বাংলাদেশে নীতিমালা বদলানোর পর যৌথ প্রযোজনার ছবি করতে আগ্রহী কলকাতা

Date:

Share post:

ভারত আর বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে চলচ্চিত্র প্রযোজ নতুন নীতিমালা নিয়ে উৎসাহ দেখাচ্ছে কলকাতার চলচ্চিত্র শিল্প। বাংলাদেশের তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু কলকাতায় বলছেন, নতুন নীতিমালায় বদলে ফেলা হয়েছে পুরণো নীতির অনেক অবাস্তব শর্ত।

যৌথ ছবিগুলিতে সমানুপাতিক হারেই দুই দেশের শিল্পী-কলাশলীদের রাখার বস্থা আগের মতোই থাকলে এখন থেকে পরিচালক হবেন একই। যে কোনও দেশেই ছবির শুটিং করা যাবে।

ারত আর বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র ্মানের ইতিহাসের শুরু ১৯৭৩ সালে হলেও সম্ি দুইদেশের যৌথ উদ্যোগে তৈরী বাংলা ছবি নিয়ে চলচ্চিত্র মহলে যথেষ্ট বিতর্ক আর বিক্ষোভ হয়েছে।

বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু শুক্রবার কলকাতায় জানিয়েছেন, “যেসব সমস্যা ছিল পুরণো নীতিমালায়, সেগুলিকে আমলে নিয়ে আমরা নীতিমালার পুনর্মূল্যায়ন করেছি। এর উদ্দেশ্য ছিল যৌথ প্রযোজনার ছবি যাতে দ্রুত সম্পন্ন করা যায়। আইনকানুনগুলোও বদলানো হয়েছে।”

কলকাতায়, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনে আসা তথ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছিলাম কী কী থাকছে নতুন নীতিমালায়?

“নতুন নীতিমালায় যেমন থাকছে যে ছবির পরিচালক হবেন একজনই। এতদিন দুজন পরিচালক থাকার কথা ছিল। তৃতীয় কোনও দেশের পরিচালকও থাকতে পারেন যৌথ উদ্যোগের ছবিতে। শুটিং কোথায় হবে, সেটা পরিচালক-প্রযোজকরাই ঠিক করবেন। যে কোনও দেশেই সেটা হতে পারে, এমন কি তৃতীয় কোনও দেশেও শুটিং করতে পারেন তাঁরা প্রয়োজন হলে,” বলছিলেন মি. হক।

গত কয়েক বছরে বারে বারেই এধরণের অভিযোগ উঠেছে যে যৌথ প্রযোজনার নামে আসলে ভারতের শিল্পী-কলাকুশলীদের সংখ্যাই যৌথ প্রযোজনার ছবিগুলিতে বেশী থাকছে। দুই দেশের দর্শকদের মধ্যে থাকা কিছু সাংস্কৃতিক ফারাককেও অনেক যৌথ প্রযোজনার ছবিতে আমল দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ ছিল বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের একটা অংশের।

তথ্যমন্ত্রী অবশ্য বলছিলেন যে যৌথ উদ্যোগে তৈরী ছবিগুলিতে যে দুই দেশের সমানুপাতিক অংশগ্রহণ থাকছে না – এমন তথ্য প্রমাণ কেই দিতে পারেন নি। এরকম একটা প্রচার অবশ্য যে আছে, সেটাও জানিয়েছেন মন্ত্রী।

যৌথ প্রযোজনার ছবি নিয়ে যে নতুন নীতিমালা তৈর করেছে বাংলাদেশ, তাতে যথেষ্ট উৎসাহী কলকাতার চলচ্চিত্র শিল্প মহল।

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার গৌতম ঘোষ দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে বেশ কয়েকটি অসাধারণ ছবি তৈরী করেছেন।

তিনি বিবিসিকে বলছিলেন, “যৌথ প্রযোজনার ছবি তৈরীর যে নীতি ছিল, সেটা নিয়ে মি. হক আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। আমরাও ঢাকায় গিয়েছিলাম আলোচনা করতে। আসলে আগের নীতিটা বহু পুরনো। আমি যখন ১৯৯১ সালে পদ্মার মাঝি ছবিটা করি, সেই সময়ে যে নীতিতে যৌথ উদ্যোগে ছবি হত, এখন পরিস্থিতি অনেক পাল্টে গেছে। অর্থনীতির ব্যবস্থাটাই বদলেছে। তাই বাংলাদেশ যে নতুন নীতি তৈরী করেছে, এটা খুবই আশার কথা। নতুন নিয়মে অনেক মুক্ত পরিবেশে কাজ করা যাবে।”

একই সঙ্গে মি. ঘোষের দাবী, শুধু যৌথ উদ্যোগের ছবি তৈরী করার ক্ষেত্রে নতুন নীতি নিলে চলবে না, দরকার বাংলা ছবির অভিন্ন বাজার।

“বিশ্বে বাংলা ভাষায় কথা বলেন প্রায় ৩৫ কোটি মানুষ। তার ১০ শতাংশকেও যদি আমরা বাংলা ছবি দেখাতে পারি, সেটা একটা বিরাট বড় বাজার। যেভাবে বলিউড বা তামিল ছবি পরিবেশনার নেটওয়ার্ক তৈরী করেছে, আমাদের দুই দেশের ইন্ডাস্ট্রিরও উচিত বাংলা সিনেমার জন্য একটা অভিন্ন বাজার তৈরীর চেষ্টা করা।” বলছিলেন গৌতম ঘোষ।

মি. ঘোষ আরও বলছিলেন, যৌথ প্রযোজনার ক্ষেত্রে ছবির খরচের জন্য একটি অভিন্ন তহবিল গড়ারও ব্যবস্থা ক – যেরকমটা হয়ে থাকে অনেক দেশেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

হিন্দু যুগলের বিয়ের অনুষ্ঠানে পাশে দাঁড়াল মুসলিম পরিবার

ধর্মীয় বিভাজনের সময়ে ভারতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে এক হৃদয়স্পর্শী ঘটনার ছবি ও ভিডিও। এতে সম্প্রীতির এক...

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকা বিমানবন্দরে এসে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরার পর ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গিয়াস উদ্দিন নামে আওয়ামী লীগের এক...

বিএনপির প্রতি সারজিসের আহ্বান

বিএনপিকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিসি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন,...

কীভাবে সংকটে পড়লেন অধ্যাপক ইউনূস?

অন্তর্বর্তী সরকার এক সংকটময় পরিস্থিতিতে উপনীত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের আলোচনা সামনে আসায় এ সরকারের...