চর্মরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন সাতক্ষীরার ১২ বছরের মেয়ে মুক্তামনির রক্তনালীর টিউমার সরাতে অস্ত্রোপচার শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল পৌনে নয়টার দিকে অস্ত্রোপচার শুরু হয়। এতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা অংশ নিয়েছেন।
ঢামেকের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সকাল পৌনে নয়টার দিতে মুক্তামনির অস্ত্রোপচার শুরু হয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা অস্ত্রোপচার করছেন। ১৩ সদস্য বিশিষ্ট এই বোর্ডের প্রধান ঢামেকের বার্ন ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক আবুল কালাম।
এর আগে সকাল সাড়ে সাতটা থেকে অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি নিতে থাকেন চিকিৎসকরা।
স্বাভাবিকভাবে জন্ম নেয়ার দুই বছর পর মুক্তামনির ডান হাতে ছোট একটি টিউমার দেখা যায়, যা ধীরে ধীরে বড় হতে শুরু করে। গত দুই বছর ধরে তা ব্যাপক আকারে বাড়তে থাকে। গত ১২ জুলাই ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয় মুক্তামনিকে।
ঢামেকে ভর্তি হওয়ার পর দেখা যায়, মুক্তমনি খুবই দুর্বল, অপুষ্টি ও রক্তস্বল্পতায় আক্রান্ত। বিভিন্ন পরীক্ষা নীরিক্ষার পাশাপাশি তার রক্তপূরণে এবং ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকেরা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তামনির ব্যাপারে জেনে তার চিকিৎসার সব দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম মুক্তামনিকে দেখতে আসেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তার চিকিৎসার সব দায়িত্ব স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বলে জানান মন্ত্রী।
এরমধ্যে মুক্তামনির রক্তের প্লেটলেট বারবার কমে যাওয়ার কারণে বায়োপসি নেয়া প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হচ্ছিল। এই কথা জেনে প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার ব্যাপারে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
গত ২৭ জুলাই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সঙ্গে বোর্ড মিটিং শেষ হয়। পরবর্তী সময়ে ই-মেইলের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল জানায়, মুক্তামনির এই রোগটি ভালো হবার নয়। অপারেশনের মতো নয়, তারা সবরকমভাবেই রোগটির পরীক্ষা-নীরিক্ষার ব্যাপারে সাহায্য করতে পারবেন না।
এরপর সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের অভিমত প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকদের সাধ্যমত চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর গত ২ আগস্ট ১৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি মেডিকেল বোর্ডের মিটিংয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সবধরনের সতর্কতা অবলম্বন করেই তার চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত হয়।
টিউমারটি সরাতে অস্ত্রোপচার করার কথা জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। সে অনুযায়ী আজ অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে তার
মুক্তামনির রক্তনালীর টিউমার সরাতে অস্ত্রোপচার শুরু হয়েছে।
Date:
Share post: