পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা কি বাংলাদেশে থেকে যেতে চান?

Date:

Share post:

কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলায় টিলা কেটে ক্ষণস্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছেন হাসিনা।

মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে এসে যেসব রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তাদের মিয়ানমারেই ফেরত পাঠানো হবে বলে প্রশাসন থেকে পরিস্কার করে বলা হয়েছে।

কিন্তু এসব রোহিঙ্গারা কী বলছে? তাদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা কী?

কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলায় টিলা কেটে ক্ষণস্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছেন হাসিনা।

তার সাথে তার দুই সন্তান, সাথে আরো ১৫ জনের সাথে খুপরির মত জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। ভিতরে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে থাকতেন হাসিনা।

সেখানকার সহিংসতা থেকে কোনোরকম প্রাণ বাঁচিয়ে পালিয়ে এসেছেন বাংলাদেশে। পিছনে ফেলে এসেছেন ভিটেমাটি আর আত্মীয়দের। বেঁচে থাকার আশায় নতুন একটা দেশে পালিয়ে এসেছেন, কিন্তু এরপর কী করবেন?

হাসিনা বলছিলেন, তিনি এখনো বুঝে উঠতে পারছেন না পরবর্তী পদক্ষেপ কী নেবেন। তবে এই অবস্থার মধ্যে তিনি যে ফিরে যেতে চান না সেটা পরিস্কার করে জানালেন।

তিনি বলছিলেন “সেখানে যে অশান্তি চলছে তার মধ্যে কিভাবে ফিরে যাবো। আমাদের ধরে ধরে নির্যাতন করছে, মেরে ফেলছে। তবে সেখানে যদি শান্তি ফিরে আসে তাহলে যাওয়ার কথা চিন্তা করতে পারি”।

হাসিনার মতো কয়েক লক্ষ মানুষ গত ২৫শে অগাস্টের পর কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রবেশ করেছে।

এদের বেশিরভাগ মানুষের পরিবারের সদস্যরা হত্যাকাণ্ড এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

এ অবস্থায় যখন মানুষগুলো শুধু প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে।

কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী পরিকল্পনা?

তারা কি এখানেই থেকে যেতে চান নাকি ফিরে যেতে চান মিয়ানমারে?

কক্সবাজারের আরেকটি উপজেলা টেকনাফে রাস্তার পাশেই দেখা পলিথিন দিয়ে তৈরি সারি সারি রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থল।

সেখানে কথা হচ্ছিল হাসেম আলীর সাথে।

তিনি বলছিলেন “মিয়ানমারের সরকার যদি তাদের রোহিঙ্গা বলে স্বীকৃতি দেয়, যদি তাদের নাগরিক অধিকার দেয় তাহলে ফিরে যাবো”। মি:আলী বলছিলেন, এর আগেও কয়েকবার তারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন কিন্তু আসেননি। কিন্তু এবারে একেবারে অপারগ হয়ে পালিয়ে এসেছেন বাংলাদেশে।মাজেদার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে, এরপর তিনি রাখাইন থেকে পালিয়ে এসেছেন।

এদিকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে, তবে শেষমেশ তাদেরকে মিয়ানমারেই ফিরে যেতে হবে।

রোহিঙ্গাদের জন্য যে নিবন্ধনের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে সেটাও তাদেরকে শনাক্ত করে দেশে ফেরত পাঠানোর একটা উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

তাহলে বাংলাদেশে দীর্ঘস্থায়ী আবাসস্থল করতে না পারলে কী করবে তারা?

এই প্রশ্ন শুনে মাজেদা আমাকে প্রশ্ন করছিলেন “যদি সেখানে শান্তিই না পায় তাহলে কেন সেখানে ফিরে যাবো?”

মাজেদার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে, এরপর তিনি রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। রাখাইনে বেশ অবস্থাপন্ন ঘর ছিল তার।

তিনি বলছিলেন “বাংলাদেশ যদি আমাদের আশ্রয় না দেয় তাহলে যেন এখানেই তাদের মেরে ফেলা হয়”। পাশের নাফ নদী দেখিয়ে বলছিলেন “ফিরে যাওয়ার চেয়ে এই নদীতে ডুবে মরা ভালো”।

কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে গত চার দিনে আমার অন্তত শ’খানেক মানুষের সাথে কথা হয়েছে যারা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসেছেন।

এদের প্রত্যেককেই আমি এই প্রশ্নটি করেছিলাম। উত্তর কম-বেশি সবার এক রকম।

যদি মিয়ারমারে শান্তি ফিরে আসে তাহলে ফিরে যেতে চান, নাহলে এখানে থাকতে চান।

কারণ, মিয়ানমার যেমন তাদের জন্মভূমি আবার সেখানে রয়েছে মৃত্যুকূপে পতিত হওয়ার তীব্র আতঙ্ক।মোহাম্মদ হাসেম আলী “মিয়ানমারের সরকার যদি তাদের রোহিঙ্গা বলে স্বীকৃতি দেয়, যদি তাদের নাগরিক অধিকার দেয় তাহলে ফিরে যাবো”

Previous article
Next article
বাংলা‌দেশ চালকল মা‌লিক সমি‌তির কেন্দ্রীয় সভাপ‌তি আব্দুর র‌শি‌দের কু‌ষ্টিয়া চা‌লের মি‌লে অভিযান চা‌লি‌য়ে‌ছে বাজার ম‌নিট‌রিং টিম। রোববার বি‌কেল ৪টা থে‌কে ৫টা পর্যন্ত কু‌ষ্টিয়ার খাজানগ‌রে অব‌স্থিত র‌শিদ এগ্রো ফুড মি‌লে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক হা‌বিবুর রহমা‌নের নেতৃ‌ত্বে এ অভিযান চালা‌নো হয়। এর আগে বাংলাদেশ রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপ‌তি আব্দুর রশিদ এবং সাধারণ সম্পাদক লায়েক আলীকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক হা‌বিবুর রহম‌ান জানান, নিয়‌মিত বাজার ম‌নিট‌রের অংশ হি‌সে‌বে বাংলা‌দেশ চালকল মা‌লিক সমি‌তির কেন্দ্রীয় সভাপ‌তি আব্দুর র‌শি‌দের চালক‌লে এ অভিযান চালা‌নো হয়। এ অভিযান অব্যাহত থাক‌বে। জানা গে‌ছে, সম্প্র‌তি ‌দে‌শের বাজা‌রে চা‌লের দাম বৃ‌দ্ধির কারণ হি‌সে‌বে কু‌ষ্টিয়ার খাজানগ‌রের চালকল মা‌লিক‌দের দায়ী ক‌রে মন্ত্রণাল‌য়ে তদন্ত রি‌র্পোট দেন গোয়েন্দা সংস্থার এক‌টি টিম। এরপর দে‌শের বি‌ভিন্ন সংবাদপ‌ত্রে এ নি‌য়ে সংবাদ প্রকা‌শিত হ‌লে ন‌ড়েচ‌ড়ে ব‌সে প্রশাসন। এরই ভি‌ত্তি‌তে গত ক‌য়েক‌দিন আগে কু‌ষ্টিয়া জেলা টাস্ক‌ফোর্স টিম বাংলা‌দেশ চালকল মা‌লিক স‌মি‌তির কেন্দ্রীয় সভাপ‌তি আব্দুর র‌শি‌দের কু‌ষ্টিয়ার খাজানগ‌রে অব‌স্থিত র‌শিদ এগ্রো ফু‌ডের গোডাউ‌নে অভিযান চালায়। এ সময় অভিযা‌নে গোডাউনে অতিরিক্ত ধান মজু‌দের প্রমাণ মেলায় তা‌কে ভ্রাম্যমাণ আদাল‌তে ৫০হাজার টাকা জ‌রিমানা করা হয় এবং তা‌কে সর্তক করা হয়। এরই প্রে‌ক্ষি‌তে রোববার বি‌কে‌লে নিয়‌মিত অভিযানের অংশ হি‌সে‌বে পুনরায় র‌শিদ এগ্রো ফু‌ডে অভিযান চালায় বাজার মনিট‌রিং টিম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...