রিতিমতন ফিল্মি স্টাইলে ডাকাতি করে বেড়ায় এমন একটি চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। গতকাল শুক্রবার (২৬ জুন) রাতে ডাকাত চক্রটির সন্ধানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে শহর তলী কর্ণফুলী এবং নগরীর ওয়াসা মোড় থেকে ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ৬ ডাকাত হলেন, কুমিল্লার মো. কামাল হোসেন (৩০), পাঁচলাইশের মোক্তার হোসেন (২২),চাঁন্দগাওয়ের সাদ্দাম (২৬), ফটিকছড়ির শের আলী (৩২), আনোয়ারার মাসুদুর রহমান (৪০) ও সীতাকুণ্ডের মো. এরশাদ
গ্রেফতার হওয়াদের মধ্যে একজন তাঁতী লীগের চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা কমিটির সভাপতি এস এম মাসুদুর রহমান৷দলীয় পদের আড়ালে তার বিরুদ্ধে সরাসরি ডাকাতির কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ মিলেছে৷ সেই অভিযোগে গতকাল শুক্রবার পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর নিজ মুখে স্বিকার করেছে চট্টগ্রাম নগরে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করা গ্রাহকদের টার্গেট করে ডাকাতিতে তার সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়টি৷ গ্রেপ্তার এস এম মাসুদুর রহমান (৪০) আনোয়ারা উপজেলার হাইলধর সৈয়দ বাড়ির জহিরুল আলমের ছেলে।
পুলিশি তথ্য অনুযায়ী,মাসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে নগরীর কোতোয়ালি থানায় আরও দুটি মামলা রয়েছে। এরমধ্যে একটি ২০১৬ সালের ১০ ডিসেম্বরের অস্ত্র আইনের ১৯ (এফ) ধারার ও অপরটিও ২০১৬ সালের ১০ ডিসেম্বরের দণ্ডবিধির৩৮৯/৪০২ ধারার মামলা।
আজ (২৭ জুন) নগরীর মোমিন রোডের সিএমপির দক্ষিণ জোনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিএমপি’র দক্ষিণ বিভাগের ডিসি মেহেদী হাসান গ্রেফতার ৬ ডাকাতকে গ্রেফতার ও ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন৷
জানানো হয়, গ্রেফতারকৃত এ ডাকাত চক্রটিই নগরীর বিভিন্ন সড়কে ফিল্মি স্টাইলে ডাকাতি করে থাকে। গত ১৬ জুন কোতোয়ালী থানাধীন জামিয়াতুল ফালাহ পশ্চিম গেইটে ফারুক আহাম্মদ নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ডাকাত চক্রটি জোরপূর্বক ফিল্মি স্টাইলে ৫ লাখ টাকা ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। মুলত এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদম্তে নেমে চক্রটির সন্ধান পায় টিম কোতোয়ালি। তদন্তের একপর্যায়ে সাঁড়াসি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
অভিযানে ডাকাত দলের কাছ থেকে একটি দেশীয় তৈরী এলজি, ২ রাউন্ড কার্তুজ,৩ টি টিপ ছোরা,দুটি মোটরসাইকেল ও নগদ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয় বলে জানান ডিসি মেহেদী৷
সংবাদ সম্মেলনে ডিসি মেহেদী হাসান বলেন, বিভিন্নি ব্যাংক প্রতিষ্ঠানের সামনে ছদ্মবেশে ঘোরাঘুরি করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করে পিছু নেয় চক্রটি। এ কাজে তাদের নির্দিষ্ট একজন ব্যক্তি বেদীর (সোর্স) ভুমিকায় থাকে। বেদীর কাজ হলো ব্যাংক থেকে বের হয়ে যাচ্ছে এমন ব্যক্তিকে অনুসরণ করা এবং অন্যদের তথ্য সরবরাহ করা। এরপর অন্যরা বেদীকে অনুসরণ করে ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে অস্ত্র ছোরার ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে সব কিছু লুন্টন করে চক্রটি চম্পট দেয়।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন গণমাধ্যমকে বলেন, এই ডাকাতদের হাতে ডাকাতির শিকার ভোক্তভোগী একজনের দায়ের করা মামলার তদন্তে নেমে আমরা চক্রটির সন্ধান পাই। গ্রেফতার ৬ ডাকাত সদস্যকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে বলেও জানান ওসি মোহাম্মদ মহসিন।