ভারত ভাগের পর নিজের সব নোট পুড়িয়ে ফেলেছিলেন র‍্যাডক্লিফ

Date:

Share post:

বাংলা ও পাঞ্জাবকে বিভক্ত কছিলো র‍্যাডক্লিফ লাইন, যার ভিত্তিকে মানচিত্র পেয়েছে ভারত ও

সত্তর বছর আগে একজন ব্রিটিশ আইনজীবীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো ব্রিটিশ শাসিত ভারতকে ভাগ করে দুটি স্বাীন রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের সীমানা ঠিক র জন্য।

কাগজে কলমে ব্রিটিশ শাসিত ভারতকে ভাগ করতে মাত্র পাঁচ সপ্তাহ য় দেয়া হয়েছিলো তাকে।

কিন্তু যে সীমানা তিনি এঁকেছিলেন ভারত ও পাকিস্তানের, তা আজোও উপমহাদেশে বড় উত্তেজনার কারণ।

এই ব্রিটিশ আইনজীবীর নাম সিরিল র‍্যাডক্লিফ।

ব্রিটিশ ভারতে তখন জনসংখ্যা ায় ৪০

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটেন অনেকটা তড়িঘড়ি করেই ভারত ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

তবে একই সাথে তারা মুসলিমদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনের দাবি মেনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আর কখনোই ভারত ও পাকিস্তানে যাননি সিরিল র‍্যাডক্লিফ

১৯৪৭ সালের অগাস্টে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারত ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানের উদ্ভব হয়।

অন্যদিকে ব্রিটিশ শাসিত ভারতে ছিলো দুটি বড় প্রদেশ, যেখানে মুসলিম ও অমুসলিমরা ছিলো প্রায় সমান সংখ্যক।

এর একটি হলো পূর্ব দিকে বাংলা আর পশ্চিম দিকে পাঞ্জাব।

র‍্যাডক্লিফের দায়িত্ব ছিলো এই দুটি প্রদেশের মধ্যে বিভক্তি লাইন টেনে দেয়া, যা ছিলো অত্যন্ত জটিল কাজ।

এ কাজটি করতে তাকে নির্ভর করতে হয়েছে কিছু অনড় উপদেষ্টা, একটি পুরনো মানচিত্র আর জনসংখ্যার ভুল চিত্র সম্বলিত তথ্য।

শত বছর ধরে পাশাপাশি বসবাস করে আসছে এমন কোন সম্প্রদায়কে সোজা লাইন টেনে বিভক্ত করার সুযোগ ছিলোনা।

তখন এ নিয়ে উত্তেজনা ছিলো চরমে এবং র‍্যাডক্লিপ নিজেও জানতেন যে এটা কতটা ঝুঁকির কাজ ছিলো।ধর্মের ভিত্তিতেই পাঞ্জাব ও বাংলাকে ভাগ করেছিলেন র‍্যাডক্লিফ

তার সিদ্ধান্ত প্রকাশ করা হয়েছিলো ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতার কয়েকদিন পর।

এতে লাখ লাখ মাষ স্বাধীনতার আনন্দ উদযাপন শুরু করে যদিও তারা নিজেরাই জানতোনা যে তারা ঠিক কোন দেশের অধিবাসী হতে যাচ্ছেন।

অনেকেই আবার বিস্মিত হয়েছিলেন।

১ কোটি ২০ লাখ মানুষ র‍্যাডক্লিফের আঁকা বিভক্তি লাইন যেটি পরে র‍্যাডক্লিফ লাইন নামে পরিচিতি পায় সেই লাইন অতিক্রম করতে হয় নিজের বসবাসের জন্য।

শুরু হয় ধর্মীয় সহিংসতা, আর তাতে হারায় প্রায় ৫ থেকে ১০ লাখ মানুষ।

এটি ছিলো একটি ভয়াবহ ট্রাজেডি যা এখনো রক্তাক্ত করে চলেছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ককে। দেশভাগ নিয়ে আলোচনা করছেন জওহরলাল নেহেরু, লর্ড মাউন্টেব্যাটেন ও মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ

তবে সিরিল র‍্যাডক্লিফ দেশভাগ শেষ করে ভারত ছাড়ার আগেই পুড়িয়ে ফেলেন তার সব নোট।

পুরষ্কার স্বরুপ দেশে ফিরে তিনি ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে নাইট উপাধি পান।

তবে তার মনে কোন সন্দেহ ছিলোনা যে পাঞ্জাবী আর বাঙ্গালীরা তার সম্পর্কে কি চিন্তা করবে বা তাকে কিভাবে মূল্যায়ন করবে।

তিনি নিজেই বলেছেন, “অন্তত ৮ কোটি মানুষ আমাকে দেখবে ক্ষোভ নিয়ে”।

তবে স্যার সিরিল র‍্যাডক্লিফ আর কখনোই ভারত ও পাকিস্তানে আসেননি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

বিশাল বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল ইতালির রাজধানী, আহত ২৭

ইতালির রাজধানী রোমের পূর্বাঞ্চলীয় একটি পেট্রোল পাম্পে বিশাল বিস্ফোরণ ঘটেছে। শুক্রবার (৪ জুলাই) এই বিস্ফোরণে ১০ পুলিশ কর্মকর্তা...

ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করুন : জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ

ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক ও আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অধিকৃত ফিলিস্তিনি...

ইরানে হামলায় যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানিও জড়িত: রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত

যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানি ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলি আক্রমণকে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করেছিল। তাই তাদের...

ইউক্রেনে বড় ধরনের হামলা করল রাশিয়া

ইউক্রেনে বেশ বড় ধরনের ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ২০২২ সালে আগ্রাসন শুরুর পর এটাই ছিল রাশিয়ার সবচেয়ে বড়...