়মিত মঞ্চায়ন প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে অমলেন্দু বিশ্বাসের জীবন ও কর্ম নিয়ে একক যাত্রাপালা ‘আমি অমলেন্দু বিশ্বাস’ মঞ্চস্থ হয়। নিজের রচনা ও নির্দেশনায় এ পালায় একক অভিনয় করেন মিলন কান্তি দে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...