আইএসকে এড়িয়ে কিভাবে লেখাপড়া করেছেন ইয়ারমুকের ছাত্রীরা

Date:

Share post:

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের পকণ্ঠে বাশার আসাদ বিরোধী ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সবশেষ এলাকাটি ছিল ইয়ারমুক।

এখানে ইসলামিক স্টেট সহ একাধিক বিদ্রোহী গ্রুপ সক্রিয় ছিল। তবে গত মাসে ব্যাপক বোমাবর্ষণ ও সম্মুখযুদ্ধের পর তারা ইয়ারমুক ছেড়ে চলে গেছে।

আইএসের নিয়ন্ত্রণে থাকা অবস্থায় ইয়ারমুকের মেয়েদের লেখাপড়া প্রায় হয়ে গিয়েছিল। তবে এখন স্কুলগুলো আ খুলেছে, ক্লাস ও পরীক্ষা হচ্ছে।

ইয়ারমুক থেকে বিবি ক্যারোলাইন হলি জানাচ্ছেন, এখানকার স্কুলের মেয়েদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছে যারা স্কুলে লেখাপড়া করার জন্য ভয়ংকর সব ঝুঁকি নিয়েছে।

তারা যেখানকার বাসিন্দা – সেই এলাকা ছিল আইএসের দখলে। তারা মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করতে য়েছিল, কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই মেয়েরা তা প্রতিহত করেছে।

এদের একজনের নাম জেরিন সুলাইমন। তার বয়েস ১৫।

তিনি বলছেন, “লেখাপড়া করার যে মৌলিক অধিকার তা আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছিল। আমাদের স্কুলে যেতে দেয়া হতো না। আমরা যেন শপিং করতে ইয়াল্দায় যাচ্ছি – এমন ভাব করে স্কুলে যেতাম।”

আরেক জন ছাত্রী ১৪ বছরের ফাতিমা। তিনি বলছিলেন, তার এক বান্ধবীকে আইএস পিটিয়েছিল কারণ তার কাছে লেখার খাতাপত্র ওয়া গিয়েছিল।

“আমরা আমাদের হিজাবের নিচে বা জুতোর মধ্যে বই খাতাপত্র িয়ে রাখতাম। বা এমন যে কোন জায়গায় যাতে ওরা খুজে না পায়। খুঁজে – এমনকি তা যদি সাদা কাগজও হতো – তাহলেও তারা তা ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলতো।”

জেরিন বলেন, তারা মেয়েদের নিকাব পরতে বাধ্য করতো, সাথে কোন বই পত্র রাখতে দিতো না। স্কুলের সাথে সম্পর্কিত যে কোন জিনিসই তাদের চোখে ছিল নিষিদ্ধ।

তারা এমনকি কলম বা রুলারও ভেঙে ফেলতো।

তাদের চোখকে ফাঁকি দেবার জন্য এই মেয়েরা মোবাইল ফোন আর সামাজিক মাধ্যমকে কাজে লাগায়।

ফাতিমা বলছিলেন, বোর্ডে শিক্ষক যা লিখতেন – আমরা মোবাইল ফোন দিয়ে তার ছবি তুলে রাখতাম। সেটা সোশাল মিডিয়ায় বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতাম।

ইয়ারমুক আইএসের দখলে থাকার সময় লড়াই চলার মধ্যে নেটওয়ার্ক সবসময় পাওয়া যেতো না। পেতে হলে বিপদের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ির ছাদে উঠতে হতো।

ফাতিমা বলছিলেন, আমাদের কোন বইপত্র ছিল না। ছিল শুধু মোবাইল ফোন। তার কথায়, শিক্ষাই হচ্ছে সবকিছু । আর এটাই আমাদের অস্ত্র।

আইএসের শাসনামলের ভয়াবহ সব ঘটনার সাক্ষী এই স্কুলছাত্রীরা।

জেরিন বলছিলেন, কাউকে হত্যা করার পর তারা শিশুদের সুযোগ দিত সেই মৃতদেহকে ক্ষতবিক্ষত করার। কেউ সিগারেট খেলে তাকে তারা খাঁচায় ভরে রাখতো। কখনো কখনো খাঁচার ওপর তার কাটা মাথাটা বসিয়ে খাঁচার ভেতরে দেহটা ফেলে রাখতো।

পরীক্ষা হয়ে যাবার পর এই মেয়েরা অন্য আর দশটা ছাত্রীর মতোই ফলাফল নিয়ে উদ্বিগ্ন।

কিন্তু আসলে তারা আরো বড় এক পরীক্ষা পার হয়ে এসেছে – যা অনেক সময় সময় জীবনর পরীক্ষা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

এমন বৃষ্টি কত দিন, জানাল আবহাওয়া অফিস

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি ঝরছে। কোথাও গুঁড়ি গুঁড়ি, কোথাও বা ভারী বৃষ্টি। অনেক এলাকাতেই জমেছে পানি।...

কার নেতৃত্বে আ.লীগের পুনর্বাসন হতে যাচ্ছে, জানালেন রাশেদ খান

ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হতে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ...

বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর তালিকায় নেই বিল গেটস

এক সময় বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ছিলেন সফটওয়্যার কোম্পানি মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক শীর্ষ নির্বাহী বিল গেটস। তবে...

ভারতে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা, তদন্ত প্রতিবেদন দিল কমিটি

ভারতের গুজরাটে এয়ার ইন্ডিয়ার যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি। গত ১২ জুন আহমেদাবাদ...