দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের অবসান ঘটিয়ে বহু বর্ণ ভিত্তিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী এবং ১৯৯৩ সালে শান্তিতে নোবেলজয়ী নেলসন ম্যান্ডেলার ৯৮তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯১৮ সালের ১৮ জুলাই দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকায় ম্যান্ডেলা তার গোত্রের দেওয়া ‘মাদিবা’ নামে পরিচিত।
ম্যান্ডেলার বাবা ছিলেন ইস্টার্ণ কেপ প্রদেশের থেম্বো রাজকীয় পরিবারের কাউন্সিলর। ম্যান্ডেলা তার পরিবারের প্রথম সদস্য যিনি স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। স্কুলে পড়ার সময়ে তার শিক্ষিকা ম্যান্ডেলার ইংরেজি নাম রাখেন নেলসন। তরুণ বয়সে ম্যান্ডেলা জোহানেসবার্গে চলে আসেন এবং আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের যুব শাখার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন ম্যান্ডেলা। তিনি ইউনিভার্সিটি অব সাউথ আফ্রিকার দূরশিক্ষণ কার্যক্রমের অধীনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ম্যান্ডেলা ইউনিভার্সিটি অব উইটওয়াটার্সরান্ডে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর পড়াশোনার সময় তার সাথে জো স্লোভো, হ্যারি শোয়ার্জ এবং রুথ ফার্স্টের পরিচয় হয়।
পরবর্তিতে যারা বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী হিসাবে অংশ নেন। ১৯৬২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী সরকার ম্যান্ডেলাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। ২৭ বছর কারাবাস করেন তিনি। আন্তর্জাতিক চাপে ১৯৯০ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি ম্যান্ডেলাকে মুক্তি দেন দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার। ম্যান্ডেলার কারামুক্তির ঘটনাটি সারা বিশ্বে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
কারামুক্তির পর ম্যান্ডেলা আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। সে সময়ে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদ অবসানের লক্ষ্যে সরকারের সাথে আলোচনায় বসেন। এই শান্তি আলোচনা ফলপ্রসূ হবার পর ১৯৯৪ সালে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সব বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং বিপুল ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ম্যান্ডেলা।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হিসেবে ১৯৯৪ হতে ১৯৯৯ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি। গত চার দশকে ২৫০টিরও অধিক পুরস্কার পেয়েছেন ম্যান্ডেলা। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৯৩ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং আকর্ষণীয় রাষ্ট্রনায়কদের একজন ম্যান্ডেলা ২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। তার আত্মজীবনীমূলক বই ‘দ্য লং ওয়াক টু ফ্রিডম’।
নেলসন ম্যান্ডেলার জম্মদিন আজ।
Date:
Share post: