
বিশ্বকাপ ফুটবল এখন পুরোদমে চলছে, তাও আবার দু’একটি অপ্রত্যাশিত ফলাফল দিয়ে শুরু হয়েছে ২০১৮ সালের টুর্নামেন্ট। আশা করছি বিশ্বকাপ নিয়ে বেশ কিছু চিঠি পাবে। শুরু করছি তেমন একটি চিঠি দিয়ে, লিখেছেন রফিক সরকার:
”বিশ্ব কাপ ফুটবল আসলেই বাংলাদেশের ঘরে ঘরে ভিন দেশের পতাকা উড়ানো হয়। কোথাও আবার ছোট একটি বাংলাদেশের পতাকা অন্য বড় পতাকার উপরে লাগানো থাকে। আমার প্রশ্ন হল,অন্য দেশের পতাকা উড়ানোর কোন নীতিমালা আছে কিনা,থাকলে সেটা কি?”
আমার জানা মতে, বাংলাদেশে শুধু নিজস্ব জাতীয় পতাকা উড়ানোর ব্যাপারে কিছু নিয়মাবলী আছে। যেমন, কে তাদের বাড়িতে এবং গাড়িতে প্রতিদিন উড়াতে পারবে, সাধারণ জনগণ বছরের কোন্ কোন্ দিন উড়াতে পারবে ইত্যাদি। কিন্তু বিদেশী পতাকা উড়ানো বা না উড়ানো নিয়ে কোন সরকারি নীতিমালার কথা আমার জানা নেই। আমার মতে, না থাকাই ভাল, তাহলে জনগণ তাদের বিনোদনের জন্য যখন খুশি যার পতাকা উড়াতে পারবে। ক্ষতি কী?
বিশ্বায়নের যুগে এই সবই তো বিশ্ব সমাজের অংশ হিসেবে একটু মজা করার জন্যই করা হয়। বিশ্বকাপের সময় বাংলাদেশের ঘরে ঘরে অন্য দেশের পতাকা উড়ছে ঠিকই, কিন্তু কেউ ঐসব দেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করছে না। শুধু বিশ্বকাপ উৎসবের অংশ হয়ে আনন্দ করতে চাইছে।
আমাদের পরিবেশনা নিয়ে ছোট একটি চিঠি লিখেছেন নীলফামারীর জলঢাকা থেকে মনির হোসেন :
”বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে বিবিসি বাংলার আয়োজন বেশ ভালো লাগছে। আরও ভালো লেগেছে ব্রাজিলের কিংবদন্তি খেলোয়াড় পেলে তার অভিষেক ম্যাচে যেভাবে আহত হয়েছিলেন, সেই গল্পটা। ধন্যবাদ বিবিসি বাংলাকে বেশ পুরনো একটি বিষয় তুলে ধরার জন্য।”
আপনাকেও ধন্যবাদ মিঃ হোসেন। আশা করি বিশ্বকাপ নিয়ে আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত অন্যান্য প্রতিবেদন এবং ভিডিওগুলো আপনি উপভোগ করেছেন। এই সুযোগে আপনাদের সাথে একটি ভিডিও শেয়ার করি। খেলার সময় বা শেষে ফ্যানদের আবেগ হয় নানা রকমের:

আপনার ডিভাইস মিডিয়া প্লেব্যাক সমর্থন করে না
বিশ্বকাপে আমাদের অনুপস্থিতি নিয়ে লিখেছেন খুলনার দাকোপ থেকে মুকুল সরদার:
”বিশ্ব ফুটবলের মহোৎসবকে ঘিরে স্বাগতিক দেশে মাঠের ভিতরে ও বাইরে যে উন্মাদনা তৈরি হয় তার খবর বিবিসি বাংলা নিজস্ব সংবাদ দাতার মাধ্যমেই শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে দিত। কিন্তু এবছর ব্যতিক্রম মনে হচ্ছে। বিশ্ব ফুটবলের সর্ব বৃহৎ এ আয়োজন বিবিসি বাংলা নিজস্ব সংবাদ কর্মী দিয়ে কাভার না করে অন্যদের সহায়তা কেন নিচ্ছে ঠিক বুঝলাম না?”
রাশিয়াতে এই মুহূর্তে যেহেতু আমাদের কোন প্রতিনিধি নেই, তাই সেখানে বাংলাভাষী সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে রাশিয়ার পরিবেশের একটি চিত্র শ্রোতাদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। তাছাড়া, প্রতিদিনই আমরা লন্ডনে এবং ঢাকায় ফুটবল বিশ্লেষকদের কাছ থেকে দিনের ম্যাচ সম্পর্কে জেনে নিচ্ছি।
তবে আপনার একটি বক্তব্য কিন্তু মোটেই সঠিক নয় মিঃ সরদার। আপনি লিখেছেন: ”বিশ্ব ফুটবলের মহোৎসবকে ঘিরে স্বাগতিক দেশে মাঠের ভিতরে ও বাইরে যে উন্মাদনা তৈরি হয় তার খবর বিবিসি বাংলা নিজস্ব সংবাদ দাতার মাধ্যমেই শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে দিত। কিন্তু এবছর ব্যতিক্রম মনে হচ্ছে।”
আপনি কি আসলেই অন্যান্য বিশ্বকাপ থেকে বিবিসি বাংলার সাংবাদিকদের প্রতিবেদন, সাক্ষাৎকার ইত্যাদি শুনতে পেয়েছেন? আমার তো মনে হয় না।
শুধুমাত্র ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপে আমরা নিজস্ব প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলাম। তখন শুভজ্যোতি ঘোষ শুধু ফুটবল নয়, দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী শাসনের অবসান হবার পর সেখানে কী ধরনের সামাজিক পরিবর্তন এসেছে তা নিয়েও প্রতিবেদন করেছিলেন। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার পর বা আগে আর কোন বিশ্বকাপে বিবিসি বাংলার কেউ যায়নি – ২০১৪ সালে ব্রাজিল, ২০০৬ সালে জার্মানি, ২০০২ সালে কোরিয়া-জাপান, ১৯৯৮ সালে ফ্রান্স, ১৯৯৪ সালে আমেরিকা, ১৯৯০ সালে ইতালি … ইত্যাদি ইত্যাদি।
আর এ’বছর কেউ যাবে না, সেটা নিশ্চিত করে বলা যাবেনা। বিশ্ব কাপ এক মাস ব্যাপী একটি আয়োজন, সবে মাত্র এক-দেড় সপ্তাহ পার হয়েছে, আরো অনেক সময় আছে, আরো অনেক গল্প থাকবে – বিশ্বকাপ নিয়ে, রাশিয়া নিয়ে। কাজেই আমাদের ওয়েবসাইট, ফেসবুক এবং ইউটিউবে চোখ রাখুন। টেলিভিশন এবং রেডিওতেও কিছু অবশ্যই থাকবে।
তবে রাশিয়ায় আমাদের অনুপস্থিতি সত্ত্বেও বিশ্বকাপ নিয়ে আমাদের পরিবেশনা অনেক শ্রোতা এবং পাঠকই উপভোগ করছেন, যেমন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থেকে মোহাম্মদ তারিফ হাসান:
”সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে চলছে বিবিসি বাংলা। ঠিক তেমনি রাশিয়ায়অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে বিবিসি বাংলার রেডিওতে খেলার পর্যালোচনা,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং অনলাইনে মজার মজার চমকপ্রদ সব তথ্য বহুল প্রতিবেদন আমাদের অনেক উপকৃত করছে। আশা করি বিবিসি বাংলার এ ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।”
অবশ্যই থাকবে মিঃ হাসান। বিশ্বকাপ যত জমে উঠবে ততই আমাদের ডিজিটাল, টেলিভিশন এবং রেডিও পরিবেশনায় খেলা, খেলোয়াড় এবং রাশিয়া নিয়ে প্রতিবেদন দেখতে পাবেন।এই ভিডিওটি গত সপ্তাহে শেয়ার করেছিলাম, কিন্তু আরেকবার করতে দোষ নেই। বাংলাদেশে শুধু ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনা না, অন্য দেশের সাপোর্টারও আছে । তাদের নিয়ে রিপোর্ট করেছেন অর্চি অতন্দ্রিলা:

আপনার ডিভাইস মিডিয়া প্লেব্যাক সমর্থন করে না
(উপরের ভিডিও ইউ টিউবে দেখতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন )
এবারের বিশ্বকাপের শুরুটা মুসলমানদের সব চেয়ে বড় উৎসব ঈদ-উল ফিতরের সাথে মিশে গেছে। কিন্তু ঈদের আগে পরে কয়েকদিন অন্য ঈদের মত কিছু বিশেষ প্রতিবেদন এবং কিছু পুরনো সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানমালা নিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছেন রাজশাহীর রানীবাজার থেকে হাসান মীর:
”ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে ১৪ই জুন থেকে ১৯শে জুন পর্যন্ত আপনাদের বিশেষ অনুষ্ঠানমালা শুনলাম। এই ক’ দিন প্রত্যূষার অর্ধেক অনুষ্ঠান, যেমন ম্যাগাজিন ও সাক্ষাৎকার সেদিনের প্রবাহে পুনঃপ্রচার করা হয়েছে। প্রতিদিন দুবার প্রচার করা হলেও ম্যাগাজিনের বিষয়বস্তুতে বৈচিত্র্য ছিল। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে যে বিষয়টির অভাব অনুভব করেছি, তাহলো সংবাদপত্র পর্যালোচনা। দৈনিক পত্রিকার অফিস বন্ধ থাকলেও অন-লাইন পত্রিকা, নিউজ পোর্টাল, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ইত্যাদি থেকে গুরুত্বপূর্ণ হেডলাইনগুলি শোনাতে পারলে ভালো হতো। তো যা হয়নি তা নিয়ে আর ভেবে কী হবে ।
”শেষে একটি প্রস্তাব, যদিও তা নাকচ হওয়ার শতভাগ ‘আশঙ্কা’। প্রস্তাবটি হলো -সকালের অর্ধেক অনুষ্ঠান সন্ধ্যায় পুনঃপ্রচার করেও তো বেশ চলে যায়, তাহলে যে কোনো একটি অনুষ্ঠানে প্রীতিভাজনেষুর জন্যে সপ্তাহের যে কোনো দিন কি দশ মিনিট সময় বরাদ্দ করা যায় না?”
আপনার পর্যালোচনার জন্য ধন্যবাদ হাসান মীর। আমরা প্রতি ঈদের সময় পাঁচ-ছয়দিন কিছু বিশেষ প্রতিবেদন এবং আর্কাইভ থেকে পুরনো দিনের সাক্ষাৎকার প্রচার করে থাকি, যা সকালে প্রচারিত হয়ে সন্ধ্যায় পুন:প্রচার করা হয়। এবারে পার্থক্য ছিল মূলত দুটি । দিনে এখন দুটি অনুষ্ঠান, কাজেই বিশেষ প্রতিবেদন এবং আর্কাইভ থেকে সাক্ষাৎকার দিনে চারটির বদলে দুটি করে প্রচারিত হয়েছে।
আর সাক্ষাৎকারগুলো পুরনো আর্কাইভ থেকে না নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে প্রচারিত ‘এ’সপ্তাহের সাক্ষাৎকার’ থেকে নেয়া হয়েছে। তারও একটি বিশেষ কারণ ছিল। আমরা চেয়েছিলাম ছয় দিন বিভিন্ন পেশার ছ’জন নারীর সাক্ষাৎকার পুনঃপ্রচার করতে।
ঈদের সময়ের পুনঃপ্রচারের সাথে সাধারণ সময়ে প্রীতিভাজনেষুর সময়টা মেলানো আমার মতে যুক্তিসঙ্গত না। ঈদের সময় আমরা অনেক কিছু পুনঃপ্রচার করে থাকি। এই সময়ে সাধারণত বাংলাদেশে তেমন কোন খবরই থাকে না। সাধারণ সময়ে প্রত্যূষার অর্ধেক পুনঃপ্রচার করা হয় না। প্রবাহ মূলত দিনের খবর দিয়েই সাজানো হয়, হয়তো প্রত্যূষা থেকে একটি প্রতিবেদন পুনঃপ্রচার করা হয়। আমি যেদিক থেকেই বিষয়টি দেখি, প্রবাহ বা প্রত্যূষায় পাঁচ মিনিটের প্রীতিভাজনেষু যোগ করতে গেলে অন্য কিছু বাদ দিতেই হবে। এর কোন বিকল্প নেই।
ঈদের ছুটি থাকুক আর না থাকুক, পুনঃপ্রচার নিয়ে মোটেই সন্তুষ্ট নন মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, যিনি ভোলার লালমোহন থেকে লিখেছেন:
”চলতি সপ্তাহে মোট চারটি সাক্ষাৎকার ইতোমধ্যে শুনেছি, আরও শুনতে হবে কি না, জানি না। তাও আবার পুনঃপ্রচার। ঢাকায় বেশ কজন সাংবাদিক কাজ করছেন, তাছাড়া ইদানীং নতুন কণ্ঠও শুনছি। অন্যান্য গণ মাধ্যমে শত সংবাদ থাকলেও বিবিসি বাংলার কাছে আমরা নতুন কিছু শুনতে চাই এবং এজন্য কান পেতে থাকি। আপনাদের ওয়েবসাইটে অনেক প্রতিবেদন আপলোড করা হয় কিন্তু সেগুলোর সব রেডিও অনুষ্ঠানে প্রচার করা হয় না। প্রয়োজনে সেগুলো প্রচার করুণ।
”পুনঃপ্রচারের মতো বিরক্তিকর আমার কাছে আর কিছু নেই। আমার মতো অন্যান্য শ্রোতারাও নিশ্চয়ই বিরক্তি বোধ করছে। হয়তো বলবেন সবাই ঈদের ছুটিতে। তবে সেটা পূর্বেই পরিকল্পনায় রাখতে হবে। অনুগ্রহ করে পুনঃপ্রচার বন্ধ করুণ।”
পুনঃপ্রচার শুধু ঈদের ছুটির কারণেই হয় না মিঃ রহমান। সাধারণ সময়ও দু’একটি প্রতিবেদন পুনঃপ্রচার করতে হয় কারণ আমরা কখনোই ধরে নিতে পারি না, যে আমাদের সকল শ্রোতা দুটো অধিবেশনই শুনছেন। কিন্তু আপনি যে মাত্রার পুনঃপ্রচার নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করছেন সেটা শুধুমাত্র ঈদের ছুটির জন্য করা হয় এবং প্রতি ঈদেই সেটা করা হয়। একদিকে তখন আমাদের লোকবল খুব কম থাকে, অন্য দিকে আমাদের শ্রোতা সংখ্যাও উৎসবের সময় অনেক কমে যায়। তাছাড়া, এই সময়ে বাংলাদেশে ঘটনাও খুব কম থাকে।
ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন রেডিওতে দেয়া সম্ভব হয়না, কারণ সেগুলো শুধু ওয়েবসাইটের জন্যই তৈরি করা হয়েছিল। তবে আমি স্বীকার করো, কিছু কিছু ডিজিটাল প্রতিবেদন, যেমন শাহনাওয়াজ রকির তৈরি এই ভিডিওর একটি রেডিও ভার্সন বানিয়ে প্রচার করা যেত:

আপনার ডিভাইস মিডিয়া প্লেব্যাক সমর্থন করে না
((উপরের ভিডিও ইউ টিউবে দেখতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন)
এবারে ভিন্ন প্রসঙ্গে যাই। বিবিসি বাংলার ব্র্যান্ডিং নিয়ে প্রশ্ন করেছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি থেকে ফরিদুল হক:
”হঠাৎ করে বিবিসি বাংলার অনলাইন বা ফেসবুকের উপর জোর দেওয়া বা প্রভাতি বা পরিক্রমা বন্ধ করাটা, পরিচালকের কাছে শুনলাম, যে এসব আধুনিকতার জন্য। তবে যাই হোক, সবকিছু বুঝলেও রাতারাতি বিবিসি বাংলা কিভাবে BBC NEWS বাংলা হয়ে গেল তা বুঝতে পারলাম না। হঠাৎ করে বিবিসির নামের সংযোজন বা বিয়োজন আমাকে কিছুটা চিন্তিত করেছে। এটাও কি আধুনিকতার আরেক ধাপ না কি পরিবর্তন আনার প্রয়াস?‘‘
কিছুটা আধুনিকতা তো বটেই মিঃ হক, তবে বিষয়টি মূলত: পরিচিতি বা ব্র্যান্ডিং-এর সাথে জড়িত। বিষয়টা একটু খুলে ব্যাখ্যা করি।
বিবিসির প্রশাসনিক কাঠামো কয়েকটি ডিভিশনে ভাগ করা আছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বিবিসি নিউজ। বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস বিবিসি নিউজেরই অংশ। সারা বিশ্বে বিবিসির সকল সাংবাদিক, ব্যুরো ইত্যাদি বিবিসি নিউজের অংশ। বিগত কয়েক দশকে, বিবিসি নিউজের অন্তর্ভুক্ত ছোট-বড় সকল বিভাগ নিজস্ব ব্র্যান্ড সৃষ্টির মাধ্যমে নিজস্ব পরিচিতি গড়ে তুলেছে। কিন্তু এর ফলে বিবিসি নিউজের পরিচিতি নিয়ে বেশ বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
বেশ কয়েক মাস আগে বিবিসির উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, বহু ব্র্যান্ড বাদ দিয়ে বিবিসি নিউজের ব্র্যান্ডটাকেই পরিচিত করে তুলতে হবে। সেজন্য এই ডিভিশনের অন্তর্ভুক্ত সকল বিভাগের নামের আগে ‘বিবিসি নিউজ’ শব্দ দুটি যোগ দেয়া হচ্ছে। শুধু তাই না, বিবিসি নিউজের ব্র্যান্ডের অংশ হিসেবে নির্দিষ্ট কিছু রং, ডিজাইন, মিউজিক ইত্যাদিও আছে – যেগুলো দেখলে বা শুনলেই মানুষ বুঝতে পারবে তারা বিবিসি দেখছেন।
তাহলে বুঝতেই পারছেন, কোন কিছুই হঠাৎ করে হয়নি, অনেক চিন্তা-ভাবনা আলোচনার পরই সিদ্ধান্ত এবং তার বাস্তবায়ন। তবে হ্যাঁ, দর্শক বা পাঠক হিসেবে আপনি তখনই পরিবর্তনটা বুঝতে পেরেছেন যখন নতুন ব্র্যান্ডিং আমাদের ওয়েবসাইটে বা সামাজিক মাধ্যমে উন্মুক্ত করা হয়েছে। কাজেই, আপনার কাছে ব্যাপারটা আকস্মিক মনে হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু না।
রেডিওতে প্রচার হওয়া একটি প্রতিবেদন নিয়ে ছোট একটি প্রশংসাবানী পাঠিয়েছেন গোপালগঞ্জের ঘোড়াদাইড় থেকে ফয়সাল আহমেদ সিপন:
”১৮ই জুন প্রবাহে বাংলাদেশে ঈদ উৎসবের সাথে ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ গানটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে উঠা নিয়ে প্রতিবেদন টি ছিল ব্যতিক্রমধর্মী। এই ধরনের প্রতিবেদন আরো প্রচারের অনুরোধ করছি।”
আপনাকে ধন্যবাদ মিঃ আহমেদ। ভবিষ্যতে ব্যতিক্রমধর্মী বিষয় নিয়ে আরো পরিবেশনা থাকবে, তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।
এক সময় ছিল অনেক রেডিও শ্রোতা ডাকে পাঠানো, হাতে লেখা চিঠিতে স্মৃতিচারণ করতেন। ইমেইলে সেরকম স্মৃতিচারণমূলক চিঠি আসে না বললেই চলে। তার কারণ সম্ভবত, হাতে লিখে স্মৃতিচারণ করতে যত মজা, কম্পিউটারে লিখে সেই আনন্দটা পাওয়া কঠিন। তবে অতীতের কথা দিয়ে সেরকমই একটি ইমেইল করেছেন ঢাকা থেকে মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম:
”বিবিসি প্রথম শুনি আজ থেকে প্রায় তিন যুগ আগে। প্রথম দিন বিবিসি শোনার স্মৃতি আজও মনে আছে। ১৯৮৪ সালের ৩১শে অক্টোবর সন্ধ্যা ৭-৩০মিনিটের দিকে আমার মেজ মামা আমাকে বললেন,ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী নিহত হয়েছেন,খবর শুনতে হবে রেডিও নিয়ে এসো। ঘর থেকে চার স্পিকার বিশিষ্ট ১২ ভল্ট ব্যাটারি চালিত অনেক বড় সাইজের রেডিওটি উঠানে এনে সেট করি।
”ইতোমধ্যে নানা-মামারাসহ অনেকেই জমায়েত হয়েছেন খবর শোনার জন্য। শর্ট ওয়েভে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে খবর সম্প্রচার হচ্ছে আর আমি ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে খবর শুনেছি । ভয়ের শুরু প্রেসিডেন্ট জিয়া হত্যাকাণ্ডের খবর শোনার পর থেকে। বিবিসির বাঁশির সুর আজো আমাকে বিহ্বল করে মুগ্ধ করে।
”কাকলী অনুষ্ঠানে বানরের পিঠা ভাগের গল্প শুনে প্রেমে পড়ে যাই নূরুল ইসলাম ও মানসী বড়ুয়ার কণ্ঠের । অনেকদিন কাকলী অনুষ্ঠান নিয়মিত শুনেছি। ১৯৯৬ সালের ১৮-২১ মে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান-এর সময় , ১৮ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত বিবিসির প্রায় সকল অনুষ্ঠান রেকর্ড করে রেখেছি । এখনও নিয়মিত বিবিসি শুনছি, সবচেয়ে বেশী উপভোগ করি সংবাদপত্র পর্যালোচনা অনুষ্ঠান। বিবিসি আমার কাছে আমার প্রিয় বিবিসি। সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য সংবাদ মাধ্যম।‘‘
আপনার চিঠি পড়ে মনে হচ্ছে বিবিসি শোনাটা আপনার পরিবারের জন্য শুধুমাত্র দিনের খবর শোনার চেয়েও বেশি কিছু ছিল। তিন দশকেরও আগে কোন্ গুরুত্বপূর্ণ খবর আপনি বিবিসিতে শুনেছিলেন, বাসার পরিবেশ তখন কেমন ছিল, কী ধরনের রেডিওতে আপনারা খবর শুনতেন, এত সব খুঁটিনাটি বিষয় মনে রাখা কম কথা নয়। আপনার স্মৃতি সবার সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আমাদের ওয়েবসাইটে যে ধরনের এবং সাইজের ফন্ট ব্যবহার করা হয়, সেটা নিয়ে মন্তব্য করে লিখেছেন ঢাকা থেকে মাকসুদ তালুকদার:
”যারা মোবাইল ফোনে আপনাদের অনলাইনে খবর পড়ে থাকেন, তারা কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এখানে খবর যে ফন্টে লেখা হচ্ছে, সেটা বেশ চিকন এবং যথেষ্ট গাঢ় না। বাংলাদেশের প্রথম আলো বা bdnews24.com বেশ গাঢ় ফন্ট ব্যবহার করে, যেটা সহজে পড়া যায়।”
আপনার ফিডব্যাকের জন্য ধন্যবাদ মিঃ তালুকদার। সত্যি কথা বলতে, বিষয়টি নিয়ে আমারা কখনো ভাবিনি। আমরা সব সময় ধরেই নিয়েছি , বিবিসি বাংলা ওয়েবসাইটে যে ফন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটা নিয়ে কারো কোন অসুবিধা হচ্ছে না। এখন আপনি যেহেতু বিষয়টির দিকে আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন, আমরা অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।
আরো যারা চিঠি পাঠিয়েছেন তাদের কয়েকজনের নাম এখানে উল্লেখ করছি:
মুকুল চৌধুরী, সৈয়দপুর, নীলফামারী
মোহাম্মদ শিমুল বাপ্পী, কাশিমনগর, পাইকগাছা খুলনা।
মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান চৌধুরী , চৌধুরী পাড়া, সৈয়দপুর।
সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য, পশ্চিম মেদিনীপুর, ভারত।
মাকসুদূর রহমান তালুকদার, ঢাকা।
মাকামে মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম।
জয়ন্ত চক্রবর্তী, দিল্লি, ভারত।
মাহবুব রহমান মামুন, দারিয়াপুর,গাইবান্ধা।
মোহাম্মদ ফিরোজুল ইসলাম,বড়গাঁও, ঠাকুরগাঁও।
মেহেদি হাসান, ঢাকা ।
আমাদের সাথে যোগাযোগের ঠিকানা:
ইমেইল: [email protected]
ফেসবুক: www.facebook.com/BBCBengaliService/
টুইটার: https://twitter.com/bbcbangla
Source from: http://www.bbc.com/bengali/news-44560760