
সৌদি আরবে নারীদের গাড়ি চালানোর বৈধতা দেয়ার পর অনেক নারীই গাড়ি চালানো শিখছেন।
রাজধানী রিয়াদের বাইরে প্রিন্সেস নোরা ইউনিভার্সিটির উদ্দেশ্যে গাড়িতে করে যাত্রা শুরু করেছেন ড্রাইভিং প্রশিক্ষণরতএক নারী। সাথে রয়েছেন তাঁর প্রশিক্ষক।
প্রশিক্ষক নিজেও একজন নারী এবং দীর্ঘদিন ব্রিটেনে বসবাস করেছেন।
সে নারী তাঁর প্রশিক্ষককে জিজ্ঞেস করলেন, যে তিনি ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালাতে পারেন কিনা?
প্রশিক্ষক বলেন. তিনি ৪০ কিলোমিটার বেগে চালাতে পারেন। কিন্তু ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটারের বেশি নয়।
রাজধানী রিয়াদের একটি গাড়ির শো-রুমে ব্যবসায়ী নাজিয়া আল হাজা সবচেয়ে আধুনিক গাড়িটি দেখছিলেন।
তিনি বড় আকারের একটি গাড়ি কিনতে চান। এর আগে তিনি যখন গাড়ি কিনেছিলেন তখন কেবল পেছনের আসেনেই বসে থাকতেন।
“প্রতিবার আমি যখন নতুন গাড়ি কিনতাম তখন আমার কান্না পেত। অন্য একজন ড্রাইভর আমার গাড়ি চালাবে, কিন্তু আমি গাড়ি চালাতে পারবোনা, এটা ভেবে আমার কান্না পেত। এতে আমার হৃদয় ভেঙ্গে যেত। আমার টাকা দিয়ে আমি গাড়ি কিনেছি, কিন্তু আমি এ গাড়ি চালাতে পারবো না। কিন্তু এখন আমার সে স্বপ্ন পূরণ হবে,” বলছিলেন নাজিয়া।
এসব কিছুর জন্য যিনি কৃতিত্ব পাচ্ছেন তিনি হলেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।
সৌদি আরবের সমাজে নানা সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন এ ক্রাউন প্রিন্স।
রাস্তার পাশে বিভিন্ন জায়গায় তাঁর ছবি দেখা যায়।
কিন্তু সৌদি আরবে নারীদের গাড়ি চালানোর উপর বিধি-নিষেধ তুলে নেবার দাবীতে যারা সোচ্চার ছিলেন তাদের কয়েকজন এখন কারাগারে।
আরো পড়তে পারেন:
বিদেশিদের জন্য ঢাকা নগরী কেন এত ব্যয়বহুল?
যে কারণে চট্টগ্রামে হেপাটাইটিস ‘ই’ প্রকোপ
গাজীপুর সিটি নির্বাচন: অনিয়মের নানা অভিযোগ
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রত্না বেগম বলেন, ” ড্রাইভিং-এর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবার কয়েক সপ্তাহ আগে সৌদি কর্তৃপক্ষ অনেক নারীকে আটক করেছে, যারা নারীদের উপর থেকে ড্রাইভিং-এর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবার বিষয়ে আন্দোলন করেছেন। যেসব পুরুষ তাদের সমর্থন করেছে তাদেরও আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তাতে ২০ বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে।”
সন্ধ্যার সময় রিয়াদের একটি মার্কেটে যান বিবিসির সংবাদদাতা।
দেখা যায়, মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে। স্বর্ণের পাশাপাশি জামা-কাপড়ও বিক্রি হচ্ছে সেখানে।
আর নারীদের আপাদমস্তক ঢাকার জন্য বোরকা, হিজাব এবং নেকাবও বিক্রি হচ্ছে।
মার্কেটের চারপাশে তাকালে পরিবর্তন খুব একটা দেখা যায়না।
অনেক নারীকে দেখা যায় যাদের পুরো মুখ ঢাকা কিংবা মাথা ঢাকা।
তবে সেখানে লোকজনের সাথে কথা বললে পরিবর্তনের একটি আভাস লক্ষ করা যায়।
এক ব্যক্তি যেমনটা বলছিলেন, নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেয়ায় তিনি বেশ খুশি হয়েছেন।
হাসিমাখা মুখে তিনি বলেন. “আমার সাথে আমরা স্ত্রী এবং কন্যা আছে। শীঘ্রই নারীরা ড্রাইভিং করতে পারবে। এতে আমরা অনেকটা ভার মুক্ত হবো। আমরা বাসায় বসে বসে থাকবো, আর ওরা নিজেরা নিজেদের কাজ করে করে নেবে।”
তিনি বলছেন ড্রাইভিং-এর এক্ষেত্রে সবাই সমান হবে এবং এটা জীবনে স্বাভাবিক বিষয়।
নারীদের ড্রাইভিং-এর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় তিনি বেশ খুশি।
Source from: http://www.bbc.com/bengali/news-44595507