Date:

Share post:

দেশের হাওর এলাকায় ধান কাটার শ্রমিক সঙ্কট নিরসনে এগিয়ে এসেছে চট্টগ্রাম পুলিশ।
চট্টগ্রামে থাকা এসব এলাকার এক হাজার শ্রমিককে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রোববার প্রথম দফায় নারী-পুরুষ মিলিয়ে ১০০ শ্রমিক রওনা হয়েছেন কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মোহাম্মদ আব্দুর রউফ বলেন,এই শ্রমিকরা স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় অষ্টগ্রামে অবস্থান করবেন এবং ধান কাটার কাজ করবেন। তবে তারা এসময় নিজেদের বাড়িতে যেতে পারবেন না।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর বোরো মৌসুমে দেশে ৪১ লাখ ১০ হাজার ৫৪৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে হাওর অঞ্চলে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩৮ হেক্টর জমি।

ধান কাটতে প্রতিবছরই এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যায় শ্রমিকরা। তবে করোনাভাইরাস মহামারী ঠেকাতে গোটা দেশ অবরুদ্ধ বলে এখন এক জেলার শ্রমিকরা অন্য জেলায় যাতায়াত করতে পারছেন না।

এর ফলে হাওর অঞ্চলে ধান কাটার শ্রমিক সঙ্কটের বিষয়টি গণমাধ্যমে এসেছে। যা দেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিন আগেই বলেন, “আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া আছে, যারা যেখানে ধান কাটতে যেতে চায়, তাদের সেখানে পৌঁছে দেওয়া হবে।”এরপরই চট্টগ্রাম পুলিশ এই উদ্যোগ নিল।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার এসএম মেহেদী হাসান বলেন, বাকলিয়া এলাকায় দেড় হাজার শ্রমিকের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাদের সবার বাড়ি কিশোরগঞ্জে। সোমবার থেকে আরও শ্রমিক পাঠানো হবে।

যারা চট্টগ্রাম থেকে কাজ করতে বিভিন্ন জেলায় যাবেন, তাদের আলাদা করে রাখার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে সেখানকার পুলিশ প্রশাসন। শ্রমিকরা কোয়ারেন্টিনের মতো থেকে জমিতে ধান কাটার কাজ করবে।
উপ-কমিশনার মেহেদী বলেন, “কিশোরগঞ্জের স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন তাদের সহায়তা করবেন। পাশাপাশি যেসব জেলার উপর দিয়ে শ্রমিকবহনকারী বাসগুলো যাবে তাদের সহায়তা করার জন্য সেখানকার পুলিশ প্রশাসনকেও আমরা বলে দিয়েছি।”

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুক খালেদ সময় নিউজকে বলেন, “এই শ্রমিকরা যে উপজেলায় যাবে, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় গঠিত উপজেলা কমিটি তাদের পরীক্ষা করে ফাঁকা স্কুল কিংবা মাদ্রাসায় আইসোলেটেড রাখার ব্যবস্থা নেবে। সেখানে থেকে তারা জমিতে গিয়ে ধান কাটার কাজ করবে।”
অন্য সময় জমির মালিকের বাড়িতে থাকার যে ব্যবস্থা হত, এবার তা হবে না বলে জানান তিনি।

এই শ্রমিকদের পরিবহনে এস আলম গ্রুপ বাস দিয়ে সহায়তা করছে বলে জানান চট্টগ্রামের পুলিশ কর্মকর্তা মেহেদী।

তিনি জানান, চট্টগ্রামে রয়েছেন, এমন শ্রমিকরা যোগাযোগ করলে তাহলে তাদেরও যাচাই বাছাই করে ধান কাটতে পাঠানো হবে।

বাকলিয়া থানার ওসি নেজাম উদ্দিন সময় নিউজকে জানান, বাকলিয়া এলাকাটিতে নিম্ন আয়ের লোকজনের বসবাস। তারা ধানের মৌসুমে নিজ নিজ এলাকায় চলে যায়। আবার ধান কাটা শেষ হলে চট্টগ্রামে চলে আসেন এবং বিভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়েন। করোনাভাইরাস সঙ্কটে এসব লোকজন চট্টগ্রামে অনেকটা বেকার বসে আছেন। গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় তারা নিজ এলাকায় ধান কাটতেও যেতে পারছেন না।

“খোঁজ নিয়ে দেখেছি, প্রতিবছর বাকলিয়া এলাকা থেকে দেড় থেকে দুই হাজার লোক কিশোরগঞ্জে নিজ এলাকায় চলে যান ধান কাটতে। ধান কাটার মৌসুম শেষ হলে আবার চট্টগ্রামে ফিরে আসেন। এবছর তারা যেতে না পেরে আমার সাথে যোগাযোগ করে। তখন বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের স্থানীয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করি। তারাও সহায়তা চাওয়ায় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...