শেয়ার বিক্রির জন্য শেভরনের দৌড়ঝাঁপ*

Date:

Share post:

নিজেদের শেয়ার বিক্রির আনুষ্ঠানিক অনুমোদন নেওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছে মার্কিন কোম্পানি শেভরন। বাংলাদেশে থাকা নিজেদের সম্পদ বিক্রির জন্য গত এপ্রিলে চীনা কোম্পানি হিমালয় এনার্জির সঙ্গে চুক্তি করে শেভরন। যদিও এর আগে থেকেই বাংলাদেশ সরকার শেভরনের গ্যাসক্ষেত্রগুলো কেনার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়। এ জন্য একটি কোম্পানিকে দিয়ে শেভরনের সম্পদ মূল্যায়ন করেছে পেট্রোবাংলা। কিন্তু অনুমতি ছাড়াই হিমালয়ের সঙ্গে শেভরনের চুক্তি ভালোভাবে গ্রহণ করেনি সরকার। শেয়ার হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের বিষয়ে বেঁকে বসে পেট্রোবাংলা। এর পর থেকেই মার্কিন কোম্পানিটি অনুমতি আদায়ে নানাভাবে সরকারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
এরই অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার পেট্রোবাংলার সঙ্গে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অংশ নেয় শেভরন। বেলা ১১টা থেকে দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় পেট্রোবাংলার কার্যালয়ে সংবাদকর্মীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। কেন হঠাৎ সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি_ জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, শেভরনের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করছে। এ জন্য নিরাপত্তাকর্মীদের বলা হয়েছে যেন সাংবাদিক প্রবেশ করতে না পারেন। তবে দুপুরের পর সাংবাদিকদের পেট্রোবাংলায় ঢুকতে দেওয়া হয়।
বৈঠকের পর পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মো. ফয়জুল্লাহ দুঃখ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, এমন নির্দেশনা ছিল না। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনুমতি ছাড়া কেন শেয়ার বিক্রির চুক্তি করা হলো, সে বিষয়ে শেভরনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান বলেন, শেভরনের সম্পদ মূল্যায়ন করা হয়েছে। এখন সেই প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। চীনা কোম্পানির কাছে শেভরনের সম্পদ হস্তান্তরের বিষয়টির কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইনে যা বলা হয়েছে সে অনুযায়ী কাজ হবে। তবে আইনে কী বলা আছে সে সম্পর্কে কিছু বলতে চাননি মো. ফয়জুল্লাহ। শেভরন আলোচনার জন্য আরও সময় চেয়েছে বলে জানান তিনি।
সূত্র জানায়, শেভরন শেয়ার হস্তান্তরের বিষয়ে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে দেনদরবার করেছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়েও যোগাযোগ করেছে। সাড়া না পেয়ে শেষ পর্যন্ত পেট্রোবাংলার সঙ্গেই আলোচনায় বসেছে।
পেট্রোবাংলার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, কোনো গ্যাসক্ষেত্রের মালিকানা হস্তান্তরের আগে পেট্রোবাংলার অনুমোদন নিতে হয়। কারণ অনুমোদন দেওয়ার আগে গ্যাসক্ষেত্র কিনতে আসা কোম্পানির আর্থিক এবং কারিগরি যোগ্যতা যাচাই করে পেট্রোবাংলা। কিন্তু শেভরন চীনা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে পেট্রোবাংলাকে কিছুই অবহিত করেনি। তারা সংবাদমাধ্যম থেকে বিষয়টি জেনেছেন। পরে তাদের কাছে এ-সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে শেভরন। তিনি আরও বলেন, চুক্তির আগে চীনা কোম্পানির আট সদস্যের প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশে এনে সপ্তাহখানেক ধরে গ্যাস ক্ষেত্রগুলো ঘুরিয়ে দেখায় শেভরন। এ বিষয়টিও পেট্রোবাংলাকে অবহিত করা হয়নি।
শেভরনের পক্ষ থেকে গত ২৪ এপ্রিল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, তারা বাংলাদেশের ব্লক-১২-তে থাকা বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র এবং ব্লক ১৩ এবং ১৪-তে থাকা জালালাবাদ এবং মৌলভীবাজার গ্যাসক্ষেত্রের শেয়ার বিক্রি করছে। এ জন্য চীনের হিমালয়ের সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। বর্তমানে অর্ধেকের বেশি গ্যাস সরবরাহ করছে শেভরন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...