‘শহীদ আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের বিচার আমাদের আমলেই সম্পন্ন হবে’ বলে জানিয়েছেন অন্তবর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আসিফ নজরুল ইসলাম।
বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ দিবস ও শহীদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদত বার্ষিকীর আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ভিসি ড. শওকাত আলীর সভাপতিত্বে এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে মঞ্চে আরো উপস্থিত ছিলেন- রংপুরের ২১ শহীদের পরিবার। এছাড়া দুই উপদেষ্টাসহ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন মঞ্চের সামনের দর্শক সারিতে।
পরে শহীদ পরিবারের সবাইকে ক্রেস্ট উপহার দেন অতিথিরা। উম্মোচন করেন জুলাই স্মরণিকা। এর আগে শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনকে সাথে নিয়ে ক্যাম্পাসের ১ নম্বর গেটের পাশে শহীদ আবু সাঈদ তোরণ ও যাদুঘর, স্ট্রিট স্ট্যাম্প, পার্কের মোড়ে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতি স্তম্ভের ফলক উম্মোচন করেন উপদেষ্টাসহ অতিথিরা।
এর আগে ভিসির নেতৃত্বে একটি বিশাল শোক র্যালি ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে পার্কের মোড়, আবু সাঈদ চত্বর মডার্ন মোড় হয়ে আবারো ক্যাম্পাসে এসে শেষ হয়। এতে সকল বিভাগের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা ব্যানার নিয়ে অংশ নেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলের মতো যাকে খুশি তাকে ধরে ফাঁসি দিয়ে দিলাম। পরে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠল। আমরা এটা করতে চাই না। আমরা দেখছি বিচার কতটা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করে সারা পৃথিবীর মাঝে যাতে গ্রহণযোগ্য হয়। সেই চেষ্টা করছি।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিচার বিভাগ স্বাধীন। আমরাতো বলতে পারি না এভাবে বিচার করেন। তাহলে হস্তক্ষেপ করা হয়। সুতরাং আমরা খবর জানি। প্রসিকিউশনের সাথে অনেক সময় কথা হয়। আপটেড নেই। আমি নিশ্চিত আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের সরকার থাকার সময়েই আমরা আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের বিচার আমরা করে যেতে পারবো।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘প্রথমবার আবু সাঈদ গুলি লাগার পর তার চেহারায় ফুটে উঠেছে বিস্ময়। এভাবে কেউ গুলি করে। তারপরেও উনি সেখান থেকে সরেন নাই। তার চোখে মুখে রক্ত ঝড়ছে। এটা অনেক বড় আদর্শের বিষয়। এই সাহস। গণ আন্দোলনে বহু মানুষ বহুভাবে মারা যায়। কিন্তু এভাবে দাঁড়িয়ে হাত উচিয়ে বুক উচিয়ে প্রতিরোধের ভাষা নিয়ে একের পর এক গুলি বরণ করে নেয়ার ঘটনা বিরল। তাই আমি বলি আবু সাঈদ হচ্ছে আমাদের জুলাইয়ের বীরশ্রেষ্ঠ। তার ভিডিও দেখার পর আমার মতো প্রায় ভিতু মানুষও ঘর থেকে বের হওয়ার সাহস পেয়েছে।’
দিনভার নানা আয়োজনে স্মরণ করা হয় শহীদ আবু সাঈদকে।