লাল শাকের স্বাস্থ্য গুণ “পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান”

    0
    95

    লালশাক খান না এমন কোনও মানুষ খুঁজে পাওয়া প্রায় দুষ্কর। গরমভাতে লালশাক, ব্যাপারটা দুপুরের খাবারকে যেন সঠিক শুরুওয়াত দেয়। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, এই লাল শাক, শুধুই যে স্বাদে দারুণ তা নয়। বরং এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর স্বাস্থ্য গুণও!
    ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ শাকের মধ্যে লালশাক অন্যতম।

    লালশাকে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ অন্য শাকের তুলনায় অনেক বেশি। ১০০ গ্রাম লাল শাকে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ রয়েছে ৩৭৪ মিলি গ্রাম, যেখানে পুঁই শাকে ১৬৪ মিলি গ্রাম, মূলা শাকে ২৭.৯০ মিলি গ্রাম, পালং শাকে ৭৯ মিলি গ্রাম, ডাঁটা শাকে ৮০ মিলি গ্রাম, বেগুনে ২৬ মিলি গ্রাম, বাঁধা কপিতে ৩০.৫ মিলি গ্রাম। ক্যালসিয়াম বাদে লাল শাকে অন্য যে সমস্ত পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা হলো- শর্করা ৪.৯৬ মিলি গ্রাম, প্রোটিন ৫.৩৪ মিলি গ্রাম, স্নেহ ০.১৪
    মিলি গ্রাম, ভিটামিন বি১ ০.১০ মিলি গ্রাম, ভিটামিন বি২ ০.১৩ মিলি
    গ্রাম, ভিটামিন সি ৪২.৯০ মিলি গ্রাম, ক্যারোটিন ১১.৯৪ মিলি গ্রাম,
    অন্যান্য খনিজ ১.০৬ মিলি গ্রাম, খাদ্য শক্তি ৪৩ কিলোক্যালরি।
    ক্যালসিয়াম দেহের জন্য অত্যন্ত দরকারি উপাদান বিশেষ করে দাঁত এবং হাঁড় গঠনে। গর্ভবতী এবং প্রসূতি মাতাদের দৈনিক ক্যালসিয়ামের চাহিদা অনেক বেশি প্রায় ১৫০০-২০০০ মিলি গ্রাম। এ সময় ক্যালসিয়ামের অভাব হলে মা ও শিশুর নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়।

    www.traveltrolleybd.com
    www.traveltrolleybd.com

    বাড়ন্ত শিশুর ক্যালসিয়ামের অভাব হলে দাঁত ও হাঁড়ের গঠন ঠিকমতো হয় না ফলে শিশুর দৈহিক গঠন দুর্বল হয় এবং হাঁটাও বিলম্ব হয়। ছোটবেলা থেকেই শিশুদের লাল শাক খাওয়ার অভ্যাস করা দরকার। ক্যালসিয়ামের অভাবে শিশুদের রিকেটস এবং বয়স্কদের অস্টিও পোরেসিস রোগ হয়। সুতরাং ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণে অন্যান্য ক্যালসিয়ামযুক্ত খাদ্যের পাশাপাশি সস্তা এবং সহজলভ্য লাল শাক খাওয়া উচিত।

     লাল শাক ভিটামিন ‘এ’-তে ভরপুর। লাল শাক নিয়মিত খেলে
    দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে এবং অন্ধত্ব ও রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করা
    যায়।
     শরীরে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম জমে গিয়ে যেসব অসুখ হয় তা
    প্রতিরোধ করে লাল শাক ।
     লাল শাকে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
     রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
     লাল শাকের বিটা-ক্যারোটিন হার্টস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস
    করে।
     এটি মস্তিষ্ক ও হৃৎপিণ্ডকে শক্তিশালী করে এবং দন্ত ও অস্থি গঠনে
    অবদান রাখে। দাঁতের মাড়ি ফোলা প্রতিরোধ করে।
     শিশুদের অপুষ্টি দূর করে।
     ক্যালরির পরিমাণ কম থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও লাল
    শাক যথেষ্ট উপকারি। এ ছাড়াও এটি শরীরের ওজন হ্রাস করে।
     আঁশ জাতীয় অংশ খাবার পরিপাকে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য
    দূর করে।
     ভিটামিন ‘সি’-এর অভাবজনিত স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে।

    লেখা-পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here