গতকাল সিপিএলে মাহমুদউল্লাহ ৪ ওভারে ২০ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন। দুটি উইকেট এসেছে তাঁর তিন বলের মধ্যে। তিন আর চারে নামা দুই ব্যাটসম্যানকে ফেরানো মানে তো মেরুদণ্ডে আঘাত। সেন্ট লুসিয়া আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। অলআউট হয়েছে মাত্র ৬৯ রানে
সিপিএল খেলার জন্য দেশের বাইরেই ঈদ উদ্যাপন করতে হচ্ছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। কিন্তু ঈদের আনন্দকে তো আর হাতছাড়া করা যায় না। ঈদের আনন্দকে খেলার মাঠেই ফিরিয়ে আনলেন যেন। মাহমুদউল্লাহ ও তাঁর সতীর্থদের অসাধারণ বোলিংয়ে ৭ উইকেটের বিশাল জয় পেয়েছে সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস প্যাট্রিয়টস।
আগের ম্যাচে সিপিএলের রেকর্ড রান করে ১৪ ম্যাচ পর জয়ের দেখা পেয়েছিল সেন্ট লুসিয়া। অধিনায়ক কাইরন পোলার্ডের সেঞ্চুরিতে ২২৬ রানে ঠেকেছিল তাদের ইনিংস। কিন্তু সেন্ট লুসিয়া এক ম্যাচ পরেই আবার নিজেদের চেনা বৃত্তে। আবার সেই পুরোনো চেহারায়। তাতে সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস প্যাট্রিয়টসের বোলারদের ভূমিকাই বেশি।
পুরো দলের মাঝে মাত্র দুজনকে দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে দিয়েছেন সেন্ট কিটসের বোলাররা। ১২.২ ওভারে মোট ৬৯ রানের মাঝে মাত্র দুজন দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছেছেন। ডেভিড ওয়ার্নার (১৪) আর আফগান ব্যাটসম্যান কায়েস আহমেদ (২৪)। বাকি সব ব্যাটসম্যানের রানগুলো পাশাপাশি বসালে টেলিফোন নম্বর হয়ে যায়। ৮, ৪, ২, ৪, ০, ০, ২, ১, ৬।
২.৩ ওভার বল করে মাত্র ১৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে শেলডন কোটরেল মূল ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছেন। তাঁর সহযোগী ছিলেন লামিচানে ও মাহমুদউল্লাহ। লামিচানে দুই ওভারে ১৩ রানে ২ উইকেট ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৪ ওভারে ২০ রানে ২ উইকেট। কোটরেলের মতো ৩ উইকেট নেননি, আবার লামিচানের চেয়ে বেশি রান দিয়েছেন। তবু মাহমুদউল্লাহর বোলিংয়ের গুরুত্বটাই অনেকে বড় করে দেখবেন।
এবারের সিপিএলে মাত্র এক ওভার বোলিং করেছিলেন। কাল অধিনায়ক ক্রিস গেইল বোলিং ওপেন করতে কোটরেলের সঙ্গী হিসেবে মাহমুদউল্লাহকেই বেছে নিলেন। আর মাহমুদউল্লাহও দারুণভাবে আস্থার প্রতিদান দিলেন। নিজের প্রথম ওভারের পঞ্চম আর দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে ফেরালেন কর্নওয়াল আর লেন্ডল সিমন্সকে। তিন বলের মধ্যে ২ উইকেট!
তিন আর চারে নামা দুই ব্যাটসম্যানকে ফেরানো মানে তো মেরুদণ্ডে আঘাত। সেন্ট লুসিয়া আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। অলআউট হয়েছে মাত্র ৬৯ রানে। সর্বোচ্চ ১৫টি ডট বল দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।
৭০ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে হেসেখেলেই জিতে যাওয়ার কথা। কিন্তু এই রান করতেও ৩ উইকেটে পতন হয়। গেইলের বদলে ওপেন করতে নামা ডেভন টমাস শেষ পর্যন্ত মাঠে থেকে ২১ বলে ৩৮ রান করে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। মাহমুদউল্লাহ ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাননি। তবে যে বোলিংটা করেছেন, তাঁকে আরও বেশি করে ব্যবহার করতে উৎসাহী হবেন গেইল।
এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের ৪ নম্বরে উঠে এল সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস প্যাট্রিয়টস। ৪ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট তাদের।
দেশ আর পরিবারকে রেখে অনেক দূরে আছেন। ফেসবুক পেজে এক ভিডিওবার্তায় সবাইকে যে মিস করছেন, সেটিও বলেছেন। তবে মাহমুদউল্লাহ তাঁর ভক্তদের ঈদের উপহারটা দিতেও ভোলেননি।