ভারতের মুম্বাইতে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর যে বাড়ী নিয়ে বিতর্ক

Date:

Share post:

প্রায় আড়াই একর জায়গায় ১৯৩০ সালে বাড়িটির নির্মান কাজ শুরু হয়

ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান ও ভারত নামক দুটি রাষ্ট্র হয়েছে এখন থেকে সত্তর বছর আগে। দেশ বিভাগের প্রতিক্রিয়ায় শুধু সাধারণ মানুষ নয়, পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহকেও রেখে যেতে হয়েছে তার প্রিয় বাড়িটি, যেটি তিনি যত্ন নিয়ে তৈরি করেছিলে তার প্রিয় শহর ভারতের বোম্বেতে, এখনকার মুম্বাইতে।

কালের পরিক্রমায় ভারত পাকিস্তান বিদ্বেষের জালে আবদ্ধ হয়েছে সেই বাড়িটিও। রীতিমত বিতর্ক হচ্ছে বাড়িটিকে ঘিরে।

সম্প্রতি বিবিসি একজন সংবাদদাতা গিয়েছিলেন সেই বাড়িতে, যা ভেঙ্গে ফেলার জন্য দাবি উঠছে ভারতীয়দের একটি অংশের দিক থেকে।

ভারতের একজন রাজনীতিক মঙ্গল প্রভাত লোধার মতে, বাড়িটি পাকিস্তানের গর্বের প্রতীক হতে পারে কিন্তু ভারতের জন্য এটা ষড়যন্ত্রের একটি প্রতীক।

১৯৪৭ সালে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ভারত ছাড়েন নতুন স্বাধীন রাষ্ট্র পাকিস্তানের জন্য, যার প্রতিষ্ঠাতা তিনি নিজেই।পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ

কিন্তু পাকিস্তানের যাওয়ার পথে তিনি একটি চমৎকার বাড়ি ফেলে যান তখনকার বোম্বেতে, যার এখনকার নাম মুম্বাই।

ভারত ভাগ ছিলো এ অঞ্চলের মানুষের জীবন বদলে দেয়া ঘটনা। এর ফল কিংবা প্রতিক্রিয়া এখনো বয়ে চলেছে এ উপমহাদেশের মানুষ।

সত্তর বছর আগের যে ঘটনার প্রভাব এখনো দূর করা যায়নি যে কোন স্তরের মানুষের জীবন থেকে।

লাখ লাখ মানুষ প্রিয়জন ছেড়ে পাড়ি দিয়েছিলেন সীমান্ত, ফেলে গিয়েছিলেন শ্রমে ঘামে আর ভালবাসায় তৈরি ঘরবাড়ি।

তাই যখনি মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ গেছেন পাকিস্তানে, তখন থেকে তিনি ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়েছেন ভারতীয়দের কাছে।রানির প্রাসাদের কাছে তরবারি ঘুরিয়ে ‘আল্লাহু আকবর’

পাকিস্তান বিভিন্ন সময়ে বাড়িটির মালিকানা দাবি করেছে কিন্তু ভারত ইতোমধ্যেই বাড়িটিকে ঘোষণা করেছে শত্রু সম্পত্তি হিসেবে। স্থানীয় রাজনীতিক মঙ্গল প্রভাত লোধা প্রচারণা চালাচ্ছেন বাড়িটি ভেঙ্গে ফেলার জন্য। যার বক্তব্য বাড়িটি ভেঙ্গে সেখানে একটি সংস্কৃতি কেন্দ্র হতে পারে

প্রায় আড়াই একর জায়গায় বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন জিন্নাহ। সাংবাদিক সিদ্ধার্থ ভাটিয়ার মতে জিন্নাহ নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে চেয়েছিলেন বোম্বেতেই।

“তিনি ছিলেন একজন নামকরা আইনজীবী। তিনি অনেক আলোচিত মামলাও জিতেছেন। আর সে কারণেই তিনি আসলে বোম্বেতে তার একটি ভিত্তি তৈরি করতে চেয়েছিলেন। সে লক্ষ্যেই ১৯৩০ সালে তিনি সেখানে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেন।”

এজন্য তিনি নিয়োগ করেছিলেন ওই সময়ের সেরা একজন আর্কিটেক্টকে। আসলে ১৯৪৭-৪৮ সালে কেউ ভাবতেই পারেননি যে মানুষের ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসবে। আর সে কারণেই তিনি এরপরেও বাড়িটির দেখভাল করেছিলেন।

মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ মারা গেছেন ১৯৪৮ সালে অর্থাৎ ভারত ভাগের মাধ্যমে পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার এক বছরের মধ্যেই। আর তখন থেকে খালিই রয়েছে তাঁর বাড়িটি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...