‘পাসপোর্ট পেতে হলে হিন্দু হয়ে যান’, উপদেশ দিলেন ভারতের পাসপোর্ট কর্মকর্তা

Date:

Share post:

বিয়ের ১২ বছর পরে যে স্বামীর ধর্ম নিয়ে কোনও প্রশ্ন শুনতে হবে, এটা কল্পনাও করতে পারেন নি উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বাসিন্দা তন্বী শেঠ।

মিসেস শেঠ টুইটারে অভিযোগ করেছেন যে লখনৌয়ের পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে কর্মরত এক অফিসার সকলের সামনে তাকে প্রশ্ন করেছেন যে বিয়ের পরেও কেন নিজের পদবী পরিবর্তন করেন নি তিনি।

স্বামীকেও ডেকে বলা হয় যে পাসপোর্ট নবায়ন করতে হলে তাঁকে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে হবে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে ট্যাগ করে পাঁচ ভাগে পোস্ট করা টুইটে মিসেস শেঠ লিখেছেন, তিনি আনাস সিদ্দিকিকে ১২ বছর আগে বিয়ে করেছেন, তাদের বছর ছয়েকের এক সন্তানও আছে। কিন্তু ভারতের বেশীরভাগ নারীই যেমন বিয়ের পরে পদবী বদল করে স্বামীর পদবী রাখেন, সেটা তিনি করেন নি।

“একজন মুসলিমকে বিয়ে করেও কেন পদবী বদল করি নি, সেই প্রশ্ন তুলে আমার পাসপোর্টের নবায়ন আটকে দেন বিকাশ মিশ্র নামের ওই অফিসার। সবার সামনে আমাকে অপমান তো করাই হয়, এমনকি আমার স্বামীকে ডেকে পাঠিয়ে বলা হয় যে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করলে তবেই পাসপোর্ট নবায়ন করা হবে,” লিখেছেন মিসেস শেঠ।

সুষমা স্বরাজকে উদ্দেশ্য করে তন্বী শেঠ লিখেছেন, “বিচারের প্রতি এবং আপনার প্রতি আমার গভীর আস্থা নিয়ে, একই সঙ্গে মনে প্রচণ্ড রাগ আর অনিশ্চয়তার মধ্যে এই টুইট করতে হচ্ছে আমাকে। বিকাশ মিশ্র নামের ওই পাসপোর্ট অফিসার প্রশ্ন তুলেছেন কেন আমি একজন মুসলমানকে বিয়ে করেছি, আর কেনই বা আমি বিয়ের পরে পদবী বদল করি নি। বিয়ের পর থেকে কোনও দিন এত অপমানিত হই নি।”তন্বী শেঠ ও তার স্বামী আনাস সিদ্দিকি।আন্তর্জাতিক আদালতকে দেওয়া পর্যবেক্ষণে যা বলা হল

লখনৌয়ের রিজিওনাল পাসপোর্ট অফিসার পীযুষ ভার্মা বুধবারই সংবাদমাধ্যমের কাছে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছিলেন।

বৃহস্পতিবার সকালে ওই দম্পতিকে নিজের দপ্তরে ডেকে তাদের হাতে পাসপোর্ট তুলে দিয়েছেন তিনি।

মি. ভার্মা জানিয়েছেন, “পাসপোর্ট নবায়নের জন্য যে সব নথি ওরা জমা দিয়েছিলেন, তাতে কোনও অসঙ্গতি নেই। তাই নতুন পাসপোর্ট দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর যে অফিসার ওই দুর্ব্যবহার করেছিলেন, তাঁকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে, সঙ্গে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়েছে।”

বিয়ের পরে নারীরা পদবী বদল করবেন কিনা, সেটা তাদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পদবী বদল করতেই হবে, এমন কোনও নিয়ম নেই ভারতে।

অনেক হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারীও আজকাল বিয়ের আগের পদবীই রেখে দেন, অনেকে আবার পুরনো পদবীর সঙ্গে স্বামীর পদবী – একসঙ্গে দুটিই ব্যবহার করেন।

আইন অনুযায়ী কোনও সরকারি কাজকর্মে বা নথিতে এই নিয়ে বাধ্যবাধকতা নেই।

তবে অনেক ক্ষেত্রেই সরকারি কর্মকর্তারা বিয়ের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট দেখতে চান, অথবা বলেন অ্যাফিডেফিট করিয়ে নিয়ে আসতে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...