পরিবেশ দূষণের কারণে বাংলাদেশে এক বছরে মারা গেছে ৮০ হাজার মানুষ: বিশ্বব্যাংক

Date:

Share post:

বিশ্ব ব্যাঙ্ বলছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর যতো মানুষের মৃত্যু হয় তার ২৮ শতাংশই মারা যায় পরিবেশ দূষণজনিত খবিসুখের কারণে। কিন্তু সারা এধরনের মৃত্যুর গড় মাত্র ১৬ শতাংশ।

রবিবার বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দূষণ ও পরিবেশগত ঝুঁকির কারণে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তার একটি বাংলাদেশ।

গবেষণায় আরো বলা হয়েছে, ৭ থেকে ৮ প্রবৃদ্ধির একটি উচ্চতর মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে উঠতে হলে বাংলাদেশকে এখনই, বিশেষ করে শহর এলাকায় দূষণ রোধ করতে ও পরিবেশ রক্ষায় স্থা নিতে হবে।

বিশ্বব্যাংক ২০১৫ সালের এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেছে, শহরাঞ্চলে এই দূষণের মাত্রা উদ্বেগজনক পর্যায়ে ়ে পৌঁছেছে তারা বলছে, দূষণের কারণে ২০১৫ সালে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে তুলনা করতে গিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পরিবেশ দুষণজনিত কারণে বাংলাদেশে যেখানে ২৮ শতাংশ মৃত্যু হয় সেখানে মালদ্বীপে এই হার ১১ দশমিক ৫ শতাংশ।

ভারতে ২৬ দশমিক ৫। পাকিস্তানে ২২ দশমিক ২। আফগানিস্তানে ২০ দশমিক ৬। শ্রীলঙ্কায় ১৩ দশমিক ৭।

এর আগে ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের একটি গবেষণায় ঢাকাকে বসবাসের জন্যে দ্বিতীয় অযোগ্য শহর হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। এক নম্বরে ছিল যুদ্ধ-বিধ্বস্ত িয়ার রাজধানী েস্ক।

বিশ্বব্যাংক বলছে, দূষণের কারণে বাংলাদেশের বছরে ৬৫০ কোটি ডলার ক্ষতি হয় – যা মোট জাতীয় উৎপাদন বা জিডিপির প্রায় সাড়ে তিন শতাংশ।

বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর রাজশ্রী পারালকার বলেছেন, “নগরাঞ্চলে দূষণ ও পরিবেশের অবনতি হওয়ার কারণে বাংলাদেশকে অনেক মূ দিতে হচ্ছে। এর ফলে দেশটির ভালো প্রবৃদ্ধিও এখন হুমকির মুখে।”

এজন্যে বিশ্বব্যাংক জলাভূমি দখল, ক্ষতিকর বর্জ্য ঠিকমতো না ফেলা ইত্যাদিকে দায়ী করা হয়েছে। আর এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে নারী, শিশু এবং দরিদ্র মানুষের।

বিশ্বব্যাংকের হিসেবে দেখা গেছে, যে গার্মেন্ট খাত থেকে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেই সেই খাত থেকেই প্রতি বছর ২৮ লাখ টনেরও বেশি বর্জ্য তৈরি হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রায় ১০ লাখ মানুষ, যাদের বেশিরভাগই দরিদ্র, সীসা দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছে। এর ফলে শিশুদের বুদ্ধির বিকাশসহ স্নায়ু-জনিত ক্ষতি ে পারে।

গবেষণাটি বলছে, এর ফলে নারীর গর্ভপাত এবং মৃত শিশুর জন্মদানের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পেতে পারে।

বলা হচ্ছে, বৃহত্তর ঢাকার যেসব এলাকা ভারী ধাতবের কারণে দূষিত সেখানে সাধারণত দরিদ্র মানুষেরাই বসবাস করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা শহরে যতো জলাভূমি ছিল গত ৪০ বছরে তার ৭৫ শতাংশ হারিয়ে গেছে। এসব জলাভূমি ভরাট করে সেখানে বাড়িঘর তোলার কারণে শহরের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে যাওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

অপরিকল্পিত নগরায়নের কারণে ছোট ছোট শহরগুলোও পরিবেশ দূষণের শিকার হচ্ছে।

এরকম একটি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে পাবনার কথা।

বিশ্বব্যাংক বলছে, ১৯৯০ সালের পর পাবনা শহর তার অর্ধেক জলাভূমি হারিয়ে ফেলেছে এবং এই শহরের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ ইছামতী এখন মৃতপ্রায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

নিষিদ্ধ হচ্ছে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ

রাজনীতি আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নিষিদ্ধ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়...

চট্টগ্রাম সত্যিকারের কমার্শিয়াল সিটি হবে

বাংলাদেশের ফুল এমবিশনের মধ্যমণি চট্টগ্রাম। আমরা বাংলাদেশকে যেখানে নিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করছি; সেটির সেন্টার পিস হচ্ছে চট্টগ্রাম।...

চারদিন আগে নিহত আইনজীবীর লাশ উদ্ধার

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পৌরসভার বালুবাগান এলাকা থেকে ৪ দিন আগে মারা যাওয়া মঈন উল বারি (৪৭) নামে এক আইনজীবীর লাশ...

ভারতের সীমান্ত ‘সিল’, দেখামাত্র গুলির নির্দেশ: রাজস্থান-পাঞ্জাবে সতর্কতা জারি

পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার একদিন পর ভারত সীমান্তবর্তী রাজ্য রাজস্থান এবং পাঞ্জাব সতর্কতা জারি করেছে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) এনডিটিভির...