অবশেষে নিষিদ্ধই হয়ে গেলেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। তাকে চলচ্চিত্র থেকে ছেটে ফেলে দিলেন ১৮ সংগঠনের নেতারা। বুধবার রাতে ঢাকাটাইমসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু। তিনি বলেছেন, ‘জায়েদ আমাদের কোনো সংগঠনকেই মানেন না। সিনিয়রদের সমীহ করেন না। যেহেতু তিনি নিজের মেজাজ-মর্জি মতো চলেন, তাই সংগঠনগুলোরও তাকে আর দরকার নেই।’
হুঁশিয়ারি দিয়ে এই প্রযোজক ও অভিনেতা বলেন, ‘আমরা কেউই জায়েদ খানের সঙ্গে কোনো কাজ করব না। যদি কোনো সংগঠনের কোনো সদস্য জায়েদের সঙ্গে কাজ করেন, তাহলে সংশ্লিষ্ট সংগঠন সেই সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। দরকার পড়লে ওই ব্যক্তির সদস্যপদ বাতিল করা হবে।’
জায়েদ খান যে নিষিদ্ধ হতে চলেছেন, এমন কথা বুধবার সন্ধ্যায়ই জানান পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান। তিনি বলেন, ‘১৮ সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জায়েদ খানকে চলচ্চিত্রের সকল কাজ থেকে নিষিদ্ধ করা হবে। আজ-কালের মধ্যেই এই ঘোষণা দেওয়া হবে।’
সোহানুর রহমান সোহানের এমন কথার দুই ঘণ্টা না যেতেই জায়েদ খানকে নিষিদ্ধের ঘোষণা আসলো। যদিও মঙ্গলবার বিকালেই এফডিসিতে এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেন ১৮ সংগঠনের নেতারা। কিন্তু খবরটি গোপন রেখেছিলেন তারা।
নিপুণ যেহেতু সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছেন, তাই সেটির আদেশের অপেক্ষায় ছিল ১৮ সংগঠন। বুধবার বিকালে কোর্টের নির্দেশনা আসার পর সন্ধ্যায় ফের এফডিসিতে বৈঠকে বসেন নেতারা। সেখানেই আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমের কাছে জায়েদ খানকে বয়কটের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।
ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান, প্রযোজক সমিতির সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু, চিত্রগ্রাহক সমিতির সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান মজনু এবং শিল্পী সমিতির আজীবন সদস্য অভিনেতা আলমগীর, নবনির্বাচিত সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, অভিনেত্রী নিপুণ, সাইমন সাদিকসহ অনেকে।
ভোটের দিন থেকেই জায়েদ খানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে আসছেন ১৮ সংগঠনের নেতারা। গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচন। সেদিন প্রার্থী, ভোটার এবং নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী লোকজন ছাড়া এফডিসির ভেতরে কেউ ঢুকতে পারেনি। কয়েকজন পরিচালক ও প্রযোজক ঢুকতে গেলে তাদের লাঞ্ছিত করা হয় বলে অভিযোগ।
এর জেরে নির্বাচনের পরদিন এফডিসির সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন ১৮ সংগঠনের নেতারা। তারা অভিযোগ করেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন এবং এফডিসির এমডি নুজহাত ইয়াসমিনের সঙ্গে মিলে জায়েদ খান এমন পরিকল্পনার ছক এঁকেছিলেন, যাতে ১৮ সংগঠনের কেউ এফডিসিতে ঢুকতে না পারে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে সে সময় এফডিসির এমডির পদত্যাগ দাবি করেন ১৮ সংগঠনের নেতারা। পাশাপাশি প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। এবার ১৮ সংগঠন মিলে নিষিদ্ধ করলেন জায়েদ খানকে।