বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাসের ইন্তেকাল।

Date:

Share post:

বাংলাদেশের সাবেক রাষ্্রপতি বদুর রহমান বিশ্বাস ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজেউন)। শুক্রবার রাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

শুক্রবার সন্ধ্যার পর আশঙ্কাক অবস্থায় তাঁকে বনারীর গ্র্যান্ড প্রেসিডেন্ট প্যালেস বাসভবন থেকে গুলশানস্থ ইউনাইটেড হাসতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান।

হাসপাতাল থেকে জিয়া সেনা সভাপতি আবদুর রহমান তপন ও এনডিপি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মো. র হোসেন ঈসা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবদুর রহমান বিশ্বাস ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির প্রথম মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা ভুগছিলেন।

এদিকে সাবেক এই রাষ্ট্রপতির মৃত্যুর সংবাদ শুনে অনেকেই হাসপাতালে ভিড় করছেন। তাঁর নামাজে জানাজা ও দাফন সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি।

বর্ণাঢ্য জীবন

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস ১৯২৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর বরিশালের শায়েস্তাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর স্কুল ও কলেজ জীবন বরিশালে কাটে। তিনি ্যালয় থেকে বিএ (সম্মান) ও ইতিহাস এবং আইনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। প্রথমে তিনি স্থানীয় সমবায় ব্যাংকের সভাপতি হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। শিক্ষাবিস্তারেরে উদ্দেশ্যে তিনি কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। এই কাজের জন্য কার ১৯৫৮ সালে তাঁকে স্বেচ্ছাসেবী সমাজ কর্মী হিসেবে স্বীকৃতি দান করে। ষাটের দশকে কিছু দিন বাবুগঞ্জ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে বরিশালে আইন পেশায় জড়িয়ে পড়েন।

১৯৬২ ও ১৯৬৫ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান আইন সভার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৯ পর্যন্ত তিনি সংসদ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি জাতিসংঘের ২২তম সাধারণ সভায় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৪ ও ১৯৭৬ সালে তিনি বরিশাল বার আসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৭ সালে তিনি বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে আবদুর রহমান বিশ্বাস নির্বাচিত হন। ১৯৭৯-৮০ সময়ে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় পাটমন্ত্রী ছিলেন এবং ১৯৮১-৮২ সালে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস্‌ সাত্তারের মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন।

বাংলাদেশে সংসদীয় শাসনব্যবস্থা চালু হওয়ার পর ১৯৯১ এর ৮ অক্টোবর দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের ৮ অক্টোবর তার রাষ্ট্রপতি হিসেবে মেয়াদ শেষ হয়। রাষ্ট্রপতি থাকাকালেই ১৯৯৬ সালের এক সেনা ক্যু ঠেকিয়ে দেশবাসীর কাছে যথেষ্ট প্রশংসা কুড়ান।

রাষ্ট্রপতির পদ ছাড়ার আবদুর রহমান বিশ্বাস রাজনীতি থেকে অবসর নেন। তিনি রাষ্ট্রপতি পদ ছাড়ার আগেই তার নির্বাচনী আসনে বড় ছেলে এহতেশামুল হক নাসিম ১৯৯৬ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সালের ১২ মার্চ ঢাকায় এক বিয়ের দাওয়াতে খাবারের বিষক্রিয়ায় মারা যান নাসিম। এই ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন আবদুর রহমান বিশ্বাস। ব্যক্তিগত জীবনে আবদুর রহমান বিশ্বাস আট ছেলে- মেয়ের বাবা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

শেখ হাসিনা আমাদের ওপর একটি ফিটনেসবিহীন রাষ্ট্র চাপিয়ে দিয়ে গেছে: নাহিদ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এমন একটা দেশে আমরা বসবাস করি, যেখানে বাসের ও বিমানের...

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩০ বিলিয়ন ডলার

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দিন শেষে দাঁড়িয়েছে ৩০ বিলিয়ন ডলার বা ৩ হাজার কোটি...

মোবাইল ছিনতাই : দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগে ৪ পুলিশ সদস্য ক্লোজড

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ ওঠায় মোহাম্মদপুর থানার চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে।...

স্থিতিশীল সবজির বাজার, দাম কমেছে ইলিশের

রাজধানীর বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে সবজির দাম। সরবরাহ বাড়ায় সপ্তাহ ব্যবধানে ইলিশের দাম কিছুটা কমেছে। শুক্রবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি...