আনোয়ারার গ্রামগুলোতে মাটি কাটার মহােৎসব

Date:

Share post:

শুকনো মৌসুম এলেই রাতের আঁধারে উধাও হয় কৃষি জমি, এমনি অভিযোগ উঠেছে আনোয়ারা উপজেলার ৩ নাম্বার রায়পুর ইউনিয়নের সরেঙ্গা,বারশত ইউনিয়নের দুধকুমড়া, বোয়ালীয়া গ্রামসহ বেশ কিছু গ্রামে। সেখানে রাত ১২টা পার হলেই যেন শুরু হয় মাটি কাটার মহাৎসব। এর ফলে একদিকে কৃষি জমির অপূরণীয় ক্ষতি সাধন হচ্ছে ,অন্যদিকে এসব এলাকার চলাচলের একমাত্র সড়ক আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান চৌধুরী সড়ক,শাহ মোহছেন আউলিয়া সড়ক, বখতিয়ার সড়ক ও সাপ-মারা খালের উপর ব্রীজ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।

অবৈধভাবে এসব মাটি উত্তোলন করে স্থানীয় ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতি বছরই এই শুকনো মৌসুমে ইটভাটায় বলির শিকার হচ্ছে একরের পর একর আবাদি কৃষি জমি। মোহাম্মদ রহমান(বাবাটি রহমান নামে পরিচিত),জাফর,মাষ্টার শাহ আলম ও মোহাম্মদ আইয়ুব সহ অনেকেই আনোয়ারায় এ অবৈধ কাজকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন বলে দাবী করছেন স্থানীয় জনগণ।

মাটি উত্তোলনকারী মোহাম্মদ রহমান(বাবাটি রহমান) সময় নিউজকে বলেন,ইউএনও ও ওসি’র অনুমতি নিয়ে এসব মাটি সংগ্রহ করছি।

অনুমতির বিষয়টি অস্বীকার করে আনোয়ারা উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জুবায়ের বলেন,অবৈধভাবে মাটি কাটার জন্য নির্দিষ্ট কোন সিন্ডিকেটকে আমরা অনুমতি দেয়নি বরং আমরা অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করছি। যতদিন পর্যন্ত অবৈধ মাটি উত্তোলন বন্ধ না হয় এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের (জেলা) উপপরিচালক মো. জমির উদ্দিন সময় নিউজকে বলেন, যারা অবৈধভাবে মাটি কেটে ফসলি জমি নষ্ট করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১২–এর ৬ ধারায়) অনুযায়ী, প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট টিলা ও পাহাড় নিধন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অন্যদিকে ১৯৮৯ সালের ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন (সংশোধিত ২০০১) অনুযায়ী, কৃষিজমির টপ সয়েল বা উপরিভাগের মাটি কেটে শ্রেণি পরিবর্তন করাও সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ রয়েছে। দুই আইনে শাস্তির বিধান একই রকম। এসব কাজে জড়িত ব্যক্তিদের দুই লাখ টাকার জরিমানা ও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। একই কাজ দ্বিতীয়বার করলে দায়ী ব্যক্তির ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও ১০ বছরের কারাদণ্ড হবে। এ ক্ষেত্রে এ কাজের সঙ্গে জড়িত জমি ও ইটভাটার মালিক উভয়ের জন্যই সমান শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।

কিন্ত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গ্রামগুলোতে প্রতিনিয়ত মাটি কাটা হচ্ছে। গ্রামবাসীদের দাবী, এসব মাটিখেকোরা অত্যন্ত প্রভাবশালী। তাই প্রশাসন জেনেও নিরব ভূমিকা পালন করছে। মাঝে মাঝে নামমাত্র অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করলেও মাটি কাটার মহাৎসব চলছেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...