আলাদা তো হওয়ারই কথা ছিলো না মাচিন।দেবী গাফফার

Date:

Share post:

“আমার মাচিন”
আমার প্রশংসা কর আর বদনাম ই কর “আমি তোমাকেই ভালোবাসি।
আমাকে ছাড়া তুমি বাবুরা কেও ভালো নেই জানি।তোমাদের ছাড়া একদিন ও কোথাও থাকিনি ।
এই ব্যথা সহ্য করা আমার অভ্যাস এ নেই, তোমার প্রতি আমার কোন অভিযোগ ও নেই।
কাল কি হবে জানিনা,বেহায়া চোখগুলো সময় অসময় মানে না ।
আলাদা তো হওয়ারই কথা ছিলো না মাচিন।

আমি মুসলমান তুমি বুদ্ধ তাতে কি?
তুমিই তো বলতে ভালোবাসার কোন ধর্ম হয় না।

বাংলাদেশে আমার কেও নেই.রাতদিন তোমাদের্ কথাই মনে পড়ে।
আমি যেনো এক নীড় হারা পাখি।
এভাবেই হয়তো একদিন মরণ এসে নিয়ে যাবে।
প্রতি মূহুর্তে মনে পড়ে তোমার অসহায় মুখখানা ,কানে বাজে বাবা বাবা ডাক।
রেংগুন ইউনিভারসিটির বন্ধুৃদের সাথে আড্ডা ,মিছিল।
আমি সত্যের পথে লড়াই করতে চেয়েছিলাম।
মাচিন আমার মাচিন, তুমি এতো রেগে আছো আমার কোন চিঠির উত্তরই দাওনি।তাতে কি?আমি তোমাকে চিঠি লেখা একদিনের জন্য ও থামাই নি।
ভেবেছিলাম আমার হাতের ভাগ্য লেখাই একদিন তোমাকে আমার কাছে নিয়ে আসবে।
এখন তো ভাগ্যের ওপর ও বিশ্বাস চলে যাচ্ছে।
দেখো ভালোবাসার কি অদ্ভুত রীতি।পেয়ে গেলে খুনসুটি ঝগড়া ,মান অভিমান কতো কি।
আর বিচ্ছেদে?কেবল ভালোবাসার
সুখ স্মৃতি টুকুই মনে পড়ে।
আমার বাচ্চারা আমার মাচিন আমি তোমাদের ছাড়া বাঁচতে চাইনা।
তোমার চোখের লেপ্টানো কাজল দেখে মানুষ হয়তো বলে আহারে।
আমি কথা দিচ্ছি তোমার চোখের কাজল কোনদিন লেপ্টাতে দিবো না, যতদিন বাঁচবো।
আমার ধৈর্য্যের আর পরীক্ষা নিওনা, আমাকে আর শাস্থি দিও না।
আমাদের প্রেমের প্রথম কথা ছিলোঃবাহ আপনি বেশ হ্যান্ডস্যম তো?
সেই ছোট করে বলা ,আজকে আমাকে এতদুর নিয়ে এসেছে যে তোমাকে ছাড়া বাচাই মুশকিল হয়ে গেছে।
শুকর আল্লাহ্ ভালোবাসার কোন বয়স হয় না।
তোমরা না আসলে আমি বাঁচবো না মাচিন।
“আলাল”
এই চিঠির ঠিকানা ছিলো রেংগুন।
যথা সময়ে মাচিন চিঠি পেয়েছিলো।
বাংলাদেশ সম্পর্কে ভীষণ ভয় ছিলো, একেতো বিদেশ ভাষা জানেনা।
আত্মীয়স্বজন সব রেংগুন।
ভাবতে থাকে জীবন মাচিন আর ওর দুই ছোট্ট শিশুর ভবিষ্যৎ কোথায় দাড় করাবে আল্লাহ্ জানে।
মনস্থির করলো ছেলে দুইটার হাত ধরে রওয়ানা দিবে, নদী সমুদ্র পাহাড় পার হয়ে বাচ্চাদের বাবার কাছে পৌছাতে হবে।
বাবার বাড়ির কাওকে বলা যাবে না,ওরা যদি জানতে পারে মাচিন বাংলাদেশ যাবে প্রয়োজনে হাত পা ভেঙ্গে ফেলবে তারপরও মুসলমান স্বামীর কাছে পৌছাতে দিবেনা।
রেংগুন থাকতেই মাচিন এর মা বাবা কোনদিন বৌদ্ধ মুসলিম বিয়ে মেনে নেয়নি।

মনস্থির করেই ফেললো, যে করেই হোক বাংলাদেশ পৌছাবে।
রাতের অন্ধকারে বাচ্চাদের হাত ধরে রওয়ানা দিলো।পিছনে পড়ে রইল বিশাল দোকান এত বছরের সাজানো সংসার,মা বাবা ভাই বোন।
আকিয়াব,বুদিঠউ মংডু হয়ে নাফনদী হয়ে ককস বাজার পৌছালো ।
কালুর দোকানের সাথে ছোট্ট দুই রুমের বাসা মন্দ না।
ভালোবাসার সংসারে একে একে আরও তিন বাচ্চা আসলো।
পাঁচ বাচ্চা নিয়ে সুখের সীমা রইল না।
পাশের এলাকার এমপি সাহেব
সম্পর্কে আলালের(ছদ্ধনাম)ভাই হন।
হঠাৎ একদিন এমপি সাহেব এর আগমন।
চা খেতে খেতে এমপি সাহেব বলেনঃ মোনা আমার ছোট বোন, ককস বাজার কলেজে বিএ পড়ছে।
এখানে ওর একা থাকা সমস্যা ।
আপনাদের কোন অসুবিধা না হলে আমি চাই মোনা আপনাদের সাথেই থাকুক।
এমপি সাহেব এর বোন বলে কথা,গোল দিঘির পাড়ে বিশাল বাড়ি নেওয়া হলো।
এখানে একটু বলে নিই,আলাল মাচিন এর জুড়ি যেনো পরম যত্নে আল্লাহ্ নিজ হাতে তৈরী করেছেন ।
বাচ্চাগুলো এক একটা পুতুলের মতো।
সবাই মিলে রান্না খাওয়া হৈচৈ করে দিন কখন পার হয়ে যায় মাচিন টের পায় না।
একটাই সমস্যা মাচিন বাংলা বুঝে না।
মোনা আর আলাল সারাদিন এত কি কথা বলে ?
আপনারা চাইলে বাকি কিচ্ছা কালকে বলবো। বলবো কি?
“চলবে”
দেবী গাফফার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...