হিজবুল মুজাহিদিনের নেতা বুরহান ওয়ানির মৃত্যুবার্ষিকীতে উত্তপ্ত কাশ্মীর

Date:

Share post:

কাশ্মীরের একটা অংশ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।ছবির কপিরাইট EPA
Image caption কাশ্মীরের একটা অংশ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।

ভারত-শাসিত কাশ্মীরে হিজবুল মুজাহিদিনের নেতা বুরহান ওয়ানির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে।

এক বছর আগে পুলিশের এনকাউন্টারে বুরহান ওয়ানি নিহত হবার পর থেকেই রাজ্যটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ সহিংসতা চলছে।

২২ বছরের যুবক বুরহান ওয়ানি নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হবার পর কাশ্মীরের শ্রীনগর যেভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল তার নজির সাম্প্রতিককালে নেই। তার জানাজায় জানাজায় উপত্যকা জুড়ে মানুষের ঢল নেমেছিল।

আর এখন তার মৃত্যুর প্রথম বার্ষিকীতেও শ্রীনগরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বুরহান ওয়ানির মৃত্যুবার্ষিকী তে গণবিক্ষোভের ডাক দেয়া হয়।

গণবিক্ষোভ ঠেকাতে রাজ্যে কারফিউ জারি করা হয়েছে, মোতায়েন করা হয়েছে হাজার হাজার সেনা সদস্য।

বুরহান ওয়ানির এলাকা ট্রাল-যেটি মূলত পাহাড়ঘেরা, সেই এলাকা পুরোপুরি অবরুদ্ধ হয়ে আছে।

সাঁজোয়া যানসহ সশস্ত্র সেনারা ওই গ্রামের রাস্তায় রাস্তায় অবস্থান করছে, পুরো এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে দেয়া হয়েছে। কাউকেই ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।

সেন্ট্রাল রিসার্ভ পুলিশ ফোর্সের কর্মকর্তা বিবিসির সাংবাদিক সঞ্জয় মজুমদারের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেন “আমাদের কাছে নির্দেশ আছে যেন কাউকেই এলাকায় ঢুকতে না দেয়া হয়, এমনকি কোনো মিডিয়াকেও ঢুকতে দেয়া যাবে না”।

এমন পরিস্থিতিতেও কারফিউ উপেক্ষা করে সেখানে বিক্ষোভ করেছেন অনেক বিক্ষোভকারী।

এমনকি ওই এলাকায় বিবিসি সাংবাদিক দেখেন সেনাবাহিনীর সামনে দিয়েই বুরহান ওয়ানির গ্রামে যাবার চেষ্টা করেন একদল নারী।

তাদেরই একজন বিবিসি সাংবাদিককে বলেন, “আমি পাশের গ্রামে থাকি। আমরা বুরহান ওয়ানির গ্রামে যদি যেতে চাই তাহলে কী হবে? সে আমাদের ভাই, সে আমাদের জন্য যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছে”।

Image caption বুরহান ওয়ানির গ্রাম ঘিরে ফেলেছে ভারতীয় সেনারা

সেনাদের সাথে ব্যাপক আলোচনা চালানোর পর এক পর্যায়ে তারা ওই এলাকায় বুরখা পরিহিত ওই নারীদের ঢুকতে দেন। ওই নারীর দল হাঁটতে হাঁটতে যাবার সময় ‘ভিক্টরি সাইন’ বা ‘বিজয়ের চিহ্ন’ দেখান।

গত বছর বুরহান ওয়ানির জানাজায় যে পরিমাণ মানুষের ঢল নেমেছিল তা অনেককেই অবাক করেছিল। কাশ্মীরের ক্ষুব্ধ যুবসমাজকে তিনি আবার পথে টেনে আনেন।

মি. ওয়ানি কখনও কোন জঙ্গি হামলায় অংশ নেননি – কিন্তু ফেসবুক-টুইটারের মাধ্যমে কাশ্মীরের নতুন প্রজন্মকে যেভাবে তিনি আবার ‘উগ্রপন্থায়’ টেনে আনতে পেরেছিলেন তাতে তার পরিচিতি ছিল ‘সোশ্যাল মিডিয়া মিলিট্যান্ট’ নামে।

কাশ্মীরে একজন পুলিশ কর্মকর্তার মন্তব্য “মি: ওয়ানির মধ্য কিছু ছিল, সে তরুণ সমাজকে তার পথে আনতে পেরেছিল। আমি জানি, আমি তার গ্রামেরই মানুষ। আমারও বরং এখানে রাস্তা আটকে না রেখে সেখানে থাকা উচিত ছিল”।

আর সে কারণেই এবার কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত সব পরিস্থিতি শক্ত হাতে দমন করা হবে। 

আরো পড়তে পারেন:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...