ডেস্ক নিউজ: আইন অনুযায়ী যে দণ্ডপ্রাপ্তদের ক্ষমা করার সুযোগ রয়েছে- তা আইনজ্ঞরাও বলেছেন। যথাযথ নিয়মেই হারিছ ও আনিসের মুক্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এতে গোপনের কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রাজধানীর মগবাজারে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, আইন অনুযায়ী যে দণ্ডপ্রাপ্তদের ক্ষমা করার সুযোগ রয়েছে- তা আইনজ্ঞরাও বলেছেন। যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই হারিছ ও আনিসের মুক্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এতে গোপনের কিছু নেই।
পুলিশের ওয়েবসাইটে ওয়ান্টেড তালিকায় হারিছ আহমেদের নাম এখনো থেকে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কমিউনিকেশন গ্যাপের কারণে হারিছের নাম ও ছবি তালিকাভুক্ত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কাতারভিত্তিক টেলিভিশন আলজাজিরা ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রচার করে। যাতে বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে অসংখ্য ভুল তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে সেনাপ্রধানের দুই ভাই আনিস ও হারিছের নামও আসে। তারা দুজনেই হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। আলজাজিরা তাদের প্রতিবেদনে ওই দুজনকে পলাতক হিসেবে উল্লেখ করেছে। প্রতিবেদনটি সেনাসদরের দৃষ্টিগোচর হলে বিবৃতি দিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানায় সেনাবাহিনী। সেনাসদর বলেছে, প্রতিবেদন দৃষ্টে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথা সেনাবাহিনী প্রধানকে বাংলাদেশের জনগণ ও বিশ্বের দরবারে বিতর্কিত, অগ্রহণযোগ্য ও হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার সঙ্গে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অন্যান্য অসত্য, বানোয়াট, মনগড়া, অনুমাননির্ভর ও অসমর্থিত তথ্য সংযুক্ত করে এই প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে।
সেনাসদর আরও বলেছে, গত ২৯ মার্চ ২০১৯ তারিখে সেনাবাহিনী প্রধানের ছেলের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হয় যেখানে বিশিষ্ট গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অথচ তার পূর্বেই সেনাবাহিনী প্রধানের ভাইগণ (আনিস এবং হাসান) তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার স্বীকার হয়ে ষড়যন্ত্রমূলক, পরিকল্পিতভাবে দায়েরকৃত সাজানো ও বানোয়াট মামলা হতে যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই অব্যাহতি পান। ফলে ২৯ মার্চ ২০১৯ তারিখে সেনাবাহিনী প্রধানের ছেলের বিবাহোত্তর অনুষ্ঠানে তার কোনো ভাই কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত বা পলাতক আসামি অবস্থায় ছিলেন না, বরং সম্পূর্ণ অব্যাহতিপ্রাপ্ত হিসাবেই তারা ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন এবং ওই সময়ে তাদের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা অনিষ্পন্ন অবস্থায় বা চলমানও ছিল না। এরপর সেনাবাহিনী প্রধান এপ্রিল ২০১৯ এ সরকারি সফরে সিঙ্গাপুর ভ্রমণ শেষে ব্যক্তিগত সফরে মালয়েশিয়া গমন করেন এবং বড় ভাইয়ের বাসায় অবস্থান করেন। অতএব বিষয়টি স্পষ্ট যে, প্রতিবেদনে দেখানো সেনাবাহিনী প্রধানের তার প্রবাসী ভাইয়ের সঙ্গে বিবাহ অনুষ্ঠানে এবং মালয়েশিয়াতে সাক্ষাতের ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পলাতক আসামির সঙ্গে সাক্ষাৎ হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা একটি নির্লজ্জ অপপ্রচার মাত্র।
এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ঢাকায় আর্মি অ্যাভিয়েশন গ্রুপের এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, সেদিন আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে না কোনো সাজা ছিল, না তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল। তার আগেই যে মামলাটি ছিল তা থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।