জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি, পাইলগাঁও ও রানীগঞ্জ ইউনিয়ন দিয়ে প্রবাহিত স্রোতস্বিনী কুশিয়ারা নদীর কড়াল গ্রাসে বাড়িঘর ও আবাদি জমিসহ বিলীন হয়ে গেছে এলজিইডির জগন্নাথপুর-শিবগঞ্জ-বেগমপুর সড়ক। প্রায় এক বছর ধরে এ সড়ক দিয়ে সরাসরি যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে আছে। স্থানীয় জনসাধারণ যাতায়াত সমস্যায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ফসল ডুবির পর কয়েক দফা পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় প্রবল স্রোত আর ঢেউয়ে প্রতিদিন বেগমপুর সড়কটি নদীগর্ভে বিলীন হতে চলেছে। সরেজমিন জগন্নাথপুর-বেগমপুর সড়কটি দেখতে গিয়ে নদী তীরবর্তী অধিকাংশ বাসিন্দা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া তাদের বাড়ি-ঘর, আবাদি জমির বর্ণনা দিতে গিয়ে এ প্রতিবেদকের সামনে কেঁদে ফেলেনে। আবার অনেক নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোররা দিশেহারার মতো তাদের কষ্টের কাহিনী বর্ণনা করেছেন। সেই সাথে নদী ভাঙনের কবল থেকে বাড়ি-ঘরসহ সড়ক পথ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।
আশারকান্দি ইউনিয়নের বড়ফেচী গ্রামের বাসিন্দা মসহুদ আহমদ ইত্তেফাককে জানান, কুশিয়ারা নদীর ভাঙনের চিত্র ভয়াবহ। এটা বর্ণনা করার ভাষা নেই। তিনি জানান, ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে বাপ-দাদার রেখে যাওয়া ভিটে মাটি। এছাড়াও ফেচীর বাজারসহ পাইলগাঁও ও রানীগঞ্জ ইউনিয়নের অসংখ্য হাট-বাজার, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, ঘর-বাড়িসহ সড়ক পথ বিলীন হয়েছে। সাম্প্রতি কয়েক দফা পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে উপজেলা দক্ষিণাঞ্চলের জনসাধারণের যাতায়াতের একমাত্র সড়ক পথটিও।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডির) জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ইত্তেফাককে জানান, জগন্নাথপুর পৌরসভার সীমান্ত থেকে শিবগঞ্জ-পাইলগাঁও হয়ে বেগমপুর পর্যন্ত ১৫.৩৯ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ২.২০ কিলোমিটার সড়ক কুশিয়ারা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এবং সাম্প্রতিক বন্যায় ১.৭০ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাকি ১২ কিলোমিটার সড়কের পুনঃসংস্কার কাজের জন্য দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ অনুকূলে আসলে ঠিকাদার কাজ শুরু করবেন। এছাড়া নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় সড়কের অংশটুকু নতুনভাবে স্থান পরিবর্তন করে সড়ক নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে জানানো হয়েছে।