চট্টগ্রামে সরকারি ব্যবস্থাপনায় থাকা অনাথ দেড় শতাধিক শিশু কিশোরকে এবার এক ভিন্ন ধরনের ঈদ উপহার দিলেন চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের নেতা সাজ্জাত হোসেন।
সাজ্জাত হোসেনের উদ্যোগে এই শিশুরা জীবনে এবার প্রথমবারের মত ঈদ উদযাপন করেছে চার দেয়ালের বাইরে একটু ভিন্ন আমেজে।
৫ তারকা হোটেল থেকে আনা কেক কেটে শুরু করা দিনব্যাপী ঈদ উৎসবের ধাপে ধাপে তাদের নিয়ে ছিল সাংষ্কৃতিক আয়োজন, এরপর স্বাধীনতা কমপ্লেক্সে শিশুদের জন্য থাকা বিভিন্ন রাইডে ঘুরে ঘুরে ঈদ উৎযাপন করে তারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই শিশুদের কাছে এমন ঈদ একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা, স্বাভাবিকভাবেই তারা খুবই আনন্দিয়। শিশুদের চোখ মুখেও সেটি ধরা দিচ্ছিল অদ্ভুত প্রাণবন্তভাবে।
মঙ্গলবার (৩ মে) ঈদের জামায়াতের পর এমন ঈদ উৎসবে মেতে উঠে নগরীর রৌফাবাদস্থ মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রতিষ্ঠান ছোটমনি নিবাস ও সরকারি শিশু পরিবারের (বালিকা) ১৫০ শিশু কিশোর। শুরুতে বাসযোগে তাদের নিয়ে আসা হয় চট্টগ্রাম স্বাধীনতা কমপ্লেক্সে।
সকাল ১০টায় শুরুতে কেক কেটে অনুষ্ঠানের সূচনা করে আয়োজকরা। পরে সাংষ্কৃতিক আয়োজনেও যোগ দেয় তারা। এরপর স্বাধীনতা কমপ্লেক্সের রাইডগুলোতে ঘুরে ঘুরে ঈদের আনন্দ নিচ্ছিল তারা।
এমন আয়োজনে অংশ নেয়া একজন আদনান (১৪)। রাইডে চড়তে চড়তে ঈদ কেমন যাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে হাসিমুখে আদনান জবাব দিল, ‘খুব ভাল, অনেক মজা।’
আদনানের পাশেই ছিল প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ আবুল কাশেম। আবুল কাশেম বলেন, ‘মা-বাবা নেই এমন অনাথ শিশুদের আদালতের নির্দেশে আমাদের প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় দেয়া হয়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এস শিশুদের থাকা খাওয়া ও পড়াশুনার বিষয়টি দেখাশুনা করি আমরা।
মাঝে মাঝে তাদের নিয়ে ঘুরতে গেলেও ঈদ উপলক্ষ্যে বাইরে যাওয়া হয়না। এবারই প্রথম ঈদ উৎযাপব করতে ছোটমনি নিবাসের বাইরে গেল তারা। স্বাভাবিকভাবেই এটা নিয়ে তারা খুব উচ্ছ্বসিত।’
আয়োজক সাজ্জাত হোসেন বলেন, ‘মা-বাবা না থাকা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এসব শিশুদের কথা কিছুদিন আগে জানতে পারি আমি। তখন আমার মনে প্রশ্ন জাগলো এদের ঈদ আসলে কেমন যায়। খোঁজ নিয়ে দেখলাম চার দেয়ালের মধ্যেই প্রতিদিনের মত করে তাদের ঈদের দিন চলে যায়। তবে বিশেষ খাবার দেয়া হয় এদিন তাদের। তখনই পরিকল্পনা করি এই শিশুদের এবার একটা ভিন্ন রকমের ঈদ উপহার দিই।
সেই ভাবনা থেকেই আমি প্রতিষ্ঠানটির প্রধানের সাথে যোগাযোগ করি। তিনি খুব আন্তরিকতার সাথে সাড়া দিয়েছেন। তাদের খুশি দেখে মন ভরে গেছে।’
দিনব্যাপী আয়োজনে কি কি ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে সাজ্জাত হোসেন বলেন, ‘শুরুতে সবাইকে নিয়ে কেক কেটে আমরা উৎসব শুরু করি। নগরীর রেডিসম ব্লু থেকে ১০ পাউন্ড ওজনের কেকটি আনা হয়েছে। এরপর সাংষ্কৃতিক আয়োজন ছিল। পরে স্বাধীনতা কমপ্লেক্সের রাইডগুলোতে খেলাধুলা করে তারা।
এর মধ্যে সবার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সামান্য খাবারের আয়োজনও ছিল। ইচ্ছে ছিল সারাদিন করার। কিন্তু দুপুরের পর কালবৈশাখী আরম্ভ হওয়ায় পরে দুপুর দেড়টার দিকে আমরা অনুষ্ঠান শেষ করি।’
আয়োজকের পক্ষ থেকে আরো উপস্থিত ছিলেন আমাদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রনেতা তৌহিদুল ইসলাম, ইকরাম চৌধুরী রনি, জাওইদ চৌধুরী, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক জাহেদ হোসেন টিপু, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের উপ সম্পাদক আবু জিহাদ সিদ্দিকী ও চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ আরেফীন রিয়াদ।