বাংলাদেশে সহজে ক্যান্সার পরীক্ষার পদ্ধতি উদ্ভাবন: কীভাবে কাজ করবে এটি?

Date:

Share post:

বাংলাদেশে একদল বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে খুব কম সময়ে ও অনেক কম খরে ক্যান্সার শনাক্ত করার একটি পদ্ধতি তারা উদ্ভাবন করেছেন।

ওই গবেষক দলের প্রধান, পদার্থবিজ্ঞানী ইয়াসমিন হক বিবিসিকে জানিয়েছেন তারা মানবদেহের রক্তের মধ্যে এমন কিছু ‘বায়োমার্‘ খুঁজে পেয়েছেন, যা ক্যান্সার রোগীর ক্ষেত্রে ভিন্নভাবে সাড়া দেয়।

অর্থাৎ ক্যান্সারমুক্ত কোনও ব্যক্তির ক্ষেত্রে রক্তের ওই বায়োার যে রকম রিডিং দেবে, তিনি ক্যান্সার আক্রান্ত হলে তাতে পাওয়া যাবে সম্পূর্ণ অন্য ধরনের রিডিং।

অন্যভাবে বললে, কোনও ব্যক্তির শরীরে ক্যান্সার বাসা বাঁধলে তা রক্তে এক ধরনের ‘ছাপ’ ফেলে যায় – বা রক্তের ওই বায়োমার্কারে তা ধরা পড়ে। উদ্ভাবিত প্রযুক্তিতে ঠিক সেটাই ধরা যাবে বলে দাবি করা হচ্ছে।

এই গবেষণাটি ালিত হয়েছে বাংলাদেশে র শাালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি িদ্যালয়ে।

ড: হক জানিয়েছেন, তারা ‘নন-লিনিয়ার অপটিকসে’র পদ্ধতি প্রয়োগ করেই রক্তের মধ্যে ওই ধরনের বায়োমার্কার খুঁজতে শুরু করেছিলেন, যাতে শেষে সাফল্য মিলেছে।

“ষাটের দশকের শুরুতে লেসার আবিষ্কৃত হওয়ার সময় থেকেই এই পদ্ধতির প্রয়োগ হচ্ছে, কিন্তু আমাদের আগে কেউ এর মাধ্যমে রক্তের মধ্যে অপটিক্যাল বায়োমার্কার খুঁজেছে বলে আমাদের জানা নেই”, বলছিলেন ইয়াসমিন হক।

বিবিসি বাংলার মোয়াজ্জেম হোসেনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও জানান, তাদের গবেষক দলের কেউ কেউ এমনও আশা করছেন যে এভাবে ক্যান্সার পরীক্ষার একটি ‘ডিভাইস’ বা যন্ত্র আগামী এক বছরের মধ্যেই তৈরি করে ফেলা সম্ভব হবে।

“আমরা প্রথমে ধরেছিলাম বছর পাঁচেক লাগবে, যার মধ্যে আড়াই বছর মতো কেটেছে। এখন দেখা যাক, কত তাড়াতাড়ি ল্যাবরেটরি থেকে এই ধরনের ডিভাইস আমরা মানুষের ব্যবহারের জন্য তৈরি করতে পারি”, বলছিলেন তিনি।

এই মুহুর্তে ক্যান্সার শনাক্ত করার যে সব সাধারণ পদ্ধতি চালু আছে, তা যেমন সময়সাপেক্ষ – তেমনি বেশ ব্যয়বহুলও বটে।

ফলে শুধু রক্তের নমুনা পরীক্ষা করেই যদি ক্যান্সার নিশ্চিতভাবে শনাক্ত করা যায়, তা বিশ্বের কোটি কোটি ক্যান্সার রোগীর জন্য বিরাট সু বয়ে আনবে সন্দেহ নেই।

বিজ্ঞানী ইয়াসমিন হক বিবিসিকে আরও জানান, তারা ইতিমধ্যেই এই পদ্ধতির পেটেন্টের জন্য রীতিমাফিক আবেদন জানিয়েছেন। পেটেন্টের আবেদন যেমন আমেরিকাতে করা হয়েছে, তেমনি করা হয়েছে বাংলাদেশেও।

তবে ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস বা মেধাস্বত্ত্ব বিষয়ক আইনজীবীদের পরামর্শে তারা গবেষণার বিস্তারিত বিষয়বস্তু এখনও কোনও বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশ করেননি।

ক্যান্সারের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি কি তাহলে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে? – ইয়াসমিন হক জবাবে বলছেন, “দেখুন, আমরা একটা যুগান্তকারী কাজ করেছি কিংবা ক্যান্সার শনাক্তকরণে বিপ্লব এনে দিচ্ছি – এত বড় বড় কথা আমরা বলতে চাই না।”

“কিন্তু আমরা অবশ্যই দারুণ এক্সাইটেড – কারণ আমরা ক্যান্সার রোগীদের রক্তে একটা মারাত্মক র্তন ধরতে পেরেছি, যেটা নীরোগ মানুষদের তুলনায় ভীষণ, ভীষণ আলাদা!”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্না শারমিনকে গ্রেপ্তার করেছে বাকলিয়া থানা

চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্না শারমিনকে গ্রেপ্তার করেছে বাকলিয়া থানা পুলিশ। শনিবার (১০ মে)...

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বিচারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ শনিবার রাতে...

প্রথমবারের মতো নিজ জেলায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো...

যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ভারত-পাকিস্তান

দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা তীব্র উত্তেজনা ও রক্তক্ষয়ের পর ভারত এবং পাকিস্তান অবশেষে একটি পূর্ণাঙ্গ ও...