ডেস্ক নিউজ:সারা বছর ধরে আমরা রমজান মাসের অপেক্ষায় থাকি। সারাদিন রোজা রাখার পর সবাই অপেক্ষায় থাকি ইফতারের মুখোরচক খাবারের। কিন্তু আমরা যা খাচ্ছি রমজানের সময় তা আদৌতে শরীরের জন্য ভালো কি না সে বিষয়ে জানা দরকার। সূত্র: ব্যালেন্স নিউট্রিশন।
দীর্ঘ সময় ধরে রোজা রাখার ফলে শরীরের পেশী প্রোটিনগুলি ভেঙে যায় যার ফলে শরীরে শক্তি কমে যায় যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সুতরাং রোজার মাসে আপনাকে যা করতে হবে তা হল টাটকা সব উপাদান দিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে খাবার প্রস্তুত করা। ইফতার থেকে শুরু করে সেহেরি পর্যন্ত কখন কী খাওয়া হবে তার একটি তালিকা তৈরি করে নিলে সবচেয়ে ভালো হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক রমজানের একটি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার তালিকা কেমন হতে পারে।
সেহেরি:
সেহেরির খাবার এমন হওয়া উচিত যা আপনাকে সারাদিনের কাজের শক্তি যোগাবে। এক কাপ ভাত বা দুইটা রুটি খেতে পারেন সেই সাথে অবশ্যই প্রোটিন খেতে হবে। আর ফল, বাদাম,সবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন সেহেরির সময়ে। দই খেতে পারেন এতে করে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকবে। তবে অতিরিক্ত মিষ্টি দই এড়িয়ে চলুন। ৪টি আখরোট খেয়ে নিলে সারাদিনে শক্তি যোগাবে। সেই সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন।
ইফতার:
সারাদিনের রোজা ভাঙার পর ইফতার করা হয়। ইফতারে অবশ্যই খেজুর থাকতে হবে। সেই সঙ্গে সারাদিনের পানির শূণ্যতা দূর করতে তরল খাবার খেতে হবে। শর্করা হিসেবে রুটি বা নুডলস খেতে পারেন। প্রোটিন হিসেবে খেতে পারেন ডিম। কম ফ্যাটযুক্ত দুধ খাওয়া যাবে। স্বাদে পরিবর্তন আনতে ফল দিয়ে তৈরি করা কাস্টার্ড খেতে পারেন। ঝালজাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা হলে গ্রিল চিকেন, বারবিকিউ চিকেন খেতে পারেন তবে প্রতিদিন না। এছাড়া মৌসুমি ফল রাখুন ইফতারের প্লেটে।
যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে:
১.ডুবো তেলে ভাজা সব খাবার যেমন পাকোড়া, চপ, কাবাব ইত্যাদি।
২. অতিরিক্ত চিনি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
৩.ফাস্ট ফুড জাতীয় সব খাবার যেমন বার্গার, পিজ্জা।
৪.উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবার যেমন আইসক্রিম,পনির।
৫.সফট ড্রিংকস বা বাজারের কেনা শরবত না ভালো। এর পরিবর্তে বাসায় শরবত বানিয়ে খান।
৬. রোজার সময় চা, কফি পান না করলেই ভালো। খুব বেশি ইচ্ছা হলে এক কাপ।
আমরা সচারাচর যে ভুল করে থাকি:
১.ইফাতারের সময় একবারে অতিরিক্ত পানি খাওয়া। এতে খারাপ প্রভাব পড়ে শরীরে। ইফতার পর থেকে সেহেরি পর্যন্ত অল্প অল্প করে পানি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
২.প্রতিদিন রুহ আফজা পান করা ওজন দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে। কারণ রুহ আফজায় অনেক চিনি থাকে। এজন্য সপ্তাহে দু একদিন রুহ আফজা খাওয়া যেতে পারে।
৩. অনেকেই আছেন ইফতারে খুব দ্রুত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করেন। এতে করে হজম শক্তি নষ্ট হয়। খাবার আস্তে ধীরে চাবিয়ে খেতে হবে। এতে করে পেটও ভরবে ভালো।
৪. বেশি সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার ইফতারে খেলে সারাদিন পানি পিপাসা লাগে। এসব খাবার কম খেতে হবে।
৫.ইফাতারের পরপরই মিষ্টি কিছু খেলে তা আপনার ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে, আবার ঘুম ঘুমও লাগতে পারে যা রাতের প্রার্থনার ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
৬. ইফতারের পর সরাসরি ব্যায়াম করা রক্ত প্রবাহে বিরুপ প্রভাব ফেলে। সময় নিয়ে অন্তত ইফতারের দুই ঘণ্টা পর ব্যায়াম শুরু করুন।