উত্তর কোরিয়া একটি অত্যন্ত শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমার সফল পরীক্ষা চালানোর পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে যেসব পদক্ষেপের কথা যুক্তরাষ্ট্র বিবেচনা করছে তার মধ্যে একটি হলো উত্তর কোরিয়ার সাথে ব্যবসাবাণিজ্য করে এমন সব দেশগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্টিভেন ম্নুচিন এখন একটি নতুন প্রস্তাব তৈরি করছেন – যাতে উত্তর কোরিয়ার সাথে ব্যবসা বাণিজ্য করে এমন দেশগুলোর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেয়া।
এটা নিশ্চয়ই হবে নাটকীয় একটা পদক্ষেপ, কিন্তু এটা কি আমেরিকা আসলেই কার্যকর করতে পারবে? এ পরিকল্পনা কি বাস্তবসম্মত? এতে কি হিতে-বিপরীত হয়ে যাবার সম্ভাবনা নেই?
উত্তর কোরিয়া যাতে পরমাণু বোমার অধিকারী না হতে পারে – এ জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ ছাড়া সবকিছুই করেছে। কিছুতেই কাজ হয় নি।
উত্তর কোরিয়ার সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য করে এমন দেশগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করাটাও কি সম্ভব? প্রথমে দেখা যাক এরকম দেশের তালিকায় কারা আছে।উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু কর্মসুচিকে কোন ভাবেই ঠেকানো যায় নি
এরা হলো: চীন, রাশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, পর্তুগাল, ফ্রান্স, থাইল্যান্ড আর ফিলিপিন। এসব দেশের সাথে উত্তর কোরিয়া গত বছর ৬৫০ কোটি ডলারের ব্যবসা্ করেছে।
এই দেশগুলোর মধ্যে অনেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ।
কিন্তু এদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশ হলো চীন।
উত্তর কোরিয়ার ৯০ ভাগ বাণিজ্যই হয় চীনের সাথে। অবশ্য চীন এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে উত্তর কোরিয়া থেকে কয়লা আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে।
কিন্তু এই চীনই আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। গত বছর ৪৫ হাজার কোটি ডলারের পণ্য কিনেছে চীন থেকে । চীনে রপ্তানি করেছে ১১ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের পণ্য।হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষা করার পর উত্তর কোরিয়ার ওপর আরো নিষেধাজ্ঞার কথা বিবেচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র
উত্তর কোরিয়ার সাথে ব্যবসা করার অপরাধে আমেরিকা যদি চীনের সাথে বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়, তাহলে আমেরিকায় প্রায় ১০ লাখ লোক চাকরি হারাবে। আমেরিকায় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে।
চীনের সাথে বিশ্ব-অথনীতির গতিপ্রকৃতির সম্পর্ক গভীর। তাই চীন-মার্কিন বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাবার বিরূপ প্রভাব পড়বে এশিয়ার আরো বহু দেশের অর্থনীতিতে।
তাই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এরকম নীতি নিতে চাইলেও তার পক্ষে রিপাব্লিকান সেনেটরদের সমর্থন পাবেন – এমন সম্ভাবনা খুবই কম।
বিশেষ করে এই কারণে যে এটা এমন এক প্রস্তাব যার কার্যকারিতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে, এবং যাতে উত্তর কোরিয়ার চাইতে আমেরিকাই বেশি ক্ষতি হতে পারে।