ভারতের স্বঘোষিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিং-কে সোমবার (২৮ আগস্ট) আদালতে হাজির করা হবে না, বরং তার বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণার জন্য বিচারপতিরাই রোহটাকের জেলে যাবেন। শনিবার (২৬ আগস্ট) পাঞ্জাব ও হরিয়ানার হাইকোর্ট বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারপতি জগদীপ সিং ও তার দুই সহকারীকে আকাশপথে রোহটাক নিয়ে যেতে হরিয়ানা সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
শুক্রবার ১৫ বছরের পুরনো এক ধর্ষণ মামলায় রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারপতি জগদীপ। ২০০২ সালে নিজ আশ্রমে দুই নারী অনুসারীকে ধর্ষণ করার দায়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। রায় ঘোষণার পর একটি সরকারি হেলিকপ্টারে করে ধর্মগুরুকে রোহটাকে নিয়ে যাওয়া হয়। রোহটাক থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে সুনারিয়ার ডিস্ট্রিক্ট জেলের একটি বিশেষ সেলে এখন তাকে রাখা হয়েছে। সোমবার (২৮ আগস্ট) রাম রহিমের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করা হবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, জেল কর্তৃপক্ষকে সাজা ঘোষণার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এক নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, বিচারপতি ও দু পক্ষের আইনজীবীরা যাতে জেলের মধ্যেই আদালতের মতো সুযোগ-সুবিধা পান, তার ব্যবস্থা করতে হবে। বিচারপতি জগদীপ ও তার দুই সহকারীকে আকাশপথে জেলে নিয়ে যাওয়া এবং তাদের নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করার জন্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট এক সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, রায় ঘোষণার পর জগদীপকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য হরিয়ানা সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র সরকার।
এদিকে, সাজা ঘোষণার পর যাতে নতুন করে সহিংসতা না ছড়ায় তা নিশ্চিত করতে রোহটাকে কঠোর নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছে। যে সড়কগুলো সানোরিয়ার জেলের দিকে গেছে সেগুলোকে বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আর জেলটির চারপাশে অবস্থান নিয়েছে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) এবং হরিয়ানা পুলিশের সদস্যরা। ২৮ টি আধা সামরিক কোম্পানি শহরটিতে অবস্থান নেবে। জ্যেষ্ঠ এক পুলিশ সদস্যের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, ওই এলাকায় সেনাবাহিনীকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৫ আগস্ট) এক ধর্ষণ মামলায় রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করার পর হরিয়ানা ও আশেপাশের এলাকায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। হরিয়ানা ডিজিপি জানান, ধর্মগুরুর বিক্ষুব্ধ ভক্তরা তাণ্ডব চালায়। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। ওইদিনের সহিংসতায় ৩৬ ব্যক্তি নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ২৬৯ জন।