বাংলাদেশে পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সমস্যা চলছে দীর্ঘদিন ধরে
বাংলাদেশে চলমান এসএসসি পরীক্ষায় একের পর এক প্রশ্ন ফাঁসের মধ্যে পুলিশ এখন দাবি করছে, তারা এমন একটি চক্রকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে যারা প্রশ্ন ফাঁস করে ছড়িয়ে দেয়।
পুলিশের দাবি, এ থেকে কিভাবে প্রশ্ন ফাঁস হয় এবং পরীক্ষার্থীদের কাছে কিভাবে এগুলো পৌঁছায় – সে সম্পর্কে একটা ধারণা তারা পেয়েছে।
তবে এ চক্রের কাছে কারা প্রশ্ন সরবরাহ করে – সেটি এখনো অজানাই রয়ে গেছে।
প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আজ পরীক্ষা শুরুর আগে ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দিয়েছিলো মোবাইল অপারেটররা।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ থেকে শুরু করে স্কুল কলেজ পর্যায়ের পাবলিক পরীক্ষার সময়ে নিয়মিতই গণমাধ্যমে আসছে প্রশ্ন ফাঁসের খবর।
পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন আজ ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলছেন, তারা তিন ভাইয়ের নেতৃত্বে কাজ করে এমন ১৪ জনের একটি চক্রকে আটক করেছে – যারা ঘোষণা দিয়ে প্রশ্ন ফাঁস করছিলো।
তিনি বলেন, “ফেসবুকে কিছু সংখ্যক ছেলে ঘোষণা দিয়েছিলো যে তারা প্রশ্ন ফাঁস করবেই। তাদের আমরা ধরেছি। আহসানউল্লাহ, আমানউল্লাহ ও বরকতউল্লাহ। এই উল্লাহ বাহিনী, এরা তিন ভাই। এর মধ্যে একজন মেডিকেলের শিক্ষার্থী”।
প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীসহ অনেককেই আটক করা হয়েছে নানা সময়। ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কোচিং সেন্টারগুলোর বিষয়েও।পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
নানামুখী তদন্ত চালিয়েছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। কিন্তু তারপরেও কিভাবে এ ধরনের চক্রগুলো প্রশ্ন ফাঁস করে। পরীক্ষার্থীদের কাছে সেগুলো কিভাবে পৌঁছায়।
এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন বলেন, “মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমূতে তারা কিছু গ্রুপ ওপেন করে ।প্রতিটি গ্রুপে অনেক শিকক্ষার্থীকে সদস্য করে এবং পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক গ্রুপ তৈরি করে।”
“আমরা জানতে পেরেছি, আর প্রশ্নপত্র পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা কক্ষে যাওয়ার সময় এই ঘটনা ঘটে।”
তবে এই সময়ের মধ্যে কারা প্রশ্ন নিয়ে এ ধরনের চক্রগুলোর কাছে পাঠিয়ে দেয় সেটির কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই পুলিশের কাছে।
আব্দুল বাতেন বলেন, “শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্ন পৌঁছানো পর্যন্ত যে কোন সময় এটা হতে পারে। ওরা যে প্রশ্ন কোথায় পায় ওদের তো শত শত চেইন আছে। এগুলো বের করতে ছয়মাস সময় লেগে যাবে”।
গত পহেলা ফেব্রুয়ারী থেকে শুরু হওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সবশেষ গতকালের পরীক্ষাতেও একই অভিযোগ উঠেছে। মামলা হয়েছে শিক্ষাবোর্ড ও পুলিশের তরফ থেকেও।
এদিকে আজ পরীক্ষা শুরুর আগে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে মোবাইল অপারেটরদের ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছিলোও বলে জানা যাচ্ছে।
ওদিকে এবার এস এস সি-তে পর পর কয়েকটি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর এক সপ্তাহ আগেও একটি আন্ত:মন্ত্রণালয় কমিটি করা হলেও সে কমিটি প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে এখনো কাজই শুরু করতে পারেনি।