ভারতের ১৫তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির সাঁওতাল আদিবাসী দ্রৌপদী মুর্মু। প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি হিসেবে রাইসিনা হিলসের মসনদে বসলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) তৃতীয় রাউন্ড শেষে ভোটের ৫০ শতাংশ পেরিয়ে যান ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার দ্রৌপদী। ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী যশবন্ত সিনহাকে বিপুল ব্যবধানে হারিয়েছেন তিনি।
বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু পেয়েছেন ২ হাজার ১৬১টি ভোট এবং যশবন্ত সিনহা পেয়েছেন ১ হাজার ৫৮টি ভোট। দ্রৌপদী মুর্মুর প্রাপ্ত ভোটের মূল্য ৫ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৭ এবং যশবন্ত সিনহার প্রাপ্ত ভোটের মূল্য ২ লাখ ৬১ হাজার ৬২।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে জানা যায়, বিরোধী দলের ১৭ জন সংসদ সদস্য ক্রশ ভোট করেছেন। দ্রৌপদী মুর্মুকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিরোধী প্রার্থী যশবন্ত সিনহা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর অনুসারে, এই জয়ের মাধ্যমে ভারতের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দের উত্তরসূরী হচ্ছেন দ্রৌপদী। আগামী ২৫ জুলাই রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেবেন তিনি।
১৬তম রাষ্ট্রপতি ভোটে বিজয়ী প্রার্থী হচ্ছেন দেশটির ১৫তম রাষ্ট্রপতি। কারণ, ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ পর পর দুবার (১৯৫২ এবং ১৯৫৭) নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন।
এর আগে, সোমবার (১৮ জুলাই) অনুষ্ঠিত হয় ভারতের ১৬তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। এতে ভোট পড়েছিল ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ।
১৯৫৮ সালের ২০ জুন দ্রৌপদী মুর্মু ওড়িশা রাজ্যের ময়ুরভঞ্জ জেলার বাইদাপোসি গ্রামে সাঁওতাল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম বিরঞ্চি নারায়ণ টুডু।
শৈশবকাল থেকেই পড়াশোনায় মনোযোগী ছিলেন তিনি। ভুবনেশ্বরের রামা দেবী মহিলা কলেজে মানবিক বিভাগে পড়াশোনা করেন। তার দুইটি ছেলে ও একটি কন্যা ছিল। কিন্তু এক দুর্ঘটনায় স্বামী ও দুই ছেলেকে হারান তিনি।
নিজ রাজ্য থেকেই রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন তিনি। প্রথমে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও বিজু জনতা দলের জোট সরকারের সময় দ্রৌপদী মুর্ম বাণিজ্য ও পরিবহন দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন। ২০০০ সাল থেকে ২০০২ সালের ৬ আগস্ট পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন তিনি। আর ২০০০ এবং ২০০৪ সালে রায়রাংপুর বিধানসভার সদস্য ছিলেন।
ঝাড়খণ্ডের প্রথম নারী রাজ্যপাল ছিলেন তিনি। ওড়িশার ইতিহাসে প্রথম নারী এবং আদিবাসী নেতা হিসেবে রাজ্যপাল নিযুক্ত হয়েছিলেন।