ডেস্ক নিউজ: ইসকনকে বিদায় জানাতে চলছে ঘোষণা প্রবর্তক সংঘ। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও ইসকনের কর্মকাণ্ড প্রবর্তক স্বার্থবিরোধী, ধর্মবিরোধী এবং পেশী শক্তি প্রদর্শনের আধার স্বরূপ। ইসকন যথার্থ সততার সাথে তাদের চুক্তির শর্তাদি পালন না করায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রবর্তক সংঘ।
শনিবার (২০ মার্চ) সকালে প্রবর্তক সংঘ (বাংলাদেশ) আয়োজিত চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলেন এসব কথা বলা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রবর্তক সংঘের সাধারণ সম্পাদক তিনকড়ি চক্রবর্তী।
তিনি বলেন, ‘১৯২১ সালে মতিলাল রায় চন্দনগরে তাঁর প্রতিষ্ঠিত প্রবর্তক সংঘের ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে একই বছর চট্টগ্রামের আরও কয়েকজন মিলে চট্টগ্রামে প্রবর্তক সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। আধ্যাত্মিক পরিবেশ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রবর্তক শ্রীশ্রী কৃষ্ণ মন্দির নির্মাণের জন্য ইসকন নামক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চুক্তি সম্পাদন হয়। যার ফলশ্রুতিতে বর্তমানে সুন্দর পরিবেশে মনোরম শ্রীমতি মন্দিরটি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।’
ইসকনের আচরণে ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রবর্তকের ভূমির প্রাতিষ্ঠানিক এবং সামাজিক উন্নয়নে আরও অধিক গুরুত্ব দিয়ে সম্পদের সদ্ব্যবহার করার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ জন্য কারো খেয়ালবশত এ সম্পত্তি যথেচ্ছা ব্যবহারে আমরা অনুমতি দিতে পারি না।’
প্রবর্তক শ্রীশ্রী কৃষ্ণ মন্দিরটি সাধুনিবাস ও সমাধি মিলিয়ে মোট ১৬,৩৭৬ বর্গফুট অর্থাৎ ১৮.৯৫ গন্ডা পাহাড় শীর্ষে জায়গার উপর নির্মিত হয়। উভয়পক্ষের তিনজন করে মনোনীত ৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির (সভাপতি এবং সম্পাদক ইসকনের) নিয়ন্ত্রণাধীনে ইসকন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এই মন্দিরের পূজা, অর্চনা, আরতি, প্রসাদ বিতরণ, ধর্মসভা উৎসবাদি অনুষ্ঠান করবে। কিন্তু নির্ধারিত স্থান, স্থাপনা এবং অনুমোদিত যাতায়াতের পথে কোথাও কোনো মালিকানা দাবি করতে পারবে না। চুক্তি মোতাবেক উক্ত জমি এবং সংশ্লিষ্ট সব স্থাপনার মালিকানা প্রবর্তকের নিকট সংরক্ষিত থাকবে।’— বলেন তিনকড়ি চক্রবর্তী।
তিনি বলেন, ‘ইসকন কর্তৃপক্ষ বা তাদের মনোনীত কোন ব্যক্তি কোনোভাবেই প্রবর্তক সংঘের স্বার্থবিরোধী এবং সম্পত্তির নিরাপত্তা বিঘ্ন করার মত কোনো কাজে লিপ্ত থাকতে পারবে না। এই রূপ কোনো আচরণ বা কাজ পরিলক্ষিত হলে তাদের সাথে সম্পাদিত চুক্তিটি বাতিল করা যাবে।’
সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীদের আত্মত্যাগের ফসল এ প্রবর্তক সংঘ। এ প্রতিষ্ঠানের সার্বিক স্বার্থ সংরক্ষণে যৌক্তিক মনন দিয়ে সামগ্রিক পরিস্থিতির মূল্যায়ন করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
এবিষয়ে প্রবর্তক সংঘের সাধারণ সম্পাদক তিনকড়ি চক্রবর্তী সিভয়েসকে বলেন, ‘আমরা তাদের বিশ্বাস করেছিলাম তবে তারা স্বার্থবিরোধী কাজ করায় বিশ্বাস ও চুক্তি ভঙ্গ করেছে। আমরা এখনো পারস্পরিক বৈঠক ও সমঝোতায় বিশ্বাসী। তবে এ নিয়ে গত ১৬ মার্চ মূখ্য আদালতে মামলা করেছি আমরা। বৈঠকে কিছু না হলে আদালতের মাধ্যমে সঠিক মিমাংসা ও সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংঘের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র লালা, সহ-সভাপতি প্রফেসর রনজিৎ কুমার দে, ট্রেজারার ডা. শ্রীপ্রকাশ বিশ্বাস, সদস্য অ্যাডভোকেট স্বভূপ্রসাদ দত্ত, ইন্দু নন্দন দত্ত, চন্দর ধর, প্রফেসর রনজিত ধর, ডা. বাবুল কান্তি সেন, রূপক ভট্টাচার্য্য, সুবোধ কুমার দত্ত, ইঞ্জিনিয়ার ঝুলন কান্তি দাশ, অ্যাডভোকেট অমর প্রসাদ ধর প্রমুখ।