অলিম্পিকে সবচেয়ে বেশি স্বর্ণপদক পাওয়া আমেরিকান সাঁতারু মাইকেল ফেল্পস একটি হাঙ্গরের সাথে সাঁতারের ‘প্রতিযোগিতা’ করে পরাজিত হয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় খোলা সাগরের একটি অংশে এই ১০০ মিটার সাঁতারের ‘প্রতিযোগিতা’ হয়, এবং তা সম্প্রচার করে ডিসকভারি চ্যানেল।
হাঙ্গরটি ১০০ মিটার পার হয় ৩৬ দশমিক ১ সেকেন্ডে এবং মাইকেল ফেল্পস ৩৮ দশমিক ১ সেকেন্ডে।
তবে এখানে বলতেই হবে যে এই প্রতিযোগিতা কিন্তু ঠিক ‘বাস্তব’ ছিল না। ফেল্পস এবং হাঙ্গরটি পাশাপাশি সাঁতরায়নি। আসলে হাঙ্গর এবং ফেল্পস আলাদা আলাদা ভাবে ১০০ মিটার সাঁতার কাটেন , পরে একটি কম্পিউটার সিমুলেশনের মাধ্যেমে এটিকে এক সঙ্গে দেখানো হয়। সামাজিক মাধ্যমে এর প্রশংসা-নিন্দা দুটিই দেখা গেছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, মানুষ কি আসলেই চিতা, ঘোড়া, হাঙ্গর, বা ডলফিনের মতো বন্য প্রাণীর প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম? সাধারণভাবে উত্তর হচ্ছে: না।
মানুষের মধ্যে যারা শ্রেষ্ঠতম এ্যাথলেট – তাদের চাইতেও এসব প্রাণী অনেক বেশি দ্রুতগতিসম্পন্ন।
যেমন, মাইকেল ফেল্পসকে মানা হয় মানুষের এ্যাথলেটিক দক্ষতার এক শ্রেষ্ঠ নিদর্শন হিসেবে। কিন্তু তিনি খালি পায়ে অর্থাৎ ‘ফিন’ না লাগিয়ে সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৬ মাইল গতিতে সাঁতরাতে পারেন। কিন্তু একটি ‘গ্রেট হোয়াইট’ হাঙ্গর সর্বোচ্চ ২৫ মাইল পর্যন্ত গতিতে সাঁতরাতে পারে।
মাইকেল ফেল্পস সাতরেছিলেন খালি পায়ে নয়, হাঙ্গরের লেজের মো একটি ‘মনো-ফিন’। তাতেও তিনি দু সেকেন্ড পিছিয়ে ছিলেন। মনো-ফিন ছাড়া এটাকে হয়তো কোন ‘প্রতিযোগিতা’ বলা যেতো না।
মানুষ বনাম চিতা
মানুষ আর প্রাণীর প্রতিযোগিতা এর আগেও হয়েছে। অন্তত চারবার।
২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক রাগবির সবচেয়ে দ্রুতগতির খেলোয়াড় ব্রায়ান হাবানা , একটি চিতার সাথে দৌড় প্রতিযোগিতা করেছিলেন।
হাবানা ১০০ মিটার পার হতেন ১০ দশমিক ৪ সেকেন্ডে । উসেইন বোল্টের চাইতে ( যার দ্রুততম সময় ৯ দশমিক ৫৮ সেকেন্ডে) খুব খারাপ নয়।
চিতাটিকে একটি ভেড়ার পা দেখিয়ে দৌড় করানো হয়েছিল। দুবার প্রতিযোগিতা হয়, দুবারই চিতাটিই জেতে।
মানুষ বনাম ডলফিন
রোমে ২০১১ সালে এক সুইমিং পুলে দুটি ডলফিনের সাথে সাঁতারের পাল্লা দিয়েছিলেন সাবেক ইতালিয়ান ১০০ মিটার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফিলিপো ম্যাগনিনি।
প্রতিযোগিতায় ডলফিনই জিতেছিল।
জেসি ওয়েন্স আর ঘোড়ার দৌড়
বার্লিনে ১৯৩৬ সালের অলিম্পিকে ১০০ মিটার স্বর্ণজয়ী জেসি ওয়েন্স টাকা কামানোর জন্য বেশ কয়েকবার রেসের ঘোড়ার সাথে দৌড় প্রতিযোগিতা করেছিলেন।
তিনি নানা কোৗশল করতেন। দৌড় শুরুর জন্য যে পিস্তলের গুলি ছোড়া হতো সেটা থাকতো ঘোড়ার খুব কাছে – যাতে ঘোড়াটি হতবুদ্ধি হয়ে যায়। ফলে মাঝে মাঝে জেসি ওয়েন্স রেসে জিততেন, কিন্তু সব সময় নয়।
বাস্কেটবল খেলোয়াড় বনাম উটপাখী
আমেরিকান ফুটবল তারকা ডেনিস নর্থকাট ২০০৯ সালে দৌড় প্রতিযোগিতা করেছিলেন একটি উটপাখীর সাথে।
প্রথম রেসে উটপাখীটি ঠিকমত দৌড়ায় নি। তাই নর্থকাট জিতলেন।
কিন্তু দ্বিতীয়টিতে উটপাখীটি অতি সহজেই তাকে হারিয়ে দেয়।
Source from: http://www.bbc.com/bengali/news-40705076