আবার তৈরী হবে ঢাকাই মসলিন

Date:

Share post:

কালের বর্তনে হারিয়ে যাওয়া াই মসলিন পোশাক এত সূক্ষ্ম ছিল যে ৫০ মিটার দীর্ঘ কাপড় একটি দিয়াশলাই বাক্সে রাখা যেত মসলিন শাড়ি সম্পর্কে এই কিংবদন্তি বাংলাদেশে বহুল প্রচলিত।
সোনালি ঐতিহ্যের সেই মসলিন আবার ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মেয়াদকালে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে। মসলিনের সুতা তৈরির প্রযুক্তি ও মসলিন কাপড় বুননের বিষয়ে গবেষণা কার্যম পরিচালনা করতে প্রায় ১২ ব্যয়ে একটি প্রকল্প াব করা হয়েছে। ওই প্রকল্পের আওতায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের িটিউট অব বায়োলজিক্যাল সায়েন্সের পরিচালক ও বায়োটেকনোলজি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. মো. মনজুর হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিম করে দেওয়া হয়েছে। ওই টিমের অপর দুই সদস্য হলেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. এম ফিরোজ আলম এবং অ্যাোনোমি অ্যান্ড অ্যাগ্রিল এক্সটেনশন বিভাগের প্রফেসর ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
বিষয়টি নিশ্চিত করে তাঁত বোর্ডের সদস্য নিমাই চন্দ্র পাল নিউজকে বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত টিম বাংলাদেশের যেসব এলাকায় মসলিনের সুতা তৈরির উপযোগী ফুটি কার্পাস তুলা উৎপাদন হয় তা খুঁজে বের করবে। আর বাংলাদেশে এ ধরনের তুলা এখন না পাওয়া গেলে বিদেশ থেকে সমজাতীয় তুলা এনে মসলিন সুতা তৈরির ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করা হবে। দেশে আবারও হারানো মসলিন ফিরিয়ে আনার এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে সোনালি ঐতিহ্যের মসলিন তৈরির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। পরে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয় বাংলাদেশের সোনালি ঐতিহ্য মসলিনের সুতা তৈরির প্রযুক্তি ও মসলিন কাপড় পুনরুদ্ধার (প্রথম পর্যায়)। প্রস্তাবিত প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ কোটি ১০ লাখ টাকা। সম্প্রতি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সম্মেলন কক্ষে একটি সভাও করেছে। ২০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ওই সভায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রস্তাবিত প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়। প্রসঙ্গত, মসলিন হলো তুলার আঁশ থেকে প্রস্তুত করা এক ধরনের অতি সূক্ষ্ম কাপড়। এটি তৈরি ো ‘ফুটি কার্পাস’ নামের এক ধরনের সূক্ষ্ম তুলা থেকে। মসলিনের ইতিহাস নিয়ে অনেক গল্পগাথা প্রচলিত রয়েছে। মসলিন কাপড় এত মিহি ছিল যে ৪০ হাত লম্বা ও ২ হাত চওড়া এমন একটি কাপড় একটা ছোট আংটির মধ্যে দিয়ে অনায়াসে চালাচালি করা যেত বলে কিংবদন্তি রয়েছে। মুঘল আমলে সতেরো শতকে মসলিন শিল্প বিকাশ লাভ করেছিল ঢাকার সোনারগাঁ আর আশপাশের অঞ্চলে। এ কারণে এটি ঢাকাই মসলিন বলে পরিচিত ছিল। এই মসলিন রপ্তানি হতো ইউরোপসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। তবে সস্তা কাপড়ের ভিড়ে আঠারো শতক থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে থাকে জগদ্বিখ্যাত পোশাক ঢাকাই মসলিন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

ভারতের ৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের, নিহত ৮

পাকিস্তানের ৬ স্থানে ভারতের বিমান হামলায় ৮ বেসমারিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।আহত হয়েছেন আরো অন্তত ৩৫ জন। এর মধ্যে...

‘অপারেশন সিঁদুরে’ ভারতের পাশে ইসরাইল, পাকিস্তানের পাশে তুরস্ক!

পাকিস্তান ও দেশটির অধ্যুষিত কাশ্মীরে অবস্থিত নয়টি স্থাপনায় ভারতের বিমান হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রকাশ্যে এলো ইসরাইলের সমর্থন।...

পাকিস্তান-ভারত সংঘাতের মধ্যে সার্বভৌমত্ব রক্ষার আহ্বান আসিফ-হাসনাতের

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সামরিক সংঘাত ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। এরই মধ্যে এই উত্তেজনার রেশ ছড়িয়ে পড়ছে পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশেও।...

অসুস্থ মাকে দেখতে স্কয়ার হাসপাতালে ডা. জোবাইদা রহমান

১৭ বছর পর ঢাকায় ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান। মঙ্গলবার (৬ মে) সকালে...