ছবিতে ডায়ানা প্রিন্সেস অফ ওয়েলেস-এর জীবনের কিছু মুহূর্ত

Date:

Share post:

প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যুর বিশ বছর পূর্তিতে ক্যামেরার লেন্স-এ ধরে রাখা তাঁর জীবনের কিছু মুহূর্ত।ডায়ানা ফ্রান্সিস স্পেনসার জন্মেছিলেন ১৯৬১ সালের পয়লা জুলাই নরফোক জেলার স্যানড্রিংহামে। সেসময় তাঁর বাবামা ভাইকাউন্ট আর ভাইকাউন্টেস অলথ্রপের তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ কন্যা। ডায়ানা ফ্রান্সিস স্পেনসার জন্মেছিলেন ১৯৬১ সালের পয়লা জুলাই নরফোক জেলার স্যানড্রিংহামে। সেসময় তাঁর বাবামা ভাইকাউন্ট আর ভাইকাউন্টেস অলথ্রপের তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ কন্যা।স্কুল শেষ করার পর তিনি লন্ডনে বাচ্চাদের দেখাশোনার কাজ করতেন, মাঝে মাঝে রান্নার কাজ করতেন । পরে তিনি লন্ডনের অভিজাত নাইটসব্রিজ এলাকায় এক নার্সারিতে সহকারী হিসাবে যোগ দেন। গুজব ছড়াল প্রিন্স অফ চার্লসের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব অনেক দূর গড়িয়েছে। সংবাদমাধ্যম ও টেলিভিশন তার প্রতিটি পদক্ষেপ অনুসরণ করতে শুরু করল, তাঁকে অনবরত ঘিরে থাকত। নার্সারিতে কাজ চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে উঠল। নানা জল্পনা উড়িয়ে দিতে প্রাসাদের সব চেষ্টা বিফল হল ২৪শে ফেব্রুয়ারি ১৯৮১ তাদের বাগদান সরকারিভাবে ঘোষণা করা হল। তার বাগদানের আংটির মূল্য ছিল ৩০ হাজার পাউন্ড- মাঝে একটি নীলা, তার চারপাশ ঘিরে ১৪টি হীরা। ২৯শে জুলাই ১৯৮১ লন্ডনের সেন্ট পলস গির্জায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন লেডি ডায়ানা ও যুবরাজ চার্লস। ওই বিয়ের অন্যতম আলোচ্য ও আকর্ষণ ছিল তার জমকালো পোশাক। ডায়ানার বয়স তখন ২০র নিচে। বাবার হাত ধরে. মায়ের স্নেহময় দৃষ্টির মধ্যে বিয়ের প্রতিজ্ঞা পড়েছিলেন ডায়ানা। বিয়ের দিন তাকে এবার মাত্র নার্ভাস মনে হয়েছিল যখন নববিবাহিত স্বামীর পুরো নামের সবগুলো অংশ সঠিকভাবে মনে করতে তাঁকে হিমশিম খেতে হচ্ছিল।তাদের বর্ণাঢ্য বিবাহ অনুষ্ঠান টেলিভিশনে দেখেন বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষ। রাজপ্রাসাদ থেকে গির্জা পর্যন্ত রাস্তার দুধারে ভিড় জমান আরও ছয় লক্ষ মানুষ। চার্লস ও ডায়ানা তাদের মধুচন্দ্রিমা করেন মিশর পর্যন্ত ভূমধ্যসাগরে ১২দিনের সমুদ্র ভ্রমণে এবং তারপর বালমোরাল কাসেলে।ডায়ানা সবসময়েই চেয়েছিলেন বড় পরিবার। বিয়ের একবছর পর ১৯৮২র জুন মাসে তাঁর প্রথম সন্তান প্রিন্স উইলিয়াম জন্ম নেন। তিনি সিংহাসনের দ্বিতীয় উত্তরাধিকারী।রাজপরিবারের মধ্যে থেকেই তিনি চেয়েছিলেন তাঁর সন্তানরা স্বাভাবিকভাবে বড় হয়ে উঠবে। উইলিয়াম রাজপরিবারের প্রথম উত্তরাধিকারী যিনি ছোটবেলা নার্সারিতে যান। তাঁর দুই ছেলেই ব্যক্তিগত শিক্ষকের কাছে পাঠ নেননি। তারা অন্য বাচ্চাদের মতই স্কুলে যান। ১৫ই সেপ্টেম্বর ১১৯৮৪ ডায়ানা দ্বিতীয়বার মা হন। প্রিন্স হ্যারি জন্ম নেন।প্রিন্সেস ডায়ানা অল্পদিনের মধ্যেই রাজপরিবারের হয়ে দায়িত্বপালন শুরু করেন। তিনি নার্সারি, স্কুল, ও হাসপাতাল পরিদর্শনে যেতে শুরু করেন। মানুষের সঙ্গে মেশার একটা সহজাত প্রবণতা ও স্বত:স্ফূর্ততা তাঁকে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যায়।১৯৮৫ সালে তাঁর প্রথম আমেরিকায় সরকারি সফরে প্রিন্সেস হোয়াইট হাউসে জন ট্র্যাভোল্টার সঙ্গে নেচেছিলেন। বিয়ের আগে থেকেই ডায়ানার পোশাক ছিল মানুষের জন্য বিশাল এক আকর্ষণের বিষয়। প্রিন্সেস ডায়ানার স্বেচ্ছাসেবী বিভিন্ন সংগঠনের জন্য কাজ তাকে খুবই জনপ্রিয় করে তোলে। এইডস আক্রান্তদের বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার কাজে তাঁর অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। আক্রান্তদের হাত ধরে তিনি মানুষকে দেখাতে চেয়েছিলেন স্পর্শের মাধ্যমে এইডস ছড়ায় না।প্রিন্স চার্লস ও প্রিন্সেস ডায়ানা একসঙ্গে বহু বিদেশ সফর ও কাজ করেছেন। কিন্তু ১৯৮০ দশকের শেষ দিকে লোকে তাদের আলাদা জীবন সম্পর্কে জানতে পারেন।১৯৯২ সালে ভারতে এক সরকারি সফরে ডায়ানাকে দেখা যায় তাজমহলের সামনে একাকী। এই ছবি প্রথম মানুষকে বোঝায় যে তারা এক বাড়িতে থাকলেও তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে।এর পরও ডায়ানা তার দুই সন্তানের সঙ্গে অনেক আনন্দের সময় কাটান। প্রিন্স হ্যারি বলেছেন ”বাবা-মায়ের মধ্যে মা আমাদের সঙ্গে খুব দুষ্টুমি করতেন। তিনি আমাদের ভালবাসায় ভরিয়ে রাখতেন।২০শে নভেম্বর ১৯৯৫ সালে বিবিসির মার্টিন বশিরকে দেওয়া এক খোলামেলা সাক্ষাৎকারে তিনি চার্লসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যে ভেঙে গেছে তা বলেন। বলেন রাজপরিবারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের টানাপোড়েনের অকপট স্বীকারোক্তি। এরপরও তিনি তার দাতব্য সেবামূলক কাজ চালিয়ে যান। ১৯৯৬ সালে লাহোরে জেমাইমা খানের সঙ্গে প্রিন্সেস ডায়ানা। ১৯৯৭ সালের ৩১শে অগাস্ট প্যারিসের রিৎজ হোটেলে কোটিপতি ব্যবসায়ী মোহম্মদ আল ফায়াদের ছেলে ডোডি আল ফায়াদের সঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে বেরনর পর মোটরবাইকে তাদের পেছু নেওয়া আলোকচিত্রীদের কবল থেকে পালাতে গিয়ে সুড়ঙ্গের মধ্যে মর্মান্তিক গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান ডায়ানা আর ডোডি। আলোকচিত্রীরা প্রিন্সেসের নতুন বন্ধুর ছবি তোলার জন্য তাদের পিছু ধাওয়া করেছিল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...