
আপনি হয়ত শুনেছেন রোনালদো তার আকর্ষণীয় শারীরিক গঠন বানাতে কি পরিমাণে জিমে দৌড়েছেন।
হয়ত শুনেছেন লিওনেল মেসিকে ছোটবেলায় শরীরের সঠিক বৃদ্ধির জন্য হরমোন থেরাপি নিতে হয়েছে।
কিন্তু হয়ত জানেন না এবারের বিশ্বকাপে খেলছেন অনেক খেলোয়াড়দের যাদের রয়েছে চমকপ্রদ সব তথ্য।
যেভাবে শুরু করেছিলেন রোনালদো
পর্তুগালের রোনালদো বেশ কয়েক বছর ধরে বিশ্বের প্রথম সারির দুজন খেলোয়াড়ের একজন।
তিনি তার সাফল্যের জন্য আলবার্ট ফানত্রো নামে তার ছোটবেলার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর অবদান হাসিমুখে স্বীকার করেন।
দুজনে জুনিয়র টিমে যখন খেলতেন তখন স্পোর্টিং লিজবন ক্লাবের জন্যে তরুণ উঠতি খেলোয়াড় খুঁজতে একজনকে পাঠানো হলে তাদের খেলা দেখতে। যাদের কিনা বলা হয় স্কাউট।
তেমন একজন স্কাউট তাদের বলেছিলেন আজ যে সবচাইতে বেশি গোল করবেন তাকেই তিনি মনোনীত করবেন।
তো শুরু হল খেলা। দুই বন্ধু একটি করে গোল করলেন। এরপর ফানত্রো এক মোক্ষম সুযোগ পেলেন জালে বল পুরে দেয়ার কিন্তু তিনি বল পাস করে দিলেন রোনালদোকে।
সুযোগ কাজে লাগালেন রোনালদো আর সুযোগ পেয়ে গেলেন স্পোর্টিং লিজবন ক্লাবের হয়ে খেলার।
যা বদলে দিয়েছিলো তার ক্যারিয়ার। তিনি পরে বন্ধুকে জিজ্ঞেস করেছিলেন কেন তিনি এমন সুযোগ হাতছাড়া করলেন।
বন্ধুর সহজ উত্তর, “কারণ তুমি আমার চেয়ে ভালো খেলোয়াড়”
এরপর ফানত্রোর ফুটবল ক্যারিয়ারে ইতি ঘটলো। বেকার জীবন কাটাচ্ছিলেন তিনি।
সেসময় এক সাংবাদিক গিয়েছিলেন চমকপ্রদ এই কাহিনী নিয়ে রিপোর্ট করতে তিনি দেখলেন বেকার হলেও দামী বাড়িতে থাকেন ফানত্রো। দামি গাড়িও চড়েন।
সেটি কিভাবে সম্ভব হল জানতে চাইলে হাসিমুখে বললেন, সব ক্রিশ্চিয়ানোর উপহার”
মেসির স্টার হয়ে ওঠার শুরুর গল্প
মেসির এক বন্ধু হুয়ান লেগুইযামো। আর্জেন্টিনার রোজারিও শহরে কিশোর মেসির একটি খেলা সম্পর্কে মজার গল্প বলছিলেন তিনি।
সেই খেলায় পুরস্কার ছিল বাইসাইকেল। খেলা শুরু হয়েছে কিন্তু মেসির দেখা নেই।
লেগুইযামো বলছিলেন, “খেলার প্রথমার্ধ শেষ হল। আমরা ১-০ গোলে পিছিয়ে আছি। তখন এলো মেসি। ঘটনা হল বাথরুমে আটকে পড়েছিলো মেসি। দরজা ভেঙে বের হয়ে তারপরে সে এসেছিলো। ঐ খেলায় আমরা ৩-১ গোলে জিতেছিলাম। মেসি একাই তিনটি গোল করেছিলো”
মেসিকে নিয়ে আরেকটি মজার গল্প হল ১৩ বছর বয়সে যখন তিনি বার্সেলোনা অ্যাকাডেমিতে যোগ দিয়েছিলেন, তখন ব্যাপকভাবে কোকাকোলা ভক্ত ছিলেন মেসি।
সে এতটাই বেশি কোকাকোলা পান করেছিলেন যে বাধ্য হয়ে কোকাকোলার সব ভেন্ডিং মেশিন সরিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছিলো বার্সেলোনা অ্যাকাডেমি।
বার্সেলোনার সাথে তার প্রথম চুক্তি হয়েছিলো একটি টিস্যু পেপারের উপর কারণ তখন চারপাশে কোন কাগজ ছিল না।
ক্লাবটির একজন প্রতিনিধি তার সাথে সাক্ষাতের সাথে সাথেই কোন ধরনের অপেক্ষা না করে চুক্তি করে ফেলতে চেয়েছিলেন।
বড় হৃদয়ের নিরিবিলি মানুষ মোহাম্মদ সালাহ
মোহাম্মদ সালাহকে নিয়ে এই মুহূর্তে বিশ্বব্যাপী বেশ আলোচনা চলছে।
কিন্তু তার পরিচয় বেশ নিরিবিলি তবে বড় হৃদয়ের একজন ব্যক্তি হিসেবে।
ইনজুরি টাইমে তার করা এক গোলেই ১৯৯০ সালের পর প্রথম বিশ্বকাপে পৌঁছেছে মিশর।
এরপর মিশরের একজন ব্যবসায়ী তাকে বিলাসবহুল একটি বাড়ি উপহার দিতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু সেই উপহার প্রত্যাখ্যান করেন সালাহ।
বরং ঐ বাড়ি বানাতে যে পরিমাণ অর্থ লেগেছে তা সালাহ তার গ্রামে সাহায্য হিসেবে দিয়ে দেয়ার আহবান জানান।
দারিদ্র থেকে কিভাবে আজকের জায়গায় উঠলেন নেইমার?
ছোটবেলায় ফুটবলার হওয়ার কোন ইচ্ছেই ছিল না নেইমারের।
বরং পাওয়ার রেঞ্জার্স কমিক বই এর সুপারহিরো হতে চাইতেন তিনি।
নেইমারের পরিবার ছিল মারাত্মক দরিদ্র।
পরিস্থিতি এক পর্যায়ে এত ভয়াবহ ছিল যে নেইমারের পরিবার তার দাদা বাড়িতে একটি মাত্র তোশকে গাদাগাদি করে ঘুমাতো।
বাড়িতে বিদ্যুৎ থাকতো না প্রায় সময়ই। মোমবাতি দিয়ে চলতে হতো
অভাবের কারণে তার বাবা তিনটি চাকরী করতেন।
তাই প্রায় সময়ই নেইমার জুনিয়রের খেলা দেখতে যেতে পারতেন।
কিন্তু আজ নেইমার পৌঁছে গেছেন শীর্ষে।
শিশুদের জন্য বই লেখন ফ্রান্সের আন্তোয়াইন গ্রিজম্যান
ফ্রান্সের স্ট্রাইকার আন্তোয়াইন গ্রিজম্যান। কিন্তু তিনি শুধু যে ফুটবল খেলেন তা নয়।
শিশুদের জন্য প্রকাশিত বই রয়েছে তার। তার অনেকগুলো বইয়ের একটির নাম ‘গোল’।
গ্রিজম্যান বলছিলেন, “অ্যাথলেট হওয়ার জন্য অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে।
আমি এখন বাবা হয়েছি। ব্যক্তি ও খেলোয়াড় হিসেবে আমার যে আদর্শ তা আমি শিশুদের জানাতে চাই। ছোটবেলায় আমি যদি বেকহ্যাম বা জিদান সম্পর্কে এমন বই পেতাম আমি নিশ্চয়ই তা পড়তাম”
নাছোড়বান্দা ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডার ইভান রাকিতিচ
ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডার ইভান রাকিতিচের ভাষায় তিনি তার রেকেলকে স্ত্রীকে পাওয়ার জন্য দীর্ঘদিন চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।
সেভিয়ার সাথে যখন খেলতে গিয়েছিলেন তখন রেকেলকে দেখেই তার মারাত্মক পছন্দ হয়ে গিয়েছিলো।
কিন্তু তাকে কিছুই বলতে পারেন নি কারণ তিনি স্প্যানিশ বলতে পারেন না। এরপরই শুরু হল স্প্যানিশ শেখার চেষ্টা।
তারপর যখন শেষমেশ ভাষা রপ্ত করে ভালোলাগার মেয়েটিকে তার সাথে ডেটিং যাওয়ার অনুরোধ জানালেন রেকেল তাকে না করে দিলেন।
এভাবে কমপক্ষে তিরিশবার তাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন রেকেল।
তার বক্তব্য ছিল “তুমি ফুটবলার। হয়ত অন্য কোন দেশে অন্য কোন ক্লাবে চলে যাবে একদিন। অতএব না।”
কিন্তু না শুনে কিছুতেই দমে যাওয়ার পাত্র নন রাকিতিচ। সেজন্যে একটি বিষয় নিশ্চিত করলেন তিনি।
আর তা হল সেভিয়ার সাথে ভালো খেলে তার জায়গা পাকাপোক্ত করলেন। যাতে করে সেভিয়া ক্লাব তাকে বিক্রি করে না দেয়।
এভাবে লেগে থাকা পুরুষকে আর ফেরাতে পারেন নি রেকেল।
এখন তারা দুই মেয়ের বাবা-মা। রাতিকিচের ভাষায়, স্ত্রী রেকেলের মন জয় করা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জেতার চেয়েও কঠিন।
পোল্যান্ডের স্লমির পেজকোর রয়েছে চারটি কিডনি
কমিক বুক চরিত্র ডঃ হু। তার শরীরে ছিল দুটি হৃদপিণ্ড।
কিন্তু পোল্যান্ডের স্লমির পেজকোর শরীরে রয়েছে চারটি কিডনি।
সাধারণত মানুষের দুটি করে কিডনি থাকে।
এই বিশাল তথ্য আবিষ্কার হয়েছে ২০১১ সালে যখন কোলন ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন।
ক্লাবটিতে যোগ দেয়ার আগে তার যে ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছিলো তাতেই জানা গেলো চমকপ্রদ এই তথ্য।
পেজকো অন্যদের তুলনায় একটু বেশিই টয়লেটে যান।
Source from: http://www.bbc.com/bengali/news-44476659