ভারতে এখন ফিফার অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপের খেলা চলছে। দেশের আরও বেশ কয়েকটি শহরের সঙ্গেই খেলা পড়েছে কলকাতাতেও।
নগরীর সল্টলেকের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনকে গত কয়েকমাস ধরেই নতুন রূপ দিয়ে এরকম ভোল বদলে দেওয়া হয়েছে।
এই ভোলবদলের অংশ হিসাবেই স্টেডিয়ামের প্রবেশ পথে বসানো হয়েছে একটি ভাস্কর্য।
সাদা শর্টস পড়া মূর্তিটি তৈরি হয়েছে কোমর অবধি। দুই পায়ে বসানো আছে দুটি ফুটবল।
আর মূর্তির নীচে একটি ফলকে ডিজাইনার হিসাবে লেখা আছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর নাম।
ভাস্কর্যটি টুইটার, ফেসবুক সহ সামাজিক মাধ্যম আর গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে দ্রুত। তারপরই তা নিয়ে শুরু হয়েছে হাসি মশকরা।
কেউ প্রশ্ন তুলছেন – ফুটবলারদের দুই পায়ে দুটো বল থাকে না কি?
ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোকে ট্যাগ করে একজন টুইট করেছেন- তিনি কি মূর্তিটা সম্পূর্ণ করতে পারবেন?
ফেসবুকে বিশ্বপ্রতিম রুদ্র নামে এক ব্যক্তি স্মাইলি যোগ করে লিখেছেন, ‘কোনও মন্তব্য নয়। শুধু এই অসাধারণ ভাস্কর্যটি উপভোগ করুন।’
আশিস সিনহা নামে একজন লিখেছেন- মুন্ডুহীন এই মূর্তির মর্ম উদ্ধার করার প্রচেষ্টায় টুইটার এখন নাকাল।পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী ছবি আঁকার পাশাপাশি গান-কবিতাও লেখেন।
প্রতিষ্ঠিত শিল্পী বা ভাস্করেরা কী বলছেন মমতা ব্যানার্জীর ডিজাইন করা এই মূর্তি নিয়ে?
শিল্পী ভবতোষ সুতারের কথায়, “এই মূর্তিটার ভাল মন্দ বিচার করার জন্য কোনও শিল্পীর দরকার নেই। সাধারণ মানুষই তো কথা বলছেন। দুটো পা তৈরি করা হয়েছে খুবই খারাপ ভাবে। জঘন্য স্থাপনা হয়েছে এটা। সঠিক লোককে দিয়ে না করালে যা হয় আর কি।”
শিল্পী যোগেন চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রীর খুবই ঘনিষ্ঠ।
তিনি একটু হেসে বললেন, “মূর্তিটা দেখে সুররিয়ালিস্টিক ফর্ম বলে মনে করা যেতেই পারে। মূর্তিটা আরও সুন্দর হলে ভাল লাগতো।”
বর্ষীয়ান এই শিল্পী বলছিলেন দিল্লিতে একটি আর্ট কমিশন রয়েছে। যেখানে শিল্পী, ভাস্কর, সরকারী নানা বিভাগের প্রধানরা থাকেন। দিল্লিতে যে কোনও মূর্তি বা স্থাপনা প্রথমে এই কমিশনের থেকে পাশ করাতে হয়।
“কলকাতাতেও এরকম একটি কমিশন হওয়া উচিত, যারা সব ধরনের মূর্তি বা স্থাপনা বসানোর আগে তার শৈল্পিক দিক সহ সব বিষয় খতিয়ে দেখবে।”
একদিকে যেমন প্রকাশ্যে টুইটার, ফেসবুকে তির্যক বা মজার মন্তব্য করা হচ্ছে, অন্যদিকে হোয়াটসঅ্যাপের মতো গোপনীয়তা রক্ষা করা হয় যেসব যোগাযোগ মাধ্যমে সেখানে ছড়িয়ে পড়েছে ওই মূর্তিটির নানা ফটোশপ করা ছবি।
মমতা ব্যানার্জীর শিল্পকর্ম এই প্রথম যে প্রকাশ্যে এল তা নয়।
তিনি নিয়মিত জলরং আর তেলরং ব্যবহার করে ছবি আঁকেন। সেই সব ছবির প্রদর্শনীও হয়েছে কয়েকবার।
ছবি আঁকার পাশাপাশি কবিতা আর গানও লেখেন তিনি। সম্প্রতি তাঁর লেখা কয়েকটি গানের সি ডি প্রকাশিত হয়েছে, যেগুলি গেয়েছেন মন্ত্রীসভারই এক সদস্য ও প্রতিষ্ঠিত গায়ক ইন্দ্রনীল সেন।